ভ্যাট বন্ধু নিউজ প্রতিবেদক
২৪ অক্টোবর, ২০২৪ | ১০:২৭ এএম
অনলাইন সংস্করণ
এয়ার ট্রাফিক রাডার প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ল
২৪ অক্টোবর, ২০২৪ | ১০:২৭ এএম
ছবি: সংগ্রহ
আকাশসীমা নিরাপদ রাখতে ও নজরদারি বাড়াতে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উন্নত প্রযুক্তির রাডার স্থাপনের উদ্যোগ নেয় বিগত সরকার। এজন্য এয়ার ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমসহ রাডার স্থাপন শীর্ষক একটি প্রকল্প নেওয়া হয়। চলতি বছরের জুনে তিন বছর মেয়াদি প্রকল্পটির কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু নির্ধারিত মেয়াদে কাজ শেষ করতে পারেনি বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ ।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০২১ সালের এপ্রিলে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সিএনএস-এটিএম (কমিউনিকেশন, নেভিগেশন অ্যান্ড সার্ভিল্যান্স-এয়ার ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট) ব্যবস্থাসহ রাডার স্থাপন শীর্ষক প্রকল্পের অনুমোদন দেয় তৎকালীন সরকার। বেবিচকের নিজস্ব ব্যয়ে প্রকল্পের খরচ ধরা হয় ৭৩০ কোটি ১৩ লাখ টাকা। বাস্তবায়নকাল ধরা হয় ২০২১ সালের জুলাই থেকে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত; কিন্তু মেয়াদ শেষে বর্তমানে এই প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি হয়েছে ৭৩.১৭ শতাংশ।
নির্ধারিত মেয়াদে কাজ শেষ করতে না পারায় আরও এক বছর মেয়াদ বাড়াতে চায় বেবিচক। এজন্য মেয়াদ বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে। সম্প্রতি মেয়াদ বৃদ্ধির বিষয়ে সংশ্লিষ্ট বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ে আলোচ্য প্রকল্পের ওপর বিভাগীয় প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির সভা হয়। মন্ত্রণালয়ের সচিবের সভাপতিত্বে সভায় মেয়াদ বৃদ্ধির সুপারিশ করা হয়।
গত ৯ অক্টোবর অনুষ্ঠিত ডিপিইসি সভায় জানানো হয়, ফ্রান্সের রাডার প্রস্তুতকারী কোম্পানি থ্যালাসের সঙ্গে বেবিচকের চুক্তি হয়। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী ২০২২ সালের জানুয়ারির মধ্যে রাডার সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান থ্যালাসের স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী প্রকল্প সাইট তাদের কাছে হস্তান্তর করার কথা ছিল। কিন্তু প্রকল্পের জন্য নির্ধারিত সাইটে বেশকিছু কাজ যেমন—নতুন কার পার্কিং ও রাস্তা নির্মাণ, ইলেকট্রিক ও পানির লাইন, আন্ডারগ্রাউন্ড কেবল, পিট, সুয়্যারেজ লাইন, হাইভোল্টেজ আন্ডারগ্রাউন্ড কেবল ইত্যাদি স্থানান্তর এবং নতুন করে স্থাপন করতে হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালের মে মাসে এটিএমসিসিটি সাইটটি হস্তান্তর করা হয় এবং রাডার সাইটটি হস্তান্তর করা হয় একই বছরের এপ্রিলে। যার ফলে ডিপিপি অনুমোদনের পরে চুক্তি সই করতে প্রায় চার মাস এবং সাইট হস্তান্তরে আরও প্রায় চার মাস দেরি হয়।
এসব কারণে বর্তমানে প্রকল্পের ক্রমপুঞ্জিত বাস্তব অগ্রগতি ৭৩ দশমিক ১৭ শতাংশ এবং আর্থিক অগ্রগতি ৭৯ দশমিক ৪০ শতাংশ। প্রকল্পের অবশিষ্ট কাজ গুণগতমান বজায় রেখে সম্পাদন, সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানকে কাস্টমার ফার্নিশড ইক্যুইপমেন্ট প্রদান, ইক্যুইপমেন্ট ইনসটলেশন, ইন্টিগ্রেশন, ক্যালিব্রেশন, বিল পরিশোধসহ অন্য দাপ্তরিক কার্যক্রম সমাপ্তির জন্য প্রকল্পের মেয়াদ ব্যয় বৃদ্ধি ব্যতিরেকে ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।
আইএমইডির সুপারিশে বলা হয়, প্রকল্পের ক্রয় কার্যক্রম ফ্রান্সের সরকারি প্রতিষ্ঠান থ্যালাস টেকনোলজির সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তি অনুযায়ী বাজারদর যাচাই সাপেক্ষে নেগোসিয়েশন হয়েছে কি না, তা অবহিত করতে হবে। যা বিশেষজ্ঞদের মাধ্যমে গঠিত কমিটি পর্যালোচনাপূর্বক পরিকল্পনা কমিশন, আইএমইডি ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য কর্তৃপক্ষকে আগামী ৪৫ কার্যদিবসের মধ্যে অবহিত করতে হবে। প্রকল্পের অনিষ্পন্ন দুটি অডিট আপত্তি নিষ্পত্তির লক্ষ্যে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করবে এবং এতদসংক্রান্ত অগ্রগতি আইএমইডিকে অবহিত করতে হবে।
সভায় মনিটরিং সেলের প্রতিনিধি জানান, প্রকল্পের কাজ শুরুর আগে অর্থ মন্ত্রণালয়ের মনিটরিং সেল থেকে লিক্যুইডিটি সার্টিফিকেট দেওয়া হয়েছে। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে লিক্যুইডিটি সার্টিফিকেটের শর্ত অনুযায়ী প্রতি অর্থবছরে প্রকল্প কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে অর্থ মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন দেওয়ার কথা; কিন্তু এ পর্যন্ত কোনো প্রতিবেদন পাওয়া যায়নি।
ডিপিইসি সভায় বিস্তারিত আলোচনার পর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সিএনএস-এটিএম সিস্টেমসহ রাডার স্থাপন শীর্ষক প্রকল্পের ব্যয় বৃদ্ধি ব্যতিরেকে মেয়াদ বৃদ্ধির সুপারিশ করে মন্ত্রণালয়। সুপারিশে ২০২৪ সালের জুনের পরিবর্তে ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত এক বছর মেয়াদ বৃদ্ধির বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। এক্ষেত্রে আইএমইডির শর্তাবলি মানতে হবে এবং অর্থমন্ত্রণালয়ের মনিটরিং সেলের শর্ত অনুসরণ করতে হবে।
মেয়াদ বৃদ্ধির বিষয়ে জানতে প্রকল্প পরিচালক আফরোজা নাসরিন সুলতানার মোবাইলে কয়েকবার কল করা হলে তিনি তা রিসিভ করেননি। পরে মেসেজ দিয়েও সাড়া মেলেনি। পরে এয়ার ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট শাখার পরিচালক শামসুল হকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। কিন্তু প্রকল্পের নাম শুনেই তিনি মিটিং আছে জানিয়ে পরে কথা বলবেন বলে লাইন কেটে দেন।