ঢাকা বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ - ১১:০৭:৪৩ এএম

আত্ম সমালোচনা ও কদম আলি 

২৫ জুলাই, ২০২৪ | ৩:৫২ পিএম

আত্ম সমালোচনা ও কদম আলি 
কোটা বহালের রায় দেওয়ার পর ছাত্ররা আন্দোলন শুরুর একটা পর্যায়ে, সবাই অধিক জ্ঞান ও শক্তির জাহির করার চেয়ে বসার জরুরি ছিল। বসার পর ওদের যদি বলা হতো বর্তমান অবস্থায় কোর্টে আপিল করে রায় বাতিল করতে হবে তারপর তাদের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে হার নির্ধারণ করে নির্বাহী আদেশ জারি করার বিষয় ও সময় পাওয়া সহজ হতো।  টিমুক্তিযোদ্ধাগণ জীবন দিয়েছেন কোন কিছু পাওয়ার আশায় না। তবে তোমরা কিভাবে সম্মান দিচ্ছো বা দিচ্ছো না কিছু আসে যায় না। থামল কদম আলী।
 
 
 
বললাম, সঠিক ভাবে বলেছ, মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী প্রজন্ম হলাম আমরা। সে হিসাবে আমরা যত আন্দোলন দেখেছি বা যত মানুষের আত্ম ত্যাগ দেখিছি সেটা মৌলিক কোন পরিবর্তন করতে পারি নাই। তবে বাহায্যিক দৃষ্টিতে প্রতিটা আন্দোলন সফল। যেমন সফল বর্তমান কোটা আন্দোলন। 
 
 
 
ও বলল, সফল সেটা তো গুগলও বলছে, মানুষ হিসাবে তোমার উপলব্ধি যদি গুগলের মতো হয় তাহলে তোমাদের ও আমার মধ্যে পার্থক্য কোথায়! তোমার লেখা পড়ে সবাই ভাবছে তুমি কোটার বিপক্ষে।
 
বললাম, বাস্তবিক অর্থে কোন পার্থক্য নাই। কোটার পক্ষে বিপক্ষের জায়গা নাই। আমার পরিবার ও আমাদের সন্তানেরা জানে তারা কোটার কোন সুবিধা নিতে পারবে না। টিকে থাকতে তাঁকে নিজের মেধা দিয়ে বাঁচতে হবে। জেনারেশন টু জেনারেশন মেধার চর্চা করা কেউ এর বিপক্ষে যেতে পারে? বিষয়টা হল আমরা যে ভুল করে স্বাধীনতা পরবর্তী আন্দোলন সমূহের আত্মতাগকারীদের সাথে বেঈমানী করেছি সেটা ওরা না করে। আমরা অতিদ্রুত ভুলে যাই, কাদের ত্যাগের কারণে বর্তমান অবস্থানে আসলাম। জীবন উৎসর্গকারীর প্রতি কমিটমেন্ট থাকতে হবে আত্মার শান্তির জন্য। 
 
 
 
ও বলল, বলতে চাও কোন কমিটমেন্ট তোমরা পূরণ করতে পারো নাই? তাহলে আন্দোলন সফল বলছো কিভাবে? 
 
বললাম, বার্জিক দৃষ্টিতে প্রতিটা আন্দোলন মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে এই কোটার আগ পর্যন্ত সফল। প্রতিটা আন্দোলনের আত্মতাগকারীর আত্মার শান্তি হল কমিটমেন্ট করা এবং সেটা রাখা। ধর কোটা আন্দোলনে আত্মত্যাগকারীর আত্মার শান্তির জন্য এপ্রজন্মের কমিটমেন্ট হওয়া উচিত হবে তারা দেশের জন্য কাজ করবে ও কোন প্রকার দুর্নীতি করবে না। নিজের সন্তানের ১৫ লাখ টাকার ছাগল কাণ্ডে ভাইরাল হবে না। সকল ধর্মে মৃত্যু পরবর্তী জীবন আছে। পুনঃ জন্ম, বিচার দিবসে ফল নির্ভর করবে ভালো বা মন্দ কাজের উপর। যা আমরা পারি নাই, পূর্বের সকল আত্মত্যাগেকারীর আত্মার সাথে কমিটমেন্ট রাখতে।
 
 
 
