ভ্যাট বন্ধু নিউজ প্রতিবেদক
২২ ডিসেম্বর, ২০২৪ | ১০:৪১ এএম
অনলাইন সংস্করণ
গত ৬ মাসে দেশের ১০০ পোশাক কারখানা বন্ধ: বিজিএমইএ
২২ ডিসেম্বর, ২০২৪ | ১০:৪১ এএম
ছবি: সংগ্রহ
দেশের রপ্তানি আয়ের সিংহভাগ আসে তৈরি পোশাক শিল্প থেকে। তবে, এ খাত বর্তমানে নানা সংকটে জর্জরিত। শ্রমিক অসন্তোষ, জ্বালানি সংকট, এবং নীতিগত বৈষম্যের কারণে এই শিল্পের স্থিতিশীলতা হুমকির মুখে পড়েছে।
বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) জানিয়েছে, গত ছয় মাসে ১০০টি পোশাক কারখানা বন্ধ হয়েছে। ৫০ থেকে ৬০ হাজার শ্রমিক বেকার হয়েছে। অন্তত ১৫৮টি কারখানা শ্রমিকদের বেতন দিতে ব্যর্থ। মূল সমস্যা ও কারণ কারখানাগুলোতে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস ও বিদ্যুৎ সরবরাহের অভাব বড় ধরনের বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
মিথিলা অ্যাপারেলসের চেয়ারম্যান আযহার খান বলেন, “এলপি গ্যাস দিয়ে কারখানা চালানো অত্যন্ত ব্যয়বহুল। সরকার নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস ও বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করলে সংকট অনেকাংশে কমে যাবে।” সম্প্রতি ৯ শতাংশ বেতন বৃদ্ধি কার্যকর করা হলেও শ্রমিক অসন্তোষ পুরোপুরি নিরসন হয়নি। বিজিএমইএ পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেলের মতে, “শ্রমিকদের অসন্তোষ ও বেতন-সংক্রান্ত সংকট খাতটিকে আরও বিপর্যস্ত করছে।”
শিল্প মালিকরা অভিযোগ করছেন যে, সংকট সমাধানে সরকার মূলত বড় শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর দিকে নজর দিচ্ছে। ছোট ও মাঝারি উদ্যোক্তারা প্রয়োজনীয় সহায়তা পাচ্ছেন না। বিজিএমইএর এক কর্মকর্তা বলেন, “বড় শিল্প যেমন বেক্সিমকো নজর পাচ্ছে, কিন্তু ছোট কারখানাগুলোর কথা প্রায় উপেক্ষিত।”
ব্যাংক খাতের অস্থিতিশীলতা ব্যাংকিং সেক্টরে ক্রমাগত অনিশ্চয়তা এবং উচ্চ সুদের হার শিল্প খাতের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
শিল্প মালিকরা সংকট সমাধানে সরকারের প্রতি কয়েকটি দাবি উত্থাপন করেছেন নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস ও বিদ্যুৎ সরবরাহ। ছোট ও মাঝারি শিল্প উদ্যোক্তাদের জন্য নীতিগত সহায়তা। ব্যাংক ঋণের সুদের হার হ্রাস এবং সহজ শর্তে ঋণপ্রাপ্তি। শ্রমিক অসন্তোষ সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ। বিজিএমইএর মন্তব্য
বিজিএমইএ’র পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বলেছেন, “ইন্ডাস্ট্রির বর্তমান পরিস্থিতি খুবই খারাপ। শ্রমিক অসন্তোষ, জ্বালানি সংকট, এবং নীতিগত বৈষম্য দূর করতে না পারলে এ খাতের আরও অবনতি হবে। আমরা চাই বড় ও ছোট শিল্পের প্রতি সমান গুরুত্ব দেওয়া হোক।”
তৈরি পোশাক শিল্প দেশের অর্থনীতির মেরুদণ্ড। তবে শ্রমিক অসন্তোষ, জ্বালানি সংকট, এবং নীতিগত বৈষম্য এই খাতকে ক্রমাগত দুর্বল করছে। সংকট নিরসনে সরকার ও সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর যৌথ উদ্যোগ অত্যন্ত জরুরি। অন্যথায়, দেশের রপ্তানি খাতের গুরুত্বপূর্ণ এ শিল্পে দীর্ঘমেয়াদি বিপর্যয়ের সম্ভাবনা রয়েছে।