ঢাকা বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ - ৭:০৩:৩৮ পিএম

  • ঢাকা বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ - ৭:০৩:৩৮ পিএম

  • সর্বশেষ

ভ্যাট বন্ধু নিউজ প্রতিবেদক

৯ জানুয়ারি, ২০২৫ | ১১:১৪ এএম

অনলাইন সংস্করণ

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে আরও ১ হাজার কোটি টাকা সহায়তা চাইল ন্যাশনাল ব্যাংক

৯ জানুয়ারি, ২০২৫ | ১১:১৪ এএম

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে আরও ১ হাজার কোটি টাকা সহায়তা চাইল ন্যাশনাল ব্যাংক

ছবি: সংগ্রহ

সংকটে থাকা বেসরকারি খাতের ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেড (এনবিএল) সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে আরও ১ হাজার কোটি টাকার তারল্য সহায়তা চেয়েছে। এর আগে, কেন্দ্রীয় ব্যাংক ব্যাংকটিকে ৪ হাজার কোটি টাকার সহায়তা দিয়েছিল। তবে নতুন সহায়তা চাওয়ার বিষয়ে এখনও কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।

 


বাংলাদেশ ব্যাংককে দেওয়া আবেদনপত্রে ন্যাশনাল ব্যাংকের চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু বলেছেন, "আমরা গ্রাহকদের টাকা পরিশোধ করার জন্য সহায়তা চেয়েছি। আগে বাংলাদেশ ব্যাংক আমাদের ৫-৬ হাজার কোটি টাকা দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিল, কিন্তু তারা ৪ হাজার কোটি টাকা দিয়েছে। এখন আমরা আবার ১ হাজার কোটি টাকা সহায়তা চেয়েছি।"

 

 

এনবিএল কর্তৃপক্ষ আরও জানান, গত বছর ৪ হাজার কোটি টাকার সহায়তা কীভাবে ব্যয় করা হয়েছে, সে বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক একটি প্রতিবেদন চেয়েছে। এ নিয়ে এক প্রেজেন্টেশন প্রস্তুত করা হয়েছে এবং ১২ জানুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের সঙ্গে একটি সভা অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে ব্যাখ্যা দেওয়া হবে কিভাবে এই অর্থ ব্যবহৃত হয়েছে।

 


ন্যাশনাল ব্যাংক এখন ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে বলে জানিয়েছেন ব্যাংকের চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, "ব্যাংকটির আগের পর্ষদ নানা মাত্রায় দুর্নীতি করেছে, যা শুধু ঋণ দেওয়ার অনিয়মের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না, বরং ঋণের সুদ মওকুফসহ অনেক ধরনের দুর্নীতি হয়েছে। এই অবস্থান থেকে বের হতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সহায়তা প্রয়োজন।"

 

 

তিনি আরও জানান, ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে প্রতিদিন গড়ে ২০-৩০ কোটি টাকা আমানত আসছিল, যা ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসে প্রায় ৬০ কোটি টাকায় পৌঁছেছে।

 


কেন্দ্রীয় ব্যাংক এর আগে ৬টি ব্যাংক—ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক, এবং ন্যাশনাল ব্যাংক—কে মোট ২২ হাজার ৫০ কোটি টাকা তারল্য সহায়তা দিয়েছিল। তবে, এই সহায়তা ছাপানো টাকার মতো প্রভাব ফেলবে বলে একাধিক বাংলাদেশ ব্যাংক কর্মকর্তা টিবিএস-কে জানিয়েছেন।

 

 

এনবিএলসহ অন্যান্য ব্যাংকগুলোকে তারল্য সহায়তা দেওয়ার ফলে ব্যাংকগুলোর দায় বেড়ে যাবে এবং এটি সাময়িক সমাধান হতে পারে, কিন্তু দীর্ঘমেয়াদে আরও বড় সমস্যা তৈরি করতে পারে, এমন আশঙ্কাও রয়েছে।

 


এনবিএল ছাড়াও, পদ্মা ব্যাংক ১ হাজার ৩০০ কোটি টাকা এবং জনতা ব্যাংক ১০ হাজার কোটি টাকা তারল্য সহায়তা চেয়েছিল। তবে, কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখনও এই দুটি ব্যাংকের আবেদন অনুমোদন করেনি।

 


ন্যাশনাল ব্যাংকের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্ব ২০০৯ সালে শুরু হয়, যখন সিকদার গ্রুপ এর একক নিয়ন্ত্রণে ছিল। ২০২১ সালে ব্যাংকের দীর্ঘদিনের চেয়ারম্যান জয়নুল হক সিকদার মারা গেলে, সিকদার পরিবারের মধ্যে বিবাদ শুরু হয়। এরপর ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে সৈয়দ ফারহাত আনোয়ার নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব নেন এবং ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক (ইউসিবি) সঙ্গে একীভূত হওয়ার আলোচনা শুরু হয়। তবে রাজনৈতিক পরিস্থিতি পরিবর্তনের কারণে সেই আলোচনা এগোয়নি।

 

 

বাংলাদেশ ব্যাংক ২০২৩ সালে এনবিএল-এর পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দেয় এবং এস আলম গ্রুপ থেকে ব্যাংককে মুক্ত করে। এর ফলে ব্যাংকটি নতুন দিশায় এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে।

 


এনবিএল-এর মতো আরও কয়েকটি ব্যাংক বর্তমানে তারল্য সংকটে ভুগছে এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সহায়তার দিকে নজর দিচ্ছে। একদিকে যেখানে ব্যাংকগুলোর জন্য সহায়তা প্রয়োজন, অন্যদিকে অর্থনীতির ওপর এর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ সৃষ্টি হচ্ছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে আরও ১ হাজার কোটি টাকা সহায়তা চাইল ন্যাশনাল ব্যাংক