ঢাকা বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ - ১০:০৮:০১ এএম

খাদ্য, প্লাস্টিক, স্বাস্থ্যসেবা, স্বপ্নে অর্থবছরের প্রথমার্ধে এসিআইয়ের লোকসান ২৯১ কোটি টাকা

৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ | ৮:০ পিএম

খাদ্য, প্লাস্টিক, স্বাস্থ্যসেবা, স্বপ্নে অর্থবছরের প্রথমার্ধে এসিআইয়ের লোকসান ২৯১ কোটি টাকা

ছবি: সংগ্রহ

২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বর সময়কালে রিটেইল চেইন স্বপ্নসহ খাদ্য, কনজ্যুমার প্লাস্টিক ও স্বাস্থ্যসেবা খাতে এসিআই লিমিটেডের কর-পূর্ব লোকসান আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৫ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৯১.৪২ কোটি টাকা।

 

তবে শিল্পগোষ্ঠীটি ফার্মাসিউটিক্যালস, অ্যানিমেল হেলথ, কনজ্যুমার ব্র্যান্ড, ক্রপ কেয়ার ও জনস্বাস্থ্য, মোটর, খাঁটি ময়দা, লবণ এবং ফ্লেক্সিবল প্যাকেজিং খাত থেকে ৩০৬ কোটি টাকা কর-পূর্ব মুনাফা করেছে। আগের বছর এসব খাত থেকে তাদের মুনাফা ছিল ২৪৬.৪৯ কোটি টাকা।

 

আর্থিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এসব ব্যবসা এসিআই লিমিটেডের ১২টি সহযোগী প্রতিষ্ঠানের অধীনে পরিচালিত হয়। কোম্পানিটি এসব প্রতিষ্ঠানের বেশিরভাগ শেয়ারের মালিক।

 

তা সত্ত্বেও এসিআই ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথমার্ধে ৭০ কোটি টাকার সমন্বিত নিট লোকসান দিয়েছে। এ ক্ষতির প্রধান কারণ নীতি সুদহার বৃদ্ধির ফলে সুদ পরিশোধের খরচ ৪৩ শতাংশ বেড়ে যাওয়া। কোম্পানিটির সমন্বিত শেয়ারপ্রতি লোকসান (এলপিএস) ছিল ৭.৯৯ টাকা।

 

জুলাই-ডিসেম্বর সময়কালে গ্রুপটির মোট আয় ৬ হাজার ৬১৯ কোটি টাকায় পৌঁছেছে, যা আগের বছরের একই সময়ের ৬ হাজার ২৪৪ কোটি টাকার চেয়ে ৬ শতাংশ বেশি।

 

আর্থিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিভিন্ন ব্যবসা খাতের সাফল্যের সুবাদে ২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর শেষ হওয়া অর্থবছরের প্রথমার্ধে গ্রুপটির আয় ৬ শতাংশ বেড়েছে।

 

এই সময়ে ব্যয় নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপের ফলে গ্রস মুনাফা প্রবৃদ্ধি পরিচালন খরচের প্রবৃদ্ধিকে ছাড়িয়ে গেছে, যা পরিচালন মুনাফা বৃদ্ধিতে অবদান রেখেছে।

 

তবে চড়া সুদহারের কারণে ঋণ নেওয়ার খরচ বেড়ে গেছে। এছাড়া ব্যবসা সম্প্রসারণের জন্য বাড়তি কার্যকরী মূলধন ও কৌশলগত বিনিয়োগের কারণেও খরচ বেড়েছে। এগুলোই লোকসান দেওয়ার কারণ বলে উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।

 

ডিসেম্বর পর্যন্ত এসিআইয়ের মোট স্বল্পমেয়াদি ঋণ ৫ হাজার ৬৬৩ কোটি টাকা ও দীর্ঘমেয়াদি ঋণ ছিল ৫৬৪ কোটি টাকা।

 

খাতভিত্তিক পারফরম্যান্স

 

অর্থবছরের প্রথমার্ধে এসিআই লিমিটেডের বিভিন্ন ব্যবসা খাতে মিশ্র আর্থিক পারফরম্যান্স দেখা গেছে।

