ঢাকা বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ - ৩:৫১:৩২ পিএম

গ্যাসের দাম দেড়গুণ বাড়ানোর প্রস্তাব পেট্রোবাংলার

৮ জানুয়ারি, ২০২৫ | ১১:১৪ এএম

গ্যাসের দাম দেড়গুণ বাড়ানোর প্রস্তাব পেট্রোবাংলার

ছবি: সংগ্রহ

বাংলাদেশ তেল, গ্যাস ও খনিজসম্পদ করপোরেশন (পেট্রোবাংলা) শিল্পখাতে গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে। প্রস্তাবে প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের দাম বর্তমান ৩০ টাকা ৭৫ পয়সা থেকে দেড়গুণ বাড়িয়ে ৭৫ টাকা ৭২ পয়সা করার সুপারিশ করা হয়েছে। প্রস্তাবটি ৬ জানুয়ারি জ্বালানি বিভাগের অনুমোদন পাওয়ার পর বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) কাছে পাঠানো হয়েছে এবং আগামী ফেব্রুয়ারিতে এই প্রস্তাবের ওপর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

 


বিইআরসির সচিব ব্যারিস্টার মো. খলিলুর রহমান খান নিশ্চিত করেছেন যে, ২০২৫ সালের ২ ফেব্রুয়ারি কমিশনের পরবর্তী সভায় গ্যাসের দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হবে। সেক্ষেত্রে প্রস্তাবটি অনুমোদিত হলে, শিল্পখাতে গ্যাসের দাম একযোগে বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হতে পারে।

 


পেট্রোবাংলার প্রস্তাবে উল্লেখ করা হয়েছে, পুরোনো গ্রাহকদের অনুমোদিত লোডের চেয়ে বেশি ব্যবহৃত গ্যাসের জন্য নতুন দামে বিল দিতে হবে। গত ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে ২০২৪ সালের অক্টোবর পর্যন্ত হিসাব অনুযায়ী, শিল্প খাতে অনুমোদিত লোডের চেয়ে ১৪ কোটি ৭৮ লাখ ঘনমিটার গ্যাস এবং ক্যাপটিভ বিদ্যুৎ উৎপাদনে ৫ কোটি ৭৬ লাখ ঘনমিটার গ্যাস বেশি ব্যবহার করা হয়েছে।

 

 

পেট্রোবাংলা দাবি করেছে, বর্তমানে গ্যাস উৎপাদনে প্রতিটি ইউনিটে গড়ে ৬ টাকা ৭ পয়সা খরচ হলেও, এলএনজি আমদানিতে প্রতি ইউনিটের খরচ দাঁড়াচ্ছে ৭৫ টাকার বেশি। এই কারণে পেট্রোবাংলা আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। চলতি অর্থবছরে (২০২৪-২৫) এলএনজি আমদানিতে ১৬ হাজার ১৬২ কোটি টাকার ঘাটতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। নতুন প্রস্তাবে এলএনজির আমদানির পুরো ব্যয় শিল্পখাতের ওপর চাপানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে, যা এর আগে কখনো হয়নি।

 


২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে সরকার নির্বাহী আদেশে গ্যাসের দাম গড়ে ৮২ শতাংশ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়। তখন শিল্পখাতে গ্যাসের দাম ১১ টাকা ৯৮ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৩০ টাকা এবং ক্যাপটিভ বিদ্যুতে ১৬ টাকা থেকে ৩০ টাকা করা হয়েছিল। এরপর ২০২৩ সালের ২৮ আগস্ট সরকারের একটি প্রজ্ঞাপনে বিইআরসির নির্বাহী ক্ষমতা বাতিল করা হয়, যার মাধ্যমে গ্যাস ও বিদ্যুৎ দরের পরিবর্তন গণশুনানি ছাড়াই সম্ভব হয়।

 


যদি প্রস্তাবটি অনুমোদিত হয়, তবে শিল্প খাতে গ্যাসের দাম বৃদ্ধির ফলে উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি পাবে, যা স্থানীয় শিল্পের প্রতিযোগিতা সক্ষমতায় ব্যাপক প্রভাব ফেলতে পারে। ব্যবসায়ীরা শঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে, এতে উৎপাদন খরচ বাড়বে এবং আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতা হারানোর ঝুঁকি তৈরি হবে। বিশেষ করে, গ্যাসের দাম বৃদ্ধির ফলে বিদ্যুৎ ও অন্যান্য মৌলিক শিল্পের খরচও বৃদ্ধি পাবে, যা বাজারে পণ্যের দাম বাড়ানোর কারণ হতে পারে।

 


গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রস্তাবটি অনুমোদিত হলে তা শিল্পখাতে আরও চাপ সৃষ্টি করতে পারে এবং দেশের অর্থনীতিতে তার দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব পড়বে। এর মধ্যে ব্যবসায়ীদের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা এবং উৎপাদন খরচের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে, যা পুরো অর্থনৈতিক পরিবেশের জন্য উদ্বেগজনক হতে পারে।

গ্যাসের দাম দেড়গুণ বাড়ানোর প্রস্তাব পেট্রোবাংলার