ঢাকা বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ - ৩:৪৩:৪২ পিএম

আদানির সঙ্গে অফশোর ফান্ডে অংশীদার ছিলেন পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থার প্রধান

১২ আগস্ট, ২০২৪ | ২:২১ পিএম

আদানির সঙ্গে অফশোর ফান্ডে অংশীদার ছিলেন পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থার প্রধান

ছবি: সংগ্রহ

আলোচ্য বিষয়ের কোনো ইঙ্গিত না দিয়েই শনিবার যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বিনিয়োগ বিষয়ক গবেষণা সংস্থা হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ জানিয়েছিল, ভারতে তোলপাড় তোলার মতো খবর দিতে যাচ্ছে তারা। অনেকেই ধারণা করছিলেন, আদানি গ্রুপ নিয়ে নতুন কোনো তথ্য দেবে কিনা সংস্থাটি। রাত গড়াতেই সেই অনুমান সত্যি হলো। হিন্ডেনবার্গ নতুন প্রতিবেদনে জানিয়েছে, আদানি গ্রুপের অফশোর ফান্ডে ভারতের পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা সিকিউরিটিজ় অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড অব ইন্ডিয়ার (এসইবিআই) চেয়ারপারসন মাধবী পুরী বুচ ও তার স্বামী ধবল বুচের অংশীদারত্ব ছিল। 

 

অভিযোগ উঠতেই শনিবার রাতে এক বিবৃতিতে বিষয়টিকে ‘ভিত্তিহীন’ বলে উল্লেখ করেন মাধবী পুরী বুচ। সঙ্গে জানান, পরে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেবেন তিনি।


পুঁজিবাজারের পাশাপাশি হিন্ডেনবার্গের নতুন প্রতিবেদন ফের ভারতীয় রাজনৈতিক অঙ্গনে সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। কারণ আদানি গ্রুপের কর্ণধার গৌতম আদানি দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। এর আগেও এ নিয়ে সংসদে কয়েক দফা আলোচনা উঠেছে। এখন আদানিদের অর্থ পাচারে মাধবী পুরী বুচের সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে বিরোধীরা সংসদীয় কমিটির মাধ্যমে তদন্তের দাবি তুলেছে।

 

নতুন নথি অনুসারে, এমন একটি অফশোর তহবিলে বুচ দম্পতির অংশীদারত্ব ছিল যেখানে আদানি গ্রুপের চেয়ারম্যান গৌতম আদানির ভাই বিনোদ আদানি বড় অংকের অর্থ বিনিয়োগ করেছিলেন। তবে বিষয়টি অস্বীকার করে আদানি গ্রুপ গতকাল এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, বিদেশে আদানি গ্রুপের উপস্থিতি পুরোপুরি স্বচ্ছ। এতে গোপন কোনো বিষয় নেই।

 

আরো বলা হয়, বিভ্রান্তিকর যুক্তি দিয়ে ভুলপথে চালিত করছে হিন্ডেনবার্গ, যা পুরোপুরি ভারতীয় আইনের প্রতি অবমাননা। আদানির মুখপাত্র বলেন, ‘আমাদের অবস্থানকে নষ্ট করার এটি ইচ্ছাকৃত প্রচেষ্টা। প্রতিবেদনে উল্লিখিত ব্যক্তি বা বিষয়গুলোর সঙ্গে আদানি গ্রুপের কোনো ধরনের বাণিজ্যিক সম্পর্ক নেই।’

 

হিন্ডেনবার্গের ওই প্রতিবেদন সূত্রে ভারতীয় বাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা এসইবিআইয়ের তদন্তের মুখে পড়ে আদানি গ্রুপ, যা এখনো চলমান। মে মাসে আদানি গ্রুপের ছয়টি অঙ্গ প্রতিষ্ঠান জানিয়েছে, ভারতীয় স্টক মার্কেটের নিয়ম লঙ্ঘনের অভিযোগে নিয়ন্ত্রক সংস্থা থেকে তারা নোটিস পেয়েছে। একই সঙ্গে নন-পাবলিক তথ্যকে প্রকাশ্যে এনে ভারতীয় আইনের লঙ্ঘন করায় হিন্ডেনবার্গকে কারণ দর্শানোর নোটিস দিয়েছিল এসইবিআই। জবাবে হিন্ডেনবার্গের ওয়েবসাইটে এ অভিযোগকে ‘অর্থহীন’ উল্লেখ করা হয় গত মাসে।

 

হিন্ডেনবার্গের রিপোর্টে আরো দাবি করা হয়েছে, ধবল বুচের পরামর্শক সংস্থা আগোরা অ্যাডভাইজরিতে ৯৯ শতাংশ মালিকানা রয়েছে মাধবীর। ২০২২ সালে কনসালট্যান্সি বাবদ সংস্থার আয় হয়েছে ২ কোটি রুপিরও বেশি, যা মাধবীর বেতনের তুলনায় ৪ দশমিক ৪ গুণ বেশি।

 

হিন্ডেনবার্গের অভিযোগ, প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও এবং এ নিয়ে সংবাদমাধ্যমে ৪০টির বেশি অনুসন্ধানমূলক প্রতিবেদন প্রকাশ হলেও আদানির বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি এসইবিআই।

 

আদানির সঙ্গে অফশোর ফান্ডে অংশীদার ছিলেন পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থার প্রধান