ঢাকা বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ - ৫:৫১:২৫ এএম

কদম আলি ও ভূরাজনীতি : মোঃ আলীমুজ্জামান

২০ নভেম্বর, ২০২৪ | ১২:৫ পিএম

কদম আলি ও ভূরাজনীতি : মোঃ আলীমুজ্জামান

ছবি: সংগ্রহীত

দেশের চিন্তা বাদ দিয়ে বর্তমানে ভূরাজনীতি নিয়ে লেখা পড়ে থাকতে পারলাম না। সরকার পরিবর্তনের ফলে কি অর্থনৈতিক চিন্তার আমূল পরিবর্তন হবে, সেটা ভাবলাম তোমার সাথে আলোচনা করে আসল বিষয়টা জেনে নিই। থামল কদম আলি। বললাম, “সরকার তো তোমার দেশেও পরিবর্তন হয়েছে, সেটার বাহাদুরি ফলাতে এসেছ? নাকি আমাদের দৈন্য দশা উপভোগ করার মতলব?”

 

কদম আলি বলল, “ট্রাম্পের বিজয় ভূরাজনীতির ব্যাপক পরিবর্তন আনবে, সেটা ধরে আলোচনা চালিয়ে যাও।”
ও বলল, “গুগলে তো ভবিষ্যৎ বলা থাকে না। তবে তোমাদের মতো বিশেষজ্ঞরা যা লেখে, সেটার বিশ্লেষণ করতে পারি। আসলে ব্যাপক পরিবর্তন হবে প্রেসিডেন্টের ব্যক্তিগত সম্পর্কের কারণে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ থেমে যেতে পারে। ভারত হবে এ অঞ্চলের সেরা খেলোয়াড়। ভারত যদি রাশিয়া এবং আমেরিকার সাথে ভালো সম্পর্ক গড়ে তোলে, তাহলে চীন একা ব্রিকস এগিয়ে নিতে পারবে না। তাই চীন ট্রাম্পের দিকে বন্ধুত্বের হাত বাড়াচ্ছে। তবে, মিডল ইস্ট যুদ্ধের কী হবে, তা বলা যাচ্ছে না।”

 

বললাম, “খোঁচা তো ভালোই দিলে। তবে মিডল ইস্টে ইরানকে আগের মতো ভাবলে তোমরা মোড়লরা ভুল করবে। ইসরাইল যুদ্ধে ইরান যেভাবে তাদের গর্বের আইরন ডোম ফাঁকি দিয়ে তেলআবিব তছনছ করল, সেটা মাথায় রাখতে হবে। বর্তমানে চীন একা হয়ে পড়ায় তারা কোন দিকে কীভাবে জোট গঠন করে, সেটা দেখার বিষয়। ইরানের সাথে চীনের চুক্তি এবং তুরস্কের জার্মানি থেকে ৪০টি ইউরো ফাইটার ক্রয় চুক্তি করা—যা আমেরিকার এফ-১৬-এর পরিবর্তে—এগুলোও ভাববার বিষয়। মিডল ইস্ট নিয়ে ট্রাম্প প্রশাসনকে ভাবতে হবে। সৌদি আরবের ইরানকে সমর্থন এবং তুরস্কে ইউরো ফাইটার বিক্রিতে ফ্রান্স ও ব্রিটেনের সমর্থনও গুরুত্বপূর্ণ ইঙ্গিত দিচ্ছে।”

 

ও বলল, “সঠিক কথা বলেছ। পূর্বের টার্মের মতো এবারও ন্যাটো-এর গুরুত্ব কমে যাওয়ার কথা বিবেচনায় রেখে জার্মানি কাজটা করেছে। তবে ব্রিকস-এর কাজের গতি কমলেও এটি থেমে থাকবে বলে মনে হয় না। যদি ব্রিকস বন্ধও হয়, ট্রাম্প-পরবর্তী আমেরিকার সরকার ভিন্ন নীতিতে আসতে পারে। তখন বিশ্ব ব্যালান্স ঠিক রাখার নতুন চ্যালেঞ্জ আসবে। তবে বিশ্বযুদ্ধ হতে পৃথিবী হয়তো কিছুটা সময় পেতে পারে।”

 

 

বললাম, “তোমার ধারণা উল্টোও হতে পারে। ট্রাম্প সরকারের চার বছরে যদি চীন, ইরান, তুরস্ক, জার্মানি এবং ইউরোপের আরো কয়েকটি দেশ মিলে ভিন্ন জোট গঠন করে, তখন কিন্তু ব্রিকস গুরুত্ব হারাবে। তবে সবই পরিস্থিতি বিবেচনায় নির্ভর করবে। শীতল যুদ্ধ আরও বাড়তে পারে। বর্তমান সময়ে অপেক্ষা করতে হবে, পৃথিবী কোন দিকে যাবে।”

কদম আলি ও ভূরাজনীতি : মোঃ আলীমুজ্জামান