ভ্যাট বন্ধু নিউজ প্রতিবেদক
৩ অক্টোবর, ২০২৪ | ১০:২৬ এএম
অনলাইন সংস্করণ
ওষুধের বাজারে চরম নৈরাজ্য
৩ অক্টোবর, ২০২৪ | ১০:২৬ এএম
![ওষুধের বাজারে চরম নৈরাজ্য](https://i.vatbondhu.com/images/original/2024/10/03/20241003102243_original.gif)
ছবি: সংগ্রহ
দেশে কয়েক মাস পরপরই ওষুধের দাম বাড়ানো যেন নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। গত কয়েকদিনে অ্যান্টিবায়োটিক, ব্যথানাশক ট্যাবলেট, ভিটামিন, গ্যাস্ট্রিক ও ডায়াবেটিকসের ওষুধসহ বিভিন্ন ধরনের ইনজেকশনের দাম বাড়িয়েছে কোম্পানিগুলো। অপরদিকে দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ভোক্তা অধিদপ্তরসহ প্রশাসনের অভিযানে ভাটা পড়েছে। এই সুযোগে ওষুধের দাম বেড়েছে সর্বনিম্ন ৫ শতাংশ থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ৪০ শতাংশ পর্যন্ত।
রাজধানীর গোপীবাগ, শাহবাগ, মিটফোর্ড ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এলাকার কয়েকটি ফার্মেসিতে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। ওষুধের দাম বাড়ার বিষয়টি নিয়ে প্রায়ই বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ছেন ক্রেতা-বিক্রেতা। জানা যায়, দেশে উৎপাদিত মোট ওষুধের মাত্র ৩ শতাংশের দাম নির্ধারণ করতে পারে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর। বাকি ৯৭ ভাগের মূল্য নিয়ন্ত্রণ করে ওষুধ প্রস্তুতকারী কোম্পানিগুলো। আর এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে ইচ্ছে মতো ওষুধ কোম্পানিগুলো মুনাফা করছে। এক্ষেত্রে বরাবরই বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস, ওষুধের কাঁচামাল, মার্কেটিং খরচ ও ডলারের দাম বাড়ার বিষয়টি সামনে আনা হয়। ওষুধের দাম বৃদ্ধি রোধে গত ২৯ এপ্রিল উচ্চ-আদালত থেকে নির্দেশনা দেয়া হয়। কিন্তু সেটি যে কার্যকর হচ্ছে না তা ফার্মেসিগুলো ঘুরেই বোঝা গেছে। ওষুধের দাম নিয়ন্ত্রণে নতুন সরকারকে নজর দেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
সরজমিন বিভিন্ন ফার্মেসি ঘুরে দেখা গেছে, গত ১৫ থেকে ২০ দিন আগেও বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের নাপা ১০ এমএল আইভি ইনজেকশনের দাম ছিল ১১০ টাকা। এখন তা বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকায়। একই কোম্পানির ট্যাবলেট এসিফিক্স প্রতি পাতা (১০টি ট্যাবলেট) ৭০ টাকা থেকে বেড়ে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। একই কোম্পানির ট্যাবলেট রসুটিন এক বক্সের (৩০টি) দাম ৩৩০ টাকা থেকে বেড়ে ৩৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পপুলার ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের রসুভাস্টাটিন ট্যাবলেটের এক পাতার (১০টি) দাম ১৬৫ টাকা থেকে ১৮০ টাকা হয়েছে। এরিস্টোফার্মা লিমিটেড কোম্পানির লিনাগিøপ ট্যাবলেটের এক পাতার (১০টি) দাম ২০০ টাকা থেকে বেড়ে ২২০ টাকা হয়েছে। একই কোম্পানির আই ড্রপস অপটিমক্স ৫ এমএলের দাম ১৮০ টাকা থেকে বেড়ে ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস পিএলসি কোম্পানির ক্যামলোসার্ট ট্যাবলেট এক পাতার (১০টি) দাম ১০০ টাকা থেকে ১২০ টাকা হয়েছে।
ওষুধের দাম বাড়ার বিষয়ে জানতে চাইলে শাহবাগের মা ফার্মেসির কর্মচারী শওকত ইমাম বলেন, চলতি বছরের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত কয়েক দফায় কিছু ওষুধের দাম বেড়েছে। কোনো কোনো ওষুধের দাম বেড়েছে দ্বিগুণ। ভিটামিন জাতীয় ট্যাবলেট ও বিভিন্ন ইনজেকশনের দাম সবচেয়ে বেশি বেড়েছে। যেহেতু দেশের মধ্যে নতুন এক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, তাই হয়তো এ বিষয়ে কারো নজরদারি নেই।
ওষুধের দাম বাড়ানোর প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের সাবেক ডিন অধ্যাপক ড. আ ব ম ফারুক বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নিয়ম অনুযায়ী, অত্যাবশ্যকীয় ওষুধের তালিকা করা ছাড়া ওষুধগুলোর দাম নির্ধারণ করে সরকার। আমাদের দেশে ১৯৮২ সালের ওষুধ নীতিতেও তা ছিল। কিন্তু ১৯৯৪ সালে ওষুধ কোম্পানির দাবির মুখে বলা হলো- ১৭ শতাংশ ওষুধের দাম সরকার নির্ধারণ করবে, বাকিটা করবে কোম্পানি। একে বলা হলো ইন্ডিকেটিভ প্রাইস। তখন থেকেই এ খাতে নৈরাজ্য শুরু। ১৯৯৪ সালে নেয়া সিদ্ধান্তের সুবিধা নিয়ে ওষুধ কোম্পানিগুলো দাম বাড়িয়েই যাচ্ছে।
- ট্যাগ সমূহঃ
- ওষুধ
![ওষুধের বাজারে চরম নৈরাজ্য](https://i.vatbondhu.com/images/original/2024/04/22/20240422145104_original.png)