ভ্যাট বন্ধু নিউজ প্রতিবেদক
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ | ৯:৩৮ এএম
অনলাইন সংস্করণ
আদানির বিপুল দায় মেটাতে হিমশিম, এডিপি কাটছাঁট
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ | ৯:৩৮ এএম
![আদানির বিপুল দায় মেটাতে হিমশিম, এডিপি কাটছাঁট](https://i.vatbondhu.com/images/original-webp/2024/12/15/20241215093750_original_webp.webp)
ছবি: সংগ্রহ
বিদ্যুৎ খাতে বিদেশি কোম্পানির ঋণ পরিশোধে তহবিল সঙ্কুলান করতে চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাজেটে বড় আকারে কাটছাঁট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলায় সরকার এডিপি বরাদ্দ ৫০ হাজার কোটি টাকা কমিয়ে ২ লাখ ১৫ হাজার কোটি টাকায় সীমাবদ্ধ করার পরিকল্পনা করছে।
বিদ্যুৎ আমদানির ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় ঋণগ্রহীতা ভারতীয় কোম্পানি আদানি পাওয়ার। সম্প্রতি গণ অভ্যুত্থান-পরবর্তী সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের পরপরই পাওনা আদায়ে চাপ প্রয়োগ করে আদানি গ্রুপ। পাওনা পরিশোধ না করলে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করার হুমকিও দেওয়া হয়। ইতোমধ্যে গত মাসে সরকার আদানির কাছে ১৭ কোটি ৩০ লাখ ডলার পরিশোধ করেছে, তবে এখনো ৮৪ কোটি ৩০ লাখ ডলারের বকেয়া রয়েছে।
সরকারের রাজস্ব ঘাটতি ও অপ্রয়োজনীয় ব্যয়ের কারণে চলতি এডিপি বাজেট কাটছাঁট করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। পরিকল্পনা কমিশন এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের যৌথ উদ্যোগে বৈদেশিক সহায়তা এবং দেশি অর্থায়নের অংশ পুনর্বিবেচনা করা হচ্ছে। বর্তমান এডিপি বরাদ্দ ২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা থেকে ৫০ হাজার কোটি টাকা কমিয়ে ২ লাখ ১৫ হাজার কোটিতে নামানোর পরিকল্পনা রয়েছে।
উন্নয়ন বাজেটের কাটছাঁট করা অর্থের একটি বড় অংশ বিদ্যুৎ খাতে স্থানান্তর করা হবে। বিদেশি বিদ্যুৎ কোম্পানির বকেয়া পরিশোধেই এই অর্থ ব্যয় হবে। আদানিসহ অন্যান্য বিদেশি কোম্পানির কাছ থেকে বিদ্যুৎ কেনার বিপুল পরিমাণ দেনা পরিশোধের চাপ সরকারের ওপর বাড়ছে।
বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে (জুলাই-অক্টোবর) এডিপি বাস্তবায়নের হার ৭.৯০ শতাংশে নেমে এসেছে, যা গত বছরের তুলনায় ৩.৬৪ শতাংশ পয়েন্ট কম। অনেক মন্ত্রণালয় এবং সংস্থা তাদের প্রকল্পের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে। ফলে উন্নয়ন বাজেট কাটছাঁটের প্রভাব সরাসরি বড় প্রকল্পগুলোর ওপর পড়তে পারে।
পরিকল্পনা কমিশন সব মন্ত্রণালয় ও সংস্থার সংশোধিত বাজেট প্রস্তাব চেয়েছে। প্রাপ্ত প্রস্তাবনার ভিত্তিতে জানুয়ারির শুরুতে সংশোধিত এডিপি খসড়া তৈরি হবে। ফেব্রুয়ারিতে সংশোধিত এডিপি পরিকল্পনা কমিশনের বর্ধিত কমিটিতে অনুমোদনের জন্য উত্থাপন করা হবে। এরপর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদে (এনইসি) চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য পাঠানো হবে।
বিদ্যুৎ খাতের বকেয়া পরিশোধে তহবিলের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে সংকট নিরসন সরকারের জন্য প্রধান চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। পাশাপাশি উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের সক্ষমতা বাড়াতে এবং বাজেটের অপ্রয়োজনীয় খাতগুলো কমিয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার পরিকল্পনা করছে সরকার।
বিদ্যুৎ খাতের বিদেশি ঋণ পরিশোধে সরকার বাজেট পুনর্বিন্যাস করছে। এডিপি বরাদ্দ কমিয়ে বিদ্যুৎ খাতে স্থানান্তর করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। আদানি পাওয়ারসহ অন্যান্য বিদেশি কোম্পানির চাপ মোকাবিলা এবং অর্থনৈতিক সংকট সমাধানে এই পদক্ষেপ সরকারের আর্থিক ব্যবস্থাপনার সক্ষমতার একটি গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা।
![আদানির বিপুল দায় মেটাতে হিমশিম, এডিপি কাটছাঁট](https://i.vatbondhu.com/images/original/2024/04/22/20240422145104_original.png)