ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ - ৭:৪৭:১৮ এএম

এলাচসহ মসলাপণ্যের বাজার টানা নিম্নমুখী

২০ আগস্ট, ২০২৪ | ৯:৩ এএম

এলাচসহ মসলাপণ্যের বাজার টানা নিম্নমুখী

ছবি: সংগ্রহীত

পাইকারিতে বিভিন্ন মসলাপণ্য দাম টানা কয়েক দিন ধরে নিম্নমুখী রয়েছে। এর মধ্যে লবঙ্গ, জিরা, জয়ত্রি, জায়ফলের মতো মসলার দাম তুলনামূলক বেশি কমেছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

 


দেশের অন্যতম পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কয়েক মাস আগে প্রতি কেজি ভালো মানের (এলএমজি ব্র্যান্ড) এলাচের দাম ছিল ৪ হাজার ২০০ টাকা। গত রোববার তা বিক্রি হয় ২ হাজার ৬৯০ থেকে ২ হাজার ৭০০ টাকায়, যা কয়েক মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন।

 

 

ব্যবসায়ীরা জানান, চলতি বছরের শুরু থেকেই আমদানি কমে যাওয়ায় মসলার বাজার ঊর্ধ্বমুখী হয়ে ওঠে। শুল্ক বাড়ানো, ডলারের টানা মূল্যবৃদ্ধির ফলে আমদানি কমে যাওয়ায় সরবরাহও কমে যায়। এ কারণে সর্বশেষ কোরবানির ঈদের সময় মসলাপণ্যের বাজার ছিল চড়া। তবে দেশীয় রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের ফলে দামি মসলার চাহিদা কমে গেছে। প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে ব্যাংকিং চ্যানেলে অর্থ উত্তোলনে কড়াকড়ি আরোপ হওয়ায় ব্যবসায়ীদের মধ্যে লেনদেন সংকট দেখা দিয়েছে। এ কারণে বকেয়া পরিশোধের চাপে অনেকেই মজুদ মসলা কম দামে বিক্রি করে দিচ্ছেন। এতে প্রায় প্রতিদিনই এলাচের দাম কমছে।

 

 

ব্যবসায়ীদের দাবি, খাতুনগঞ্জের পাইকারি লেনদেনের বেশির ভাগই হয় বাকিতে। মাসভিত্তিক চেকের মাধ্যমে অনেকেই পণ্য কেনাবেচা করেন। ৫ আগস্টের আগেই আগামী ৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অনেকের পণ্য ক্রয় করা রয়েছে। আগামী ৪ সেপ্টেম্বরের মধ্যে চেকের জন্য ব্যাংকে টাকা রাখতে না পারলে ব্যবসায়িক প্রতারণা বা চুক্তির বরখেলাপের সম্ভাবনা রয়েছে। যার কারণে মজুদ পণ্য কম দামে বিক্রি করে হলেও প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে চাইছেন ব্যবসায়ীরা। এতে চলতি মাস পর্যন্ত মসলার বাজার নিম্নমুখী থাকতে পারে মনে করছেন তারা।

 

 

ব্যবসায়ী ও আমদানিকারকদের সূত্রে জানা গেছে, বিশ্বে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ এলাচ উৎপাদন হয় ১০-১২টি দেশে। তবে সবচেয়ে বেশি উৎপাদন হয় গুয়াতেমালা ও ভারতে। এছাড়া তানজানিয়া, শ্রীলংকা, লাওস, ভিয়েতনাম, পাপুয়া নিউগিনি, নেপাল, থাইল্যান্ড, হন্ডুরাস, ইন্দোনেশিয়া ও ভুটানে এলাচ উৎপাদন হয়। গুয়াতেমালায় এলাচের উৎপাদন হ্রাস-বৃদ্ধির ফলে প্রতি বছর এলাচের বাজারমূল্য ওঠানামা করে।

 

 

জানা গেছে, এক বছর আগেও দেশের বাজারে প্রতি কেজি এলাচের পাইকারি মূল্য ছিল ১ হাজার ৩০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকার মধ্যে। দেশীয় এলসি সংকট, ডলারের ক্রমাগত মূল্যবৃদ্ধি, আমদানি কমে যাওয়ার ঘটনায় এলাচের বাজার কেজিপ্রতি ২ হাজার টাকা ছাড়িয়ে যায়। তবে মুষ্টিমেয় কয়েকটি ট্রেডিং ও আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান অভ্যন্তরীণ লেনদেন ও ডিওর মাধ্যমে স্লিপ কেনাবেচা করায় এলাচের দাম দ্রুত সময়ের মধ্যে অস্বাভাবিক বেড়ে যায় বলে মনে করেন খাতুনগঞ্জের পাইকারি ব্যবসায়ীরা।

 

 

খাতুনগঞ্জের মসলা ব্যবসায়ী মো. জসিম উদ্দিন বণিক বার্তাকে বলেন, ‘মসলাপণ্যের মধ্যে এলাচ অত্যাবশ্যকীয় নয়। দেশের অনেক পাইকারি ও খুচরা মুদি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে এলাচ পাওয়াও যায় না। বিশ্ববাজারে বুকিং দাম বেড়ে যাওয়ায় দেশের বাজারেও এর প্রভাব পড়ে। বর্তমানে কয়েক সপ্তাহ ধরে এলাচের দাম নিম্নমুখী। পাশাপাশি জিরা, লবঙ্গ, জয়ত্রির মতো দামি মসলার দাম কমছে।’

এলাচসহ মসলাপণ্যের বাজার টানা নিম্নমুখী