ভ্যাট বন্ধু নিউজ প্রতিবেদক
৬ মার্চ, ২০২৫ | ৩:২৩ পিএম
অনলাইন সংস্করণ
ক্ষুদ্র মজুদদারদের কারণে অনিশ্চয়তায় পাট শিল্প: বাণিজ্য উপদেষ্টা
৬ মার্চ, ২০২৫ | ৩:২৩ পিএম

ছবি: সংগ্রহ
ক্ষুদ্র মজুদদারদের অসংযত কার্যক্রম পাট শিল্পকে অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বাণিজ্য, বস্ত্র ও পাট উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।
তিনি বলেন, করোনা পরবর্তী সময়ে পাট শিল্পের বড় সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল। কিন্তু তখন কাঁচা পাটের অনিয়ন্ত্রিত মূল্যবৃদ্ধির কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে ক্রেতা হারানো শুরু হয়। এই সময় ক্ষুদ্র মজুদদারদের প্রভাব বৃদ্ধি পাওয়ায় পাট শিল্পের স্থিতিশীলতা ব্যাহত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) রাজধানীর মনিপুরীপাড়া জুট ডাইভারসিফিকেশন প্রমোশন সেন্টারে ‘বহুমুখী পাটপণ্য ও তাঁত বস্ত্র মেলা-২০২৫’ উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। জাতীয় পাট দিবস উপলক্ষে ২০ দিনব্যাপী এই মেলার আয়োজন করেছে পাট অধিদপ্তর ও জুট ডাইভারসিফিকেশন প্রমোশন সেন্টার।
বাণিজ্য উপদেষ্টা জানান, করোনার পর পাট রপ্তানি ১ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গিয়েছিল। কিন্তু কাঁচা পাটের মূল্যবৃদ্ধির কারণে রপ্তানিতে বড় ধরনের ধাক্কা আসে। ২০২০ সালে যেখানে কাঁচা পাটের দাম ছিল ২ হাজার টাকা, তা বেড়ে ৭ হাজার টাকা ছাড়িয়ে যায়। এ কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিশ্রুতি রক্ষা করা সম্ভব হয়নি, ফলে ক্রেতারা অন্য বিকল্পের দিকে ঝুঁকেছে।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে পাট রপ্তানির প্রবৃদ্ধি থমকে গেছে। যদি পাট রপ্তানিতে ৫ বিলিয়ন ডলারের সম্ভাবনা থাকে, সেটি এখন ১ বিলিয়নের নিচে নেমে এসেছে। তবে সরকার এটিকে অন্তত ২ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করার পরিকল্পনা করছে।
শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, পাটশিল্পের উন্নয়নে শুধু সম্ভাবনার কথা বলে লাভ নেই, বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ নিতে হবে। তিনি স্থানীয় বাজারে পাটের ব্যবহার বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
তিনি বলেন, বাধ্যতামূলক পাট প্যাকেজিং আইনের যথাযথ বাস্তবায়ন হলে স্থানীয় বাজারে বড় সুযোগ সৃষ্টি হবে। বিশেষ করে পাটের বাজারের ব্যাগ তৈরি করা গেলে কয়েকশো কোটি টাকার বাজার সৃষ্টি করা সম্ভব হবে। যা দেশীয় উদ্যোক্তাদের জন্য বিশাল সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দেবে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বস্ত্র ও পাট সচিব আব্দুর রউফ। এছাড়া আরও বক্তব্য রাখেন পাট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) জিন্নাত আরা, বাংলাদেশ তাঁত বোর্ডের চেয়ারম্যান আবু আহমেদ সিদ্দিকী, রেশম বোর্ডের পরিচালক এম এ মান্নান, সাবেক অতিরিক্ত সচিব বিমল চন্দ্র রায়, জুট স্পিনার অ্যাসোসিয়েশনের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক তাপস প্রামাণিক ও বাংলাদেশ জুট মিল অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান ফরহাদ আহমেদ আকন্দ।
সরকার পাট রপ্তানির হার বাড়াতে এবং অভ্যন্তরীণ বাজার সম্প্রসারণে কার্যকর উদ্যোগ নিতে চায়। ক্ষুদ্র মজুদদারদের নিয়ন্ত্রণ, ন্যায্য মূল্য নির্ধারণ ও পাটের বহুমুখী ব্যবহার নিশ্চিত করা গেলে পাটশিল্প আবার ঘুরে দাঁড়াতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
