ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২০ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ - ৯:১৩:২৬ পিএম

গ্যাস উত্তোলনে জোর সরকারের, একনেকে উঠছে তিন প্রকল্প

২২ ডিসেম্বর, ২০২৪ | ৯:৪১ এএম

গ্যাস উত্তোলনে জোর সরকারের, একনেকে উঠছে তিন প্রকল্প

ছবি: সংগ্রহ

বর্তমান অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলায় অন্তর্বর্তী নতুন সরকার দেশীয় গ্যাস উত্তোলনে অগ্রাধিকার দিচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে টানা বিদ্যুৎ সরবরাহে ঘাটতি এবং দেশের শিল্প-কারখানার গ্যাসের ক্রমবর্ধমান চাহিদার কারণে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আবাসিক খাত ছাড়াও বিদ্যুৎ উৎপাদন, সার কারখানা এবং শিল্প খাতে গ্যাসের চাহিদা ব্যাপকভাবে বেড়েছে।

 

পরিকল্পনা কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, আমদানিনির্ভরতা কমাতে সরকার তিনটি নতুন প্রকল্প হাতে নিয়েছে, যা আজ সোমবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হবে।

 

একনেকে তোলা প্রকল্পসমূহ ভোলা নর্থ গ্যাসক্ষেত্রের জন্য প্রসেস প্লান্ট স্থাপন ব্যয় ২৩৮ কোটি টাকা। বাস্তবায়ন ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৬ সালের ডিসেম্বর।দায়িত্বপ্রাপ্ত বাপেক্স। রশিদপুর-১১ নম্বর অনুসন্ধান কূপ খনন প্রকল্প ব্যয় ২৭১ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। বাস্তবায়ন ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে। দায়িত্বপ্রাপ্ত সিলেট গ্যাস ফিল্ডস লিমিটেড। টু-ডি সিসমিক সার্ভে প্রকল্প ব্যয় ৩০০ কোটি ৩৯ লাখ টাকা।
মেয়াদ ২০২৪ সালের অক্টোবর থেকে ২০২৭ সালের জুন।


দেশীয় গ্যাস উত্তোলনে গুরুত্ব সরকার জানিয়েছে, ২০২৫ সালের মধ্যে ৩৫টি এবং ২০২৮ সালের মধ্যে ১০০টি নতুন গ্যাসকূপ খননের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ১৫টি কূপ খনন করে প্রতিদিন ১৭৬ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন করা সম্ভব হয়েছে। তবে পাইপলাইনের অভাবে এর মধ্যে ৭৬ মিলিয়ন ঘনফুট জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা হয়েছে।

 

জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, আমদানির বিপুল খরচের পরিবর্তে দেশীয় গ্যাস উৎপাদনে বিনিয়োগ করলে স্বল্প সময়েই আমদানিনির্ভরতা কমানো সম্ভব।


গত ছয় অর্থবছরে এলএনজি আমদানিতে সরকারের খরচ দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৬৪ হাজার ২৭৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে করোনার পর এলএনজির ব্যয় তিন গুণ বেড়ে দাঁড়ায় ৪০ হাজার কোটি টাকায়। ব্যয়বহুল এই এলএনজি আমদানির কারণে গ্যাসের দাম সাধারণ মানুষের জন্য বহনযোগ্য হয়ে ওঠেনি।

 

বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, এলএনজি আমদানির জন্য ব্যবহৃত অর্থ দেশীয় গ্যাস উৎপাদনে বিনিয়োগ করলে স্বল্প খরচে দীর্ঘমেয়াদি সমাধান পাওয়া সম্ভব।


দেশীয় গ্যাস উৎপাদন বাড়ানোর পাশাপাশি শিল্পের নিজস্ব বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যবস্থায় দক্ষ জেনারেটর ব্যবহার করলে বছরে ৪৬ কোটি ডলার পর্যন্ত এলএনজি আমদানি খরচ সাশ্রয় সম্ভব বলে জানায় ইনস্টিটিউট ফর এনার্জি ইকোনমিকস অ্যান্ড ফিন্যানশিয়াল অ্যানালাইসিস (আইইএফএ)।


গ্যাস উত্তোলনে সরকারের উদ্যোগ যথাযথভাবে বাস্তবায়িত হলে আমদানিনির্ভরতা কমে যাবে, পাশাপাশি শিল্পখাতে জ্বালানি সংকট নিরসনে ভূমিকা রাখবে। তবে দীর্ঘমেয়াদে টেকসই সমাধানের জন্য পাইপলাইন অবকাঠামো এবং আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার নিশ্চিত করা জরুরি।

গ্যাস উত্তোলনে জোর সরকারের, একনেকে উঠছে তিন প্রকল্প