ভ্যাট বন্ধু নিউজ প্রতিবেদক
২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ | ৯:২৫ এএম
অনলাইন সংস্করণ
অপরিশোধিত ভোজ্যতেলে মিলেছে পারদ
২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ | ৯:২৫ এএম

ছবি: সংগ্রহ
ভোজ্যতেল নিয়ে গবেষণায় মিলেছে ভয়ানক তথ্য। অপরিশোধিত ভোজ্যতেল (ক্রুড অয়েল) পরীক্ষায় পারদ বা মার্কারির উপস্থিতি পাওয়া গেছে। যা পরিশোধন (রিফাইন) করেও দূরীভূত করা সম্ভব হচ্ছে না। এটা অর্গানিক নাকি ইনঅর্গানিক সেটি গবেষণা করা হচ্ছে। অর্গানিক হলে বিপদ।
‘ফর্টিফায়েড এডিবল অয়েলস: এনহ্যান্সিং হেলথ অ্যান্ড নিউট্রিশন ফর এ বেটার ফিউচার’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদনে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়। এ উপলক্ষে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ ও গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ইমপ্রুভড নিউট্রিশন (গেইন) একটি সেমিনারের আয়োজন করে।
সেমিনারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক ড. নাজমা শাহীন জানান, ভোজ্যতেলে ভিটামিন ‘এ’ ফর্টিফিকেশনের একটি অন্যতম চ্যালেঞ্জ হলো ভিটামিনটি আলোর সংস্পর্শে এলে দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়। ফলে তেলে ভিটামিন ‘এ’ ফর্টিফিকেশন করতে হলে তা অস্বচ্ছ বোতলে সংরক্ষণ করতে হবে।
ড. নাজমা শাহীন বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষক দল তেলের বিভিন্ন প্যারামিটার নিয়ে পরীক্ষা করে দেখেন, খোলা তেলের ক্ষেত্রে বিভিন্ন প্যারামিটারে প্রাপ্ত ফলাফল আদর্শ মানের সঙ্গে অনেক বেশি অসংগতিপূর্ণ। তেলের বিভিন্ন প্যারামিটারের পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে দেখা যায়, নন-ব্রান্ডেড সয়াবিন তেলের সঙ্গে অন্যান্য তেল বা অপদ্রব্য সংমিশ্রণ করা হচ্ছে।
সয়াবিন তেলে ভিটামিন এ কেন ফর্টিফায়েড করতে হয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের দেহে যে পরিমাণ ভিটামিন বা খনিজ উপাদান দরকার তা প্রাকৃতিকভাবে খাবারে অত পরিমাণে পাওয়া যায় না। এ কারণে ফর্টিফিকেশনের প্রয়োজন হয়। সয়াবিনের বীজ থেকে আমাদের দেশে উৎপাদিত তেলের পরিমাণ কম। বেশিরভাগই আমদানি করা হয় ক্রুড অয়েল হিসেবে। সেগুলো রিফাইন করে রান্নায় ব্যবহারের উপযোগী করা হয়। ক্রুড অয়েলে ভিটামিন ‘এ’ এর পরিমাণ তেমন থাকে না। সেজন্য ভিটামিনটি ফর্টিফায়েড করতে হয়।
ঢাকায় বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের (বিএফএসএ) সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত এই সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ আলীম আখতার খান। তিনি রেস্তোরাঁ মালিক সমিতিকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনারা একটা ঘোষণা দেন, আপনার রেস্টুরেন্টে খোলা তেল ব্যবহার করবেন না। এ ঘোষণার মাধ্যমে ভোক্তারা বুঝতে পারবে যে কোনটা ভালো কিংবা কোনটা খারাপ। এছাড়া তিনি ফর্টিফায়েড ভোজ্যতেল ব্যবহারে মডেল উপজেলা নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্টদের মনোযোগ আকর্ষণ করেন।
বিএফএসএর চেয়ারম্যান জাকারিয়া বলেন, প্রতিবছর ৩ লাখ ২০ হাজার মানুষ ভোজ্যতেল সম্পর্কিত রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।
বিশেষ অতিথি শিল্প মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব সুলতান আলম বলেন, স্বাস্থ্যগত সমস্যার একটা বড় কারণ হলো তেল। তেলের ব্যবহার যত কমাতে পারব, তত আমরা স্বাস্থ্যগত দিক দিয়ে ভালো থাকব। এজন্য প্রচার-প্রচারণা বাড়াতে হবে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে ব্যবহার করতে হবে।
প্রমাণ সাপেক্ষে উপস্থাপিত ফলাফলের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষদের সিদ্ধান্ত নেয়ার আহ্বান জানান গেইনের কান্ট্রি ডিরেক্টর ডা. রুদাবা খন্দকার।
তিনি বলেন, তরুণরা দেশের একটা বিশাল অংশ। তাই তরুণ ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে এসব কার্যক্রমে সম্পৃক্ত করে যথাযথ সমন্বয় সাধনের মাধ্যমে এগিয়ে যেতে হবে।
