ঢাকা বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ - ৭:৪৬:২১ পিএম

উচ্চ মূল্যস্ফীতির চাপে মধ্যবিত্ত

৯ জানুয়ারি, ২০২৫ | ১:৭ পিএম

উচ্চ মূল্যস্ফীতির চাপে মধ্যবিত্ত

ছবি: সংগ্রহ

মূল্যস্ফীতি এখনও ঊর্ধ্বমুখী এবং এর প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়ছে নিম্নবিত্ত, শ্রমজীবী ও দিনমজুরদের ওপর—এমন মন্তব্য করেছেন পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। তিনি বলেছেন, শুধু নিম্নবিত্তই নয়, বর্তমানে মধ্যবিত্ত শ্রেণীও মূল্যস্ফীতির কারণে চাপের মধ্যে রয়েছে। বুধবার (৮ জানুয়ারি) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে অনুষ্ঠিত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠক শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা জানান।

 


ব্রিফিংয়ে ড. মাহমুদ বলেন, "সবাই বলছে মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমেছে, তবে এটি খুবই সীমিত। মূল্যস্ফীতির হার এখনও বাড়ছে।" তিনি আরও জানান, এ সময় দেশের সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে শ্রমজীবী এবং দিনমজুরদের জন্য পরিস্থিতি আরও কঠিন হয়ে উঠছে।

 

 

এছাড়া, ড. মাহমুদ বলেন, বর্তমান সরকার সুশাসিত গণতান্ত্রিক শাসন প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করছে, এবং এর মাধ্যমে দেশের অর্থনীতির স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার জন্য দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।

 


ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ জানান, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত সরকারের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়নে ৪০ হাজার কোটি টাকা ব্যয় করা হয়েছে। তবে, গত অর্থবছরের একই সময়ে এই পরিমাণ ছিল ৬২ হাজার কোটি টাকা। তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, অন্তর্বর্তী সরকার প্রকল্প গ্রহণের মাধ্যমে এডিপি বাস্তবায়ন ত্বরান্বিত হবে।

 


পরিকল্পনা উপদেষ্টা বলেন, "দেশের নদী ব্যবস্থাপনা নিয়ে আমরা একটি পর্যালোচনা এবং পরিকল্পনা তৈরি করছি।" তিনি জলবায়ু পরিবর্তন এবং তার প্রভাব সম্পর্কে আরও বেশি তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন। তবে, তিনি এটাও উল্লেখ করেন যে, ডেল্টা প্ল্যান দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা হলেও, বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ পরিস্থিতি সম্পর্কে কোনো বিশেষজ্ঞই সঠিকভাবে পূর্বাভাস দিতে পারেন না। তাই মধ্যমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

 


ড. মাহমুদ বলেন, "সাম্প্রতিক সময়ে আমাদের রফতানির প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধি পেয়েছে, এবং রেমিট্যান্স প্রবাহও আগের চেয়ে বেড়েছে। এটি আশার কথা।" তবে, তিনি আরো যোগ করেন, ভোজ্য তেল এর ক্ষেত্রে বাংলাদেশের জন্য স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়া সম্ভব নয়।

 


একনেক সভায় ১০টি উন্নয়ন প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, যার জন্য সরকারের খরচ হবে ৪ হাজার ২৪৬ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন থাকবে ৩ হাজার ৬৩২ কোটি টাকা, বৈদেশিক প্রকল্প ঋণ ২০৫ কোটি টাকা এবং সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন থাকবে ৪০৮ কোটি ৯২ লাখ টাকা।

 


চট্টগ্রাম কর ভবন নির্মাণ প্রকল্প, মোংলা বন্দরের পশুর চ্যানেলে সংরক্ষণ ড্রেজিং প্রকল্প, সিলেট বিভাগে ভূ-উপরিস্থ পানি ব্যবস্থাপনা ও কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি প্রকল্প, মুজিবনগর সেচ উন্নয়ন প্রকল্প পদ্মা বহুমুখী সেতুর ভাটিতে পদ্মা নদীর বাম তীর সংরক্ষণ প্রকল্প

 


অর্থ ও বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ, আইন ও বিচার উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, স্বাস্থ্য উপদেষ্টা ড. আ. ফ. ম খালিদ হোসেন সহ অন্যন্য সদস্যরা।

 

 

পরিকল্পনা উপদেষ্টা বলেন, "বিগত সরকারের তুলনায় বর্তমান সরকার আরও বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে দেশের সামাজিক ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার দিকে, এবং একনেক সভাগুলোর মাধ্যমে উন্নয়ন কার্যক্রম আরও গতিশীল হচ্ছে।"

 

 

উল্লেখ্য যে, একনেক সভার এই উদ্যোগগুলোর মাধ্যমে দেশের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড দ্রুত বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে, যা দেশের অর্থনীতি এবং জনগণের কল্যাণে বড় ভূমিকা রাখবে।

উচ্চ মূল্যস্ফীতির চাপে মধ্যবিত্ত