ঢাকা শনিবার, ৫ জুলাই, ২০২৫ - ৬:৪৭:০৭ এএম

উত্তরে ৫৬ লাখ মেট্রিক টন উদ্বৃত্ত ধানেও দাম নিয়ে কৃষকের শঙ্কা

১৯ মে, ২০২৪ | ৭:১৫ পিএম

উত্তরে ৫৬ লাখ মেট্রিক টন উদ্বৃত্ত ধানেও দাম নিয়ে কৃষকের শঙ্কা

রংপুরসহ উত্তরাঞ্চলে প্রতিবছর আমন, আউস ও বোরো ফসলের উৎপাদন হয় ১ কোটি সাড়ে ২২ লাখ মেট্রিক টন। মোট উৎপাদন থেকে চাহিদা বাদ দিয়ে এক বছরে এ অঞ্চলে খাদ্যের উদ্বৃত্ত থাকছে ৫৬ লাখ মেট্রিক টনের ওপর। এর পরেও কৃষকরা তাদের উৎপাদিত ধানের ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। প্রতিটি ফসল ওঠার মৌসুমে একটি সিন্ডিকেট মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের থেকে কমদামে খাদ্য শস্য ক্রয় করে মজুদের পাহাড় গড়ে মুনাফা লুটছে। সরকার মজুদবিরোধী অভিযানের ঘোষণা দিলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। এবার তাপপ্রবাহ এবং বৃষ্টি না হওয়ায় বোরা আবাদে সেচ বাবদ কৃষকের বাড়তি খরচ হয়েছে। ফলে ধানের ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।

 

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, উত্তরের ১৬ জেলায় মোট আবাদ যোগ্য জমির পরিমাণ হচ্ছে ২৭ লাখ ১৬ হাজার ৩৫৪ হেক্টর। এর মধ্যে রংপুর অঞ্চলে ১২ লাখ ৯৮ হাজার হেক্টর এবং রাজশাহী অঞ্চলে প্রায় সোয়া ১৪ লাখ হেক্টর। উত্তরাঞ্চলে মোট জনসংখ্যা প্রায় সাড়ে ৩ কোটি। এর মধ্যে ১১ শতাংশ রয়েছে শিশু ও বৃদ্ধ এবং খাদ্য গ্রহণে অনুপযোগী। এই ১১ শতাংশ বাদ দিলে উত্তরাঞ্চলে খাদ্য গ্রহণকারী জনসংখ্যা হচ্ছে ৩ কোটির কিছু ওপরে। একজন মানুষ প্রতি দিন ৪৫৩ দশমিক ০৬ গ্রাম খাদ্য গ্রহণ করতে পারে।

 

সেই হিসেবে এ অঞ্চলের মানুষের প্রতি বছর খাদ্যের চাহিদা হচ্ছে প্রায় ৬০ লাখ মেট্রিক টন। এর মধ্যে রংপুর অঞ্চলের খাদ্য চাহিদা হচ্ছে ২৯ লাখ ৭৫ হাজার মেট্রিক টন এবং রাজশাহী অঞ্চলের চাহিদা হচ্ছে ৩০ লাখ ২৬ হাজার মেট্রিক টন। রংপুর অঞ্চলে উদ্বৃত্ত থাকছে প্রায় ২৬ লাখ মেট্রিক টন এবং রাজশাহী অঞ্চলে উদ্বৃত্ত থাকছে প্রায় ৩০ লাখ মেটিক টন। এই উদ্বৃত্ত খাদ্য এ অঞ্চলের মানুষের চাহিদা মিটিয়ে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হয়।

 

কাউনিয়ার আফজাল হোসেন, রফিকুল ইসলাম, মিঠাপুকুরের আশরাফুল ইসলাম, সদরের কৃষক গৌরাঙ্গ মহন্তসহ অনেকেই জানালেন, বর্তমানে বাজারে বোরো প্রতিমণ ধান এক হাজার টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এই দামে ধান বিক্রি করে লাভ হচ্ছে না। এই অঞ্চলে পুরোপুরি ধান কাটা হলে সিন্ডিকেট করে ধানের দাম আরও কমতে পারে, এমনটা আশঙ্কা করছেন তারা। তারা আরও জানান, এ অঞ্চলের কৃকষরা শুধু খাদ্য শস্য ধান চালেই উদ্বৃত্ত নয়। কৃষকরা চাহিদার তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ শাকসবজি উৎপাদন করে এ অঞ্চলের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখলেও প্রতিটি পণ্যেই তারা ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

 

রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক ওবায়দুর রহমান মন্ডল জানান, সরকার কৃষকদের কাছ থেকে ধান চাল ক্রয়সহ কৃষকদের ধানের মূল্য ন্যায্য প্রাপ্তিতে বেশ কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। ফলে কৃষকরা মোটামুটি ফসলের দাম পাচ্ছে। তিনি আশা করেন ধানের দাম আরও বাড়বে।

উত্তরে ৫৬ লাখ মেট্রিক টন উদ্বৃত্ত ধানেও দাম নিয়ে কৃষকের শঙ্কা