ঢাকা বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ - ১০:১১:৩১ পিএম

কোম্পানি পর্যায়ে গ্যাস কেনাবেচা হবে মিটারে

৯ জানুয়ারি, ২০২৫ | ৭:০ পিএম

কোম্পানি পর্যায়ে গ্যাস কেনাবেচা হবে মিটারে

ছবি: সংগ্রহ

দুই বছর পর কোম্পানি পর্যায়ে গ্যাস কেনাবেচায় মিটারিং পদ্ধতির অনুমোদন দিয়েছে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ। একইসঙ্গে আনুপাতিক হারে বিল করার প্রথা বাতিল করা হয়েছে। এখন থেকে গ্যাস উৎপাদন, সঞ্চালন, বিতরণ ও বিপণনের প্রতিটি স্তরে মিটারিং পদ্ধতি চালু করা হবে। এতে অপচয় ও চুরি কমবে এবং সিস্টেম লসের সঠিক হিসাব নির্ণয় করা সম্ভব হবে। পেট্রোবাংলা দুই বছর ধরে মিটারিং ব্যবস্থা বাস্তবায়নের চেষ্টা করলেও গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (জিটিসিএল) বিরোধিতার কারণে তা সম্ভব হয়নি।

 

মিটারিং ব্যবস্থা চালু করার আগে জিটিসিএল কেবল গ্যাস পরিমাপ করত, কিন্তু বিতরণ কোম্পানিগুলোর কাছে সরবরাহের সময় পরিমাপ করা হতো না। নতুন ব্যবস্থায় মিটারের মাধ্যমে গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করা হবে। জিটিসিএল যেভাবে মিটার অনুযায়ী গ্যাস বুঝে নেয়, তেমনি মিটারের মাধ্যমেই বিতরণ কোম্পানিগুলোকে সরবরাহ করবে।

 

২০২৩ সালের ১ জানুয়ারি থেকে মিটারিং পদ্ধতি কার্যকর করতে ভূতাপেক্ষ অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগের এক চিঠিতে গ্যাস উৎপাদন থেকে শুরু করে গ্রাহকের কাছে পৌঁছানো পর্যন্ত মিটারিং ব্যবস্থা চালুর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। মিটারিং ব্যবস্থা পরিবীক্ষণ, ক্যালিব্রেশন ও রিডিং গ্রহণের দায়িত্ব পেট্রোবাংলা সমন্বয় করবে।

 

গ্যাস সিস্টেম লস কমাতে অবৈধ সংযোগ, লিকেজ এবং চুরি বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি প্রশাসনিক দুর্বলতার কারণে সৃষ্ট সিস্টেম লস চিহ্নিত করতে হবে। এসবের সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সিস্টেম লস কমাতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখা কর্মকর্তাদের মূল্যায়নের কথাও বলা হয়েছে।

 

মিটারিং পদ্ধতি চালুর ফলে জিটিসিএলের আর্থিক লোকসানের সমাধান এবং গ্যাস খাতে স্বচ্ছতা বৃদ্ধির প্রত্যাশা করা হচ্ছে। পেট্রোবাংলার বিদায়ী চেয়ারম্যান জনেন্দ্র নাথ সরকার জানান, মিটারিং ব্যবস্থা চালুর মাধ্যমে অপচয় ও চুরি নির্ধারণ করা সম্ভব হবে। এতদিন জিটিসিএল তাদের সিস্টেম লস বিতরণ কোম্পানিগুলোর ওপর চাপিয়ে মুনাফা করেছে। এতে প্রতি বছর তাদের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা লক্ষাধিক টাকা প্রফিট বোনাস পেতেন।

 

অতীতে মিটারিং ব্যবস্থা না থাকায় গ্যাস সরবরাহ ব্যবস্থায় প্রকৃত পরিমাণ নিরূপণ সম্ভব হতো না। নতুন ব্যবস্থায় উৎপাদন থেকে ২০টি মিটারিং পয়েন্টের মাধ্যমে গ্যাস গ্রহণ এবং ৬৪টি পয়েন্টের মাধ্যমে সরবরাহ করা হচ্ছে। ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত মিটারিং পদ্ধতিতে সিস্টেম লসের তথ্য সংগ্রহ করা হয়। জিটিসিএলের সিস্টেম লস ছিল ২.৪১-৩.১০ শতাংশ। অন্যদিকে তিতাস গ্যাসের সিস্টেম লস ছিল ১০.৭৮ শতাংশ এবং অন্যান্য বিতরণ কোম্পানির লসও উল্লেখযোগ্য ছিল।

 

বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) গ্যাসের সিস্টেম লস ২ শতাংশের নিচে নামিয়ে আনার নির্দেশ দিয়েছে। এতদিন নানা ফাঁকফোকর ব্যবহার করে চুরি হওয়া গ্যাসকে সিস্টেম লস হিসেবে দেখানো হতো। মিটারিং ব্যবস্থা চালুর মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান হবে এবং গ্যাস খাতে স্বচ্ছতা বাড়বে।

কোম্পানি পর্যায়ে গ্যাস কেনাবেচা হবে মিটারে