ভ্যাট বন্ধু নিউজ প্রতিবেদক
১ আগস্ট, ২০২৪ | ৯:২২ এএম
অনলাইন সংস্করণ
এ সম্পর্কিত আরো খবর
ঘোষিত ৮ বিলিয়ন ডলারের বিদেশী বিনিয়োগ পাওয়া নিয়ে শঙ্কা
১ আগস্ট, ২০২৪ | ৯:২২ এএম
![ঘোষিত ৮ বিলিয়ন ডলারের বিদেশী বিনিয়োগ পাওয়া নিয়ে শঙ্কা](https://i.vatbondhu.com/images/original-webp/2024/08/01/20240801092133_original_webp.webp)
বিদেশী অপারেটরদের হাতে ব্যবস্থাপনার ভার তুলে দিয়ে শতভাগ সরকারি ব্যবস্থাপনা থেকে ক্রমেই সরে আসছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনালকে (পিসিটি) সৌদি আরবভিত্তিক প্রতিষ্ঠান রেড সি গেটওয়ের নিয়ন্ত্রণে দেয়ার মাধ্যমে শুরু হয় এ যাত্রা। বন্দরের উন্নয়নে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারসহ সেবার মান বাড়াতে টার্মিনাল নির্মাণ ও পরিচালনা-সংক্রান্ত চুক্তির কাজ চলছে আরো বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক অপারেটরের সঙ্গে।
বে টার্মিনাল প্রকল্পে একটি মাল্টিপারপাস টার্মিনাল নির্মাণে সম্প্রতি আবুধাবি পোর্টস গ্রুপের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। আরো দুটি টার্মিনাল নির্মাণে পিএসএ সিঙ্গাপুর ও ডিপি ওয়ার্ল্ডের সঙ্গেও বোঝাপড়া হয়েছে। তবে বর্তমান অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে বিদেশী বিনিয়োগকারীদের এসব সিদ্ধান্ত পরিবর্তন হতে পারে বলে শঙ্কায় রয়েছেন দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দরের নীতিনির্ধারকরা। বিশেষত বাংলাদেশ নিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নানা নেতিবাচক আলোচনা ও সমালোচনাই এর কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন সংশ্লিষ্টরা।
চট্টগ্রাম বন্দরের অভ্যন্তরীণ একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বর্তমানে এ বন্দরে প্রতি বছর আমদানি-রফতানি পণ্যের কনটেইনার হ্যান্ডলিং হচ্ছে ৩ মিলিয়ন বা ৩০ লাখ একক। আগামী সাত বছরের মধ্যে এ সক্ষমতা এক কোটি একক ও ২০৪১ সালের মধ্যে দেড় কোটি একক করতে চায় কর্তৃপক্ষ।
এ সক্ষমতা তৈরি করা হবে ৮ বিলিয়ন ডলারের বিদেশী বিনিয়োগ নিয়ে। যার উল্লেখযোগ্য অংশই আসবে বে টার্মিনালের চারটি টার্মিনাল ও বন্দরের জাহাজ চলাচলের পথ ও স্রোত প্রতিরোধক নির্মাণে। এ টার্মিনোলের জন্য মাস্টারপ্ল্যান, ডিটেইল ড্রইং ডিজাইন এবং ফিