ঢাকা বুধবার, ২ জুলাই, ২০২৫ - ৭:১৪:১৬ এএম

ঘুরে দাঁড়াচ্ছে ফিলিস্তিনি জেলেরা

২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ | ১২:১০ পিএম

ঘুরে দাঁড়াচ্ছে ফিলিস্তিনি জেলেরা

ছবি: সংগ্রহ

মো সোহাগ : ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার সাগর উপকূলে জড় হয়েছে স্থানীয় জেলেরা। আশা করছেন ধরতে পারবেন পরিবারের মুখে খাবার তুলে দেয়ার মত কিছু মাছ। গত ১৫ মাস ধরে চলা যুদ্ধের কারণে তাদের বেশিরভাগ হারিয়েছে টাকা পয়সা রোজগারের সব উৎস। এমনকি ইসরাইলি হামলায় ধ্বংস হয়ে গেছে অনেকের একমাত্র সহায় মাছ ধরার নৌকা।

 

গাঁজার এক জেলে বলেন, আমার সব টাকা-পয়সা সহায় সম্পদ সবকিছুই শেষ। পানিতে জালের কাছে যে লোহা টুকরো পড়ে আছে সেটাই আমার মাছ ধরার নৌকা। ৫১ ফুট বড় একটি নৌকা ছিল আমার আর ছিল দশটি ছোট নৌকা। এখন আর কোন নৌকাই অবশিষ্ট নেই সবই ধ্বংস হয়ে গেছে শুধু আমি নই সবারই এরকম হয়েছে। বন্দরের দিকে দেখুন আগে নৌকার কারণে পোটই দেখা যেত না এখন সেখানে পাতি লোহা লক্কর ছাড়া আর কিছুই নেই।

যুদ্ধের আগে গাঁজা উপত্যকার অর্থনীতির একটি বড় অংশ আসত সাগর থেকে। মাছ ধরা ছিল এখানকার দৈনন্দিন জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। বাজারে মাছ বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করতো অনেক মানুষ। এই মাছই ছিল স্থানীয় জনগণের খাবারের অন্যতম উৎস।


ওই জেলে আরো বলেন, ছোট নৌকা থেকে বড় পরিবারের খাবার উঠেনা আমরা একা জীবন নির্ভর করি না এর সাথে জড়িত অনেক ব্যবসায়ীরাও সমুদ্রের কারণে টিকে থাকতো। গাজার অর্থনীতির এক তৃতীয়াংশ আসতো সাগর থেকে। ব্যবসায়ীরা মাছ কিনে পশ্চিম তীরে নিয়ে যেত সেখান থেকে যেত ইসরাইলে। আল্লাহর কাছে শুকরিয়া সে সময় এটি ছিল আমাদের আয়ের একটি ভালো উৎস কিন্তু এখন আর কিছুই নেই টাকা পয়সাও নেই।

 

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইজরাইলি হামলা চালায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামি গোষ্ঠী। পাল্টা জবাবে গাজায় আক্রমণ শুরু করে ইসরাইল। তখন থেকেই গাজার জলসীমায় ইসরাইলি বিধিনিষেধ কঠিন করে তোলে জেলেদের জীবন। মাছ ধরার জন্য বন্দরের কাছে গেলেই তাদের উপর গুলি চালায় ইসরাইলের সাময়িক বাহিনী।


আরো এক জেলে বলেন, বেঁচে থাকার জন্য আমরা মাত্র ৩-৪ কেজি মাছ ধরার ঝুঁকি নিই। আমার সব সহায় সম্বল শেষ হয়ে গেছে ধ্বংস হয়ে গেছে প্রায় চার লাখ টাকার নৌকা। যুদ্ধে আমি সব হারিয়েছি কিন্তু আমার আর কোন উপায় নেই। ৪০ জন লোকের জীবিকা চালানোর জন্য তাদের ভরণপোষণের খরচ জোগাতে একটি ছোট নৌকা তৈরি করেছি। সাগরে নামলে ইসরাইলি নৌকাগুলো আমাদের উপর গুলি চালায় আমরা পালিয়ে আসি। নিজের মাছ ধরার জাল ছিরে ফেলেছি এছাড়া আর কিছুই করার নেই।

 

নতুন নৌকা তৈরি সরঞ্জাম না থাকায় ভাঙা ভোট মেরামতের চেষ্টা করছেন গাজার জেলেরা কেউ আবার বানিয়েছেন মাছ ধরার খাঁচা। সম্প্রীতি যুদ্ধবিরতি চুক্তি হলেও এর মাঝে বেশ কিছু ফিলিস্তিনি মারা গেছে ইসরায়েলী বাহিনীর গুলিতে। যুদ্ধ পরবর্তী পরিস্থিতিতে অন্যান্য গাজা বাসীর মত সাগর নির্ভর জেলেদের লোড়তে হচ্ছে নতুন আরেক লড়াই।

ঘুরে দাঁড়াচ্ছে ফিলিস্তিনি জেলেরা