ঢাকা শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ - ৯:১৮:৪৭ এএম

একসময় অ্যাপলের চেয়েও দামি শেয়ারের কোম্পানিটি ধুঁকছে কেন?

৪ নভেম্বর, ২০২৪ | ৫:০ এএম

একসময় অ্যাপলের চেয়েও দামি শেয়ারের কোম্পানিটি ধুঁকছে কেন?

ছবি: সংগ্রহ

তিন বছর আগেও ডিএনএ পরীক্ষা করার সাইট ‘২৩অ্যান্ডমি’ বিশাল সাফল্য দেখিয়েছিল। সে সময় কোম্পানিটির প্রতি শেয়ারের মূল্য টেক জায়ান্ট অ্যাপলকেও ছাড়িয়ে গিয়েছিল।

 

কিন্তু নিজেদের বংশ, পারিবারিক সংযোগ ও জেনেটিক সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানার উদ্দেশ্যে লাখ লাখ মানুষের বায়েমেট্রিক নমুনা নিয়ে ভিড় করার সেই দিন আর নেই। এখন নিজের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতেই লড়ছে কোম্পানিট

 

শেয়ারবাজারে বড় ধস দেখেছে ২৩অ্যান্ডমি। এমনকি এ সপ্তাহে একটুর জন্য তাদের নাম শেয়ারবাজার তালিকা থেকে বাদ পড়েনি বলে উঠে এসেছে বিবিসি’র প্রতিবেদনে।

 

এ প্রসঙ্গে বিবিসি ২৩অ্যান্ডমি’র সঙ্গে যোগাযোগ করলে কোম্পানিটি এমন ঝুঁকির কথা উড়িয়ে জোর দিয়ে বলেছে, তারা ‘গ্রাহকের ডেটা সুরক্ষিত রাখার বিষয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ও গ্রাহকের প্রাইভেসি বজায় রাখার বিষয়টিতেও তারা ধারাবাহিকভাবে মনযোগ দিচ্ছে।”

 

কিন্তু এক সময় বিশ্বের অন্যতম বহুল আলোচিত এ প্রযুক্তি কোম্পানির এমন বেহাল দশা কীভাবে ঘটল, সেটাই বড় প্রশ্ন।

 

এর সুপরিচিত গ্রাহকদের মধ্যে ছিলেন মার্কিন র‍্যাপার ও পডকাস্টার স্নুপ ডগ, মার্কিন টিভি উপস্থাপিকা অপরা উইনফ্রে, মার্কিন অভিনেত্রী ইভা লঙ্গরিয়া ও ধনকুবের ওয়ারেন বাফেট। এমনকি লাখ লাখ ব্যবহারকারী কোম্পানির কাছ থেকে অপ্রত্যাশিত ও জীবন বদলে দেওয়ার মতো ফলাফল পেয়ে আসছিলেন বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে বিবিসি।

 

এর মধ্যে কেউ কেউ জেনেছেন, তারা যাদেরকে নিজেদের মা-বাবা ভাবতেন, তারা আসলে তাদের প্রকৃত মা-বাবা নয়, বা তাদের জেনেটিক অবস্থা খুবই বাজে। সে সময় কোম্পানির প্রতিটি শেয়ারের মূল্য বেড়ে গিয়ে পৌঁছেছিল ৩২১ ডলারে।

 

তবে তিন বছর পর, এখন কোম্পানির প্রতিটি শেয়ারের মূল্য কমে এসেছে পাঁচ ডলারের নীচে, যার ফলে নিজের সর্বোচ্চ সাফল্যের দুই শতাংশ বাজারমূল্য নিয়ে শেয়ারবাজারে ধুঁকছে কোম্পানিটি।

 

স্কটল্যান্ডের স্ট্রাথক্লাইড ইউনিভার্সিটি’র ‘রেসপন্সিবল বিজনেস ইউনিট’-এর অধ্যাপক দিমিত্রিস অ্যান্দ্রিওসোপওলসের মতে, ২৩অ্যান্ডমি’র ক্ষেত্রে দুটি সমস্যা ছিল।

 

 

দ্বিতীয়ত, ওষুধ গবেষণার জন্য ডিএনএ ডেটাবেজ ব্যবহারের পরিকল্পনা থেকে লাভের মুখ দেখার বিষয়টি সময়সাপক্ষ কারণ কোনো ওষুধ তৈরির প্রক্রিয়ায় বেশ কয়েক বছর সময় লেগে যায়।

 

 

“ডেটার স্পর্শকাতরতার কারণে বিষয়টি উদ্বেগজনক,” বলছেন ‘প্রাইভেসি অফ পাওয়ার’ বইয়ের লেখক ক্যারিসা ভেলিজ।

 

“আপনি যদি নিজের ডেটা ২৩অ্যান্ডমি’কে দেন, তাহলে কোম্পানির কাছে আপনার মা বাবা, ভাই বোন, সন্তান এমনকি দূরের কোনো আত্মীয়ের তথ্যও দিতে হয়, তাও অনুমতি ছাড়া,” বিবিসি’কে বলেন ভেলিজ।‘কেমব্রিজ জাজ বিজনেস স্কুল’র কম্পিউটেশনাল সামাজিক বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ডেভিড স্টিলওয়েলও এ সম্ভাব্য ঝুঁকি নিয়ে একমত পোষণ করেছেন।

 

“আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্টের বিস্তারিত তথ্য হ্যাকিংয়ের শিকার হলে আপনি চাইলেই নতুন একটি অ্যাকাউন্ট খুলতে পারেন, কিন্তু ডিএনএ’র বেলায় সে উপায় নেই,”, ব্যাখ্যা করেন তিনি।

একসময় অ্যাপলের চেয়েও দামি শেয়ারের কোম্পানিটি ধুঁকছে কেন?