 

মোটর ব্যবসা সর্বাধিক রাজস্ব অর্জনকারী খাত হিসেবে ১ হাজার ৬৯৯ কোটি টাকা আয় করেছে। এ খাতে প্রবৃদ্ধি ১০ শতাংশ। তবে এই খাতে কর-পূর্ব মুনাফা ১৬ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ১০৯.৮৯ কোটি টাকায়।

 

অঙ্গপ্রতিষ্ঠান এসিআই মোটরস লিমিটেডের মাধ্যমে এসিআই তাদের মোটর ব্যবসা পরিচালনা করে। এ প্রতিষ্ঠানে এসিআই লিমিটেডের মালিকানা ৪৮.১০ শতাংশ। এসিআই মোটরস কৃষি ও অ-কৃষি খাতের জন্য যানবাহন ক্রয়-বিক্রয়, আমদানি ও সংযোজনের কাজে যুক্ত।

 

বাংলাদেশে ইয়ামাহা ব্র্যান্ডের মোটরসাইকেল ও যন্ত্রাংশ বিক্রির জন্য ভারতের ইয়ামাহা মোটর প্রাইভেট লিমিটেডের সঙ্গে কোম্পানিটির বিপণন চুক্তিও রয়েছে।

 

স্বপ্নের আয় ১৭ শতাংশ বেড়েছে। জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে স্বপ্নের আয় ১ হাজার ২৩৪ কোটি টাকা। তবে এই খাতে ১২৬ কোটি টাকার বড় কর-পূর্ব ক্ষতি হয়েছে।

 

ফার্মাসিউটিক্যালস খাতে আয় হয়েছে ৮৭৪ কোটি টাকা, যা আগের বছরের একই সময়ের ৮২১ কোটি টাকার চেয়ে ৬ শতাংশ বেশি। এই খাতে কর-পূর্ব মুনাফা ৫৫ শতাংশ বেড়ে ৮৬.৬৫ কোটি টাকায় পৌঁছেছে।

 

অন্যান্য খাতের মধ্যে অ্যানিমেল হেলথ থেকে ২৭১ কোটি টাকা, কনজ্যুমার ব্র্যান্ড থেকে ৫২৪ কোটি, ক্রপ কেয়ার ও জনস্বাস্থ্য থেকে ২২৭ কোটি, খাঁটি ময়দা থেকে ৩৭০ কোটি, লবণ থেকে ১৪০ কোটি টাকা, খাদ্য থেকে ৪৮৭ কোটি, ফ্লেক্সিবল প্যাকেজিং থেকে ৩২১ কোটি, কনজ্যুমার প্লাস্টিক থেকে ১৫০ কোটি টাকা ও স্বাস্থ্যসেবা থেকে ৮১ কোটি টাকা আয় হয়েছে শিল্পগোষ্ঠীটির।

 

সবচেয়ে বেশি লোকসান দিয়েছে স্বাস্থ্যসেবা খাত। এ খাতে কর-পূর্ব ক্ষতি হয়েছে ১৪৩ কোটি টাকা। এছাড়াও খাদ্য ও কনজ্যুমার প্লাস্টিক খাতেও লোকসান দিয়েছে।

 

২০২৩-২৪ অর্থবছরে কোম্পানিটি ২০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ এবং ১৫ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ দিয়েছে। আগের বছরে কোম্পানিটি ৪০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল।

 

২০২৩-২৪ অর্থবছরে এসিআই ১৬০ কোটি টাকার সমন্বিত লোকসান দিয়েছে।

 

এসিআই লিমিটেড ১৯৭৩ সালের ২৪ জানুয়ারি আইসিআই বাংলাদেশ ম্যানুফ্যাকচারার্স লিমিটেড নামে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং ১৯৭৬ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয়।

খাদ্য, প্লাস্টিক, স্বাস্থ্যসেবা, স্বপ্নে অর্থবছরের প্রথমার্ধে এসিআইয়ের লোকসান ২৯১ কোটি টাকা