জলবায়ু পরিবর্তনজনিত মানবসৃষ্ট কারণে বাতাসে গ্রিনহাউস গ্যাসের উপস্থিতি বৃদ্ধি পাচ্ছে দিনকে দিন। এর প্রভাবে প্রতিদিন বাড়ছে পৃথিবীর উষ্ণতা। এতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গ্রীষ্মকালের ব্যাপ্তি বাড়ছে এবং পূর্ববর্তী বছরগুলোর তুলনায় দীর্ঘ হচ্ছে গ্রীষ্মকালীন তাপপ্রবাহ। এই উষ্ণতা বৃদ্ধির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বিশ্বজুড়ে বাড়ছে হিটস্ট্রোক এবং গরমজনিত বিভিন্ন শারীরিক সমস্যায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যাও। শীতল জলবায়ু অঞ্চল বলে পরিচিত ইউরোপেও তাপজনিত অসুস্থতায় মৃতের সংখ্যা বাড়ছে। ২০ বছরে সেখানে পৌনে ২ লাখ মানুষ মারা গেছে। 

আরও পড়ুন

হিটস্ট্রোকে প্রতিদিন মারা যাচ্ছে ২০ কোটি টাকার মুরগি

জাতিসংঘের বৈশ্বিক স্বাস্থ্য নিরাপত্তা সংক্রান্ত অঙ্গ সংগঠন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) ইউরোপ শাখা শুক্রবার এক বিবৃতিতে বলেছে, ২০০০ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত প্রতি বছর হিটস্ট্রোক ও তাপজনিত বিভিন্ন শারীরিক অসুস্থতায় ভুগে বিশ্বে মৃত্যু হয়েছে অন্তত ৪ লাখ ৮৯ হাজার মানুষের। মৃতদের মধ্যে গড়ে ১ লাখ ৭৬ হাজার ৪০ জন ইউরোপের বাসিন্দা। অর্থাৎ প্রতি বছর বিশ্বজুড়ে হিটস্ট্রোক ও তাপজনিত অন্যান্য শারীরিক সমস্যায় আক্রান্ত হয়ে যত মানুষ মারা যান, শতকরা হিসেবে তার ৩৬ শতাংশই ইউরোপের বাসিন্দা।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ইউরোপ শাখা ইউরোপ মহাদেশ এবং মধ্য এশিয়ার মোট ৫৩টি দেশের জনগণের স্বাস্থ্য পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ ও পর্যালোচনা করে। শুক্রবারের বিবৃতিতে সংস্থাটি আরও জানিয়েছে, প্রতি বছর বৈশ্বিক গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধির তুলনায় ইউরোপের দেশগুলোতে দ্বিগুণ হারে তাপ বাড়ছে। এই তাপ বৃদ্ধির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে গত দুই দশকে ইউরোপে তাপজনিত অসুস্থতায় মৃত্যু বেড়েছে অন্তত ৩০ শতাংশ।

ডব্লিউএইচওর ইউরোপ শাখার পরিচালক হ্যান্স ক্লাগ। তিনি বলেন, ‘হিটস্ট্রোকের পাশাপাশি তাপজনিত যেসব অসুস্থতায় ইউরোপে মৃত্যু ঘটছে, সেগুলো হলো হৃদযন্ত্রের সমস্যা, শ্বাসকষ্ট, সেরেব্রাল-ভাসকুলার সমস্যা এবং ডায়াবেটিস সংক্রান্ত জটিলতা। বৈশ্বিক তাপপ্রবাহ বৃদ্ধির চূড়ান্ত মূল্য জীবন দিয়ে পরিশোধ করতে হচ্ছে মানুষকে,’ বিবৃতিতে বলেন ক্লাগ।