ও বলল, এর অর্থ তোমরা সকল আন্দোলনের সুবিধা ভোগী কিন্তু কমিটমেন্ট রাখতে পার নাই, কেন পার নাই সেটার কারণ আছে অবশই।
 
বললাম, উপলব্ধি একান্ত ব্যক্তিগত, মৌলিক পরিবর্তন হয় নাই সেটা হল রোবট কদম আলী ও মানুষ কদম আলীর পার্থক্য। প্রতিটা আত্মত্যাগ বৃথা হয়েছে, যেটা কষ্টের। ডাক্তার মিলন ও নূর হোসেন চেয়েছিলেন স্বৈরাচার মুক্ত করে গণতন্ত্র ও শোষণ মুক্ত সমাজ। বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার পর স্বপ্ন ছিল দুর্নীতি মুক্ত দেশ। তারপরও উনার আত্মত্যাগ বর্তমান সময় পর্যন্ত পূরণ হয়েছে? মুক্তিযোদ্ধাগণ ও তিনি কোন দিন চান নাই অধিক সম্মান দেখাতে গিয়ে, পরিস্থিতি অসম্মানের জায়গায় তৈরি হয়। 
 
ও বলল, সেটা আবার কিভাবে হয়, বুঝিয়ে বল। গুগলে তো এগুলো থাকে না। শুরুর কথায় বোঝা গেল তোমরা আমার গোত্রের। 
 
 
 
বললাম, আবেগ ও সম্মানের স্থান জেনারেশন টু জেনারেশন ভেরি করে, এটা বাস্তবতা। ধর আমি ও আমার ওয়াইফ দুই পরিবার থেকে একটা বয়সে সামাজিক নিয়মে বসবাস শুরু করেছি। যদি আমরা উভয়েই মনে যার যার পরিবারের প্রতি অনুভূতি ও সম্মান দেখানো এক  হবে না, সেটা আশা করাও ভূল বা অযৌক্তিক হবে। পরবর্তী আরও থাকবে না এই সম্মানের ও অনুভতির জায়গা কিন্ত আমার আবেগ যদি পূর্বের অবস্থানেই থাকে তাহলে তৈরি হবে জেনারেশন গ্যাপ। যা বর্তমান পরিস্থিতির মূল কারণ।
 
ও বলল, বুঝলাম ও মানলাম, তোমর কষ্টের ও অনুভতির জায়গা। তোমার মতো আত্ম সমালোচনা ও আত্ম উপলব্ধি তো সবার হবে না। চিন্তার ভিন্নতা না বোঝায় এক পক্ষ রাজাকার ও অন্য পক্ষ ভারতের দালাল উপাধি দেওয়া নিয়ে ব্যস্ত। 
 
 
 
বললাম, এ বিভাজন একটা সময় পর্যন্ত কার্যকর ছিল, আমারও অতি আনন্দে সহীদ জননী জাহানারা ইমামের ডাকে কিন্তু সেম অনুভতির জায়গা বর্তমান বাচ্চাদের কাছে আসা করা আর অসম্মানের জায়গা তৈরির উৎসাহ দেওয়া সমান। সেই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বর্তমান কোটা আন্দোলন জোরদার হওয়ার মূল কারণ। আর বর্তমানে সেটার ঘাড়ে ভর করেছে মাথা ও পা বিহীন গোষ্ঠী। 
 
 
 
ও বলল, সঠিক ভাবে বোঝাতে পেরেছ, তোমার আত্ম উপলব্ধি হলেও খুব ভালো ভাবে আত্ম সমালোচনা করেছ খুব সহজ কিন্তু আত্মার ভোগীর গভীর থেকে। 
 
বললাম, বাদ দাও খুব ভাবগম্ভীর আলোচনা করলাম। নিজের অবস্থান পরিষ্কার জন্য নয়। কে কি ভাবল সেটা আমার আসে যায় না। সত্য ও আত্ম উপলব্ধি থেকে বলি ও চলার চেষ্টা করি। সময়ের সাথে এগিয়ে যেতে ডিজিটাল থেকে স্মার্ট বাংলাদেশ যাচ্ছি কিন্তু সেই সাথে পরিবর্তন করতে পারছি মানসিকতার। দেশ ও সরকার অনেক বড় বিষয়, আমাদের ছোট মাথায় চিন্তা না করা ভালো। পরবর্তী আলোচনা অবশই ভ্যাট আইন।
আত্ম সমালোচনা ও কদম আলি