ঢাকা বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ - ৪:৪৩:০১ পিএম

গ্রিডে গ্যাসের চাপ কমছে, আবাসিকে গ্রাহকের ভোগান্তি

১৪ ডিসেম্বর, ২০২৪ | ১০:২ এএম

গ্রিডে গ্যাসের চাপ কমছে, আবাসিকে গ্রাহকের ভোগান্তি

ছবি: সংগ্রহ

রক্ষণাবেক্ষণে নেয়া হয়েছে দেশের দুই বড় গ্যাস ক্ষেত্র বিবিয়ানা ও তিতাস। আগামী চারদিন গ্যাস ক্ষেত্র দুটির সংস্কারকাজ চলবে বলে পেট্রোবাংলা ও তিতাস সূত্রে জানা গেছে। এ কারণে এ সময় জাতীয় গ্রিডে গ্যাসের চাপ কিছুটা কমে যেতে পারে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।


এরই মধ্যে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সংশ্লিষ্ট গ্যাস বিতরণ কোম্পানিগুলোর আওতাধীন আবাসিক সংযোগগুলোয় গ্যাসের সরবরাহ কমেছে বলে জানা গেছে। লাইনে গ্যাসের চাপ কমায় রান্নাবান্নাসহ গৃহস্থালি কার্যক্রমে ভোগান্তিতে পড়েছেন গ্রাহকরা।


বিবিয়ানা ও তিতাস গ্যাস ক্ষেত্র এলাকায় এরই মধ্যে রক্ষণাবেক্ষণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে বলে বিতরণ কোম্পানি তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (টিজিটিডিসিএল) পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে। সংস্থাটির পক্ষ থেকে এ নিয়ে গতকাল একটি বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ করা হয়েছে।

 

তিতাসের ব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) মো. আল আমিন স্বাক্ষরিত ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গ্যাস ক্ষেত্রে রক্ষণাবেক্ষণ শুরু হওয়ায় তিতাস অধিভুক্ত এলাকায় বেশ কয়েকদিন গ্যাসের স্বল্প চাপ থাকবে। সাময়িক এ সমস্যার কারণে গ্রাহকদের কাছে দুঃখ প্রকাশও করেছে বিতরণ কোম্পানিটি।

 

তবে ঠিক কতদিন গ্যাস সরবরাহে এ স্বল্প চাপ থাকবে সে বিষয়টি বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়নি।

 

বিতরণ কোম্পানিটির কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিবিয়ানা ও তিতাস গ্যাস ক্ষেত্র রক্ষণাবেক্ষণে থাকবে ১৩ থেকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত। বেশ কয়েকটি কূপের সংস্কারকাজ চলবে এ সময়। তবে গ্রিডে বড় আকারে গ্যাসের সরবরাহ কমবে না।

 

বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে বিতরণকারী তিতাস গ্যাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহনেওয়াজ পারভেজ বলেন, ‘বিবিয়ানা ও তিতাস গ্যাস ফিল্ডে আজ (গতকাল) থেকে রক্ষণাবেক্ষণ শুরু হয়েছে। ১৩ থেকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত এ রক্ষণাবেক্ষণ কাজ চলবে। তবে এতে জাতীয় গ্রিডে বড় আকারে গ্যাস সরবরাহ কমে যাওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। শুধু আবাসিকের গ্রাহকরা কিছুটা গ্যাসের স্বল্প চাপ পাবেন।’

 

দেশের জাতীয় গ্রিডে গ্যাসের সবচেয়ে বেশি সরবরাহ আসে তিতাস ও বিবিয়ানা থেকে। প্রতিদিন জাতীয় গ্রিডে স্থানীয় গ্যাস ক্ষেত্রগুলো থেকে উত্তোলিত গ্যাস যুক্ত হচ্ছে গড়ে ১ হাজার ৯২০ মিলিয়ন ঘনফুট। এর মধ্যে দুটি গ্যাস ক্ষেত্রের দৈনিক সরবরাহ ১ হাজার ৩৩০ থেকে ১ হাজার ৩৪০ মিলিয়ন ঘনফুট, যা স্থানীয় পর্যায়ের মোট সরবরাহের প্রায় ৭০ শতাংশ।

 

পেট্রোবাংলার দৈনিক গ্যাস উৎপাদন প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, ১১ ডিসেম্বর জাতীয় গ্রিডে তিতাস গ্যাস ক্ষেত্র থেকে সরবরাহ দেয়া হয় ৩৫১ মিলিয়ন ঘনফুট। আর বিবিয়ানা গ্যাস ক্ষেত্র থেকে সরবরাহ দেয়া হয় ৯৮৫ মিলিয়ন ঘনফুট।

 

গ্যাস ক্ষেত্র দুটি রক্ষণাবেক্ষণে থাকার কারণে কয়েকদিন গ্যাসের সরবরাহ কিছুটা কমে যেতে পারে। তবে বৃহৎ আকারে গ্যাস সরবরাহ কমবে না। আবাসিকে কিছুটা প্রভাব পড়তে পারে।

 

বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে পেট্রোবাংলার শীর্ষ এক কর্মকর্তা নাম অপ্রকাশিত রাখার শর্তে বলেন, ‘বৃহৎ গ্যাস ফিল্ড দুটিতে সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণ শুরু হয়েছে। সব মিলিয়ে চারদিন এ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। বেশ কয়েকটি কূপে সংস্কারকাজ চালানো হবে। এ সময় জাতীয় গ্রিডে কিছুটা গ্যাস সংকট থাকবে। বিশেষ করে আবাসিকে গ্যাস সংকট বাড়তে পারে।’

 

এদিকে এরই মধ্যে গ্যাসের সংকট বাড়তে শুরু করেছে বলে জানিয়েছেন রাজধানীর মিরপুর, মোহাম্মদপুর, বনশ্রী, শ্যামলী, সাভার, আশুলিয়া ও নারায়ণগঞ্জের আবাসিক পর্যায়ের গ্রাহকরা। তাদের অনেকেই জানিয়েছেন, গতকাল সকাল থেকেই চুলায় গ্যাসের চাপ খুবই কম। নিবুনিবু করে জ্বললেও বেশ কিছুক্ষণ পর চুলা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।

 

মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট এলাকার বাসিন্দা মো. ইকবাল বলেন, ‘সকাল থেকেই গ্যাসের চুলা বন্ধ। রান্নার কাজ কোনোভাবেই করা যায়নি। হঠাৎ করে গ্যাসের সরবরাহ কমে যাওয়ায় সকালে রান্নার কোনো কাজ করা যায়নি। এতে আমার পরিবারকে বেশ ভালো ভোগান্তিতেই পড়তে হয়েছে।’

 

একই অভিযোগ মিরপুর-২ এলাকার গ্যাসের আবাসিক গ্রাহক সানাউল হকের। তিনি বলেন, ‘প্রতিদিনই সকালে গ্যাসের চুলা খুব ধীরে জ্বলে। এর মধ্যে হঠাৎ করে আজ (কাল) সকাল থেকে গ্যাস পাইনি। সকাল ৬টা থেকে বেলা ১১ পর্যন্ত এ ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। তবে দুপুরের পর পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি দেখা যায়।’

গ্রিডে গ্যাসের চাপ কমছে, আবাসিকে গ্রাহকের ভোগান্তি