অর্থনীতিতে টাকার প্রবাহ সচল করতে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) দ্রুত বাস্তবায়নের ওপর জোর দিয়েছে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম চার মাসে এডিপি বাস্তবায়নের হার ছিল মাত্র ৮ শতাংশ, যা সাম্প্রতিক সময়ের মধ্যে সর্বনিম্ন।

আরও পড়ুন

এডিপির আকার বাড়ছে ২০ হাজার কোটি টাকা

পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ জানিয়েছেন, এডিপি প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়ন দ্রুততর করতে ইতোমধ্যেই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। উন্নয়ন প্রকল্পগুলো বাছাইয়ের ক্ষেত্রে বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে, যেন সেগুলো দুর্নীতিমুক্ত ও উদ্ভাবনী হয়।

তিনি বলেন, “চলতি অর্থবছরের শেষ নাগাদ এডিপি বাস্তবায়নের হার বাড়ানো সম্ভব হবে। তবে প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সুষ্ঠুভাবে ও দায়িত্বশীলতার সঙ্গে কাজ করা হবে।”

পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) তথ্য অনুযায়ী। প্রথম চার মাসে বাস্তবায়ন হার ৮ শতাংশ। অর্থমূল্য ২১ হাজার ৯৭৮ কোটি টাকা। গত বছরের তুলনায় ১১.৫৪ শতাংশের নিচে। স্বায়ত্তশাসিত সংস্থাগুলোর ক্ষেত্রে ১২-১৩ শতাংশ।

আওয়ামী লীগ সরকারের অনুমোদিত ২০২৪-২৫ অর্থবছরের এডিপি আকার ছিল ২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা। পরিবহন ও যোগাযোগ খাতের জন্য সর্বোচ্চ বরাদ্দ ছিল ৭০ হাজার ৬৮৭ কোটি টাকা। স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা ও করপোরেশনের জন্য বরাদ্দসহ মোট এডিপি আকার দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৭৮ হাজার ২৮৮ কোটি টাকা।

অন্তর্বর্তী সরকার রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রকল্পগুলোর সংখ্যা কমিয়েছে। এতে প্রকল্প বাস্তবায়নের হার কম হলেও সরকারি অর্থ অপচয় ও দুর্নীতি রোধে ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে।

পরিকল্পনা উপদেষ্টা জানান, “সরকার নতুন প্রকল্প পরিচালকদের দিয়ে ভালো প্রকল্পগুলো দ্রুত এগিয়ে নেওয়ার ওপর জোর দিচ্ছে। পাশাপাশি দুর্নীতিমুক্ত কার্যক্রম নিশ্চিত করতে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।”

সরকারের এই উদ্যোগ অর্থনীতিতে টাকার প্রবাহ বাড়াতে ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে। উন্নয়ন প্রকল্পগুলো দক্ষতার সঙ্গে বাস্তবায়িত হলে দেশের সার্বিক উন্নয়ন প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত হবে। তবে দুর্নীতি প্রতিরোধ এবং সঠিক পরিকল্পনা নিশ্চিত করার ওপর সাফল্য নির্ভর করবে।