ভ্যাট বন্ধু নিউজ প্রতিবেদক
৮ ডিসেম্বর, ২০২৪ | ১০:৪২ এএম
অনলাইন সংস্করণ
খেলাপি ঋণ বৃদ্ধিতে আইএমএফের উদ্বেগ
৮ ডিসেম্বর, ২০২৪ | ১০:৪২ এএম
![খেলাপি ঋণ বৃদ্ধিতে আইএমএফের উদ্বেগ](https://i.vatbondhu.com/images/original-webp/2024/12/08/20241208105738_original_webp.webp)
ছবি: সংগ্রহ
বাংলাদেশের ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণের লাগামহীন বৃদ্ধি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। আইএমএফ প্রতিনিধিদল বাংলাদেশে সফরের সময় এ উদ্বেগ জানায়, তবে খেলাপি ঋণ কমানোর জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক ঘোষিত রোডম্যাপের বাস্তবায়নে সন্তোষ প্রকাশ করেছে দাতা সংস্থাটি। বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও আইএমএফের বৈঠকে মুদ্রানীতি, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, রিজার্ভ পরিস্থিতি, এবং ব্যাংক খাতের বিভিন্ন সংকট নিয়ে আলোচনা হয়।
আইএমএফের ঋণের শর্ত অনুযায়ী, ২০২৬ সালের মধ্যে খেলাপি ঋণ আট শতাংশের নিচে নামিয়ে আনা এবং রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ ১০ শতাংশের নিচে নামানোর লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এরই মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক একটি রোডম্যাপ ঘোষণা করে, যার আওতায় ১৭টি কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করার কথা বলা হয়েছে। এর মধ্যে ১৫টি কর্মপরিকল্পনার সাকুর্লার জারি করা হয়েছে, কিন্তু খেলাপি ঋণ কমেনি, বরং বেড়েই চলেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তিন মাসে খেলাপি ঋণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় সাড়ে ৭৩ হাজার কোটি টাকায়, যা মোট বিতরণকৃত ঋণের প্রায় ১৭ শতাংশ। সরকারি ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক লাখ ২৬ হাজার ১১২ কোটি টাকা, যা বিতরণকৃত ঋণের ৪০ শতাংশেরও বেশি। বেসরকারি ব্যাংকগুলোতে খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে প্রায় এক লাখ ৫০ হাজার কোটি টাকা, যা বিতরণকৃত ঋণের ১১.৮৮ শতাংশ।
আইএমএফের প্রতিনিধিরা বাংলাদেশের ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের দ্রুত বৃদ্ধির বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, তবে রোডম্যাপ বাস্তবায়নে কিছু অগ্রগতি দেখার পর সন্তোষও প্রকাশ করেছেন। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পুরনো ব্যাংকগুলো খেলাপি ঋণ লুকিয়ে রাখলেও বর্তমান সরকারের সংস্কারমূলক পদক্ষেপের পর ব্যাংকগুলো এখন ঋণের প্রকৃত চিত্র প্রকাশ করছে। তবে তারা আশঙ্কা করছেন, ২০২৬ সালের মধ্যে খেলাপি ঋণ আট শতাংশের নিচে নামানো কঠিন হবে।
এদিকে, খেলাপি ঋণ কমানোর জন্য আন্তর্জাতিক মানে খেলাপি ঋণের সংজ্ঞা ২০২৪ সালের এপ্রিল থেকে কার্যকর হবে। নতুন সংজ্ঞা অনুযায়ী, ঋণের কিস্তি পরিশোধের নির্ধারিত সময়সীমার তিন মাস পর থেকেই ঋণ খেলাপি হিসেবে গণ্য হবে। তবে ব্যাংক খাতে জালিয়াতির সব তথ্য এখনও প্রকাশিত হয়নি, বিশেষ করে এস আলম গ্রুপের দখলকৃত ব্যাংকগুলোর অডিট চলছে, যার ফলে ভবিষ্যতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ আরও বাড়তে পারে।
আইএমএফের আরেকটি শর্ত ছিল খেলাপি ঋণ আদায় বাড়াতে এবং ঋণখেলাপিদের সম্পদ জব্দ করে ঋণ আদায় করতে একটি সম্পদ ব্যবস্থাপনা কোম্পানি গঠন করা। এ বিষয়ে নীতিমালা তৈরির কাজ চলছে, যা ভবিষ্যতে খেলাপি ঋণ কমাতে সহায়ক হতে পারে।
অতএব, বাংলাদেশ ব্যাংক খেলাপি ঋণের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করলেও, বর্তমান পরিস্থিতি অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং এবং ভবিষ্যতে আরও বাড়তে পারে এমন আশঙ্কা রয়েছে।
![খেলাপি ঋণ বৃদ্ধিতে আইএমএফের উদ্বেগ](https://i.vatbondhu.com/images/original/2024/04/22/20240422145104_original.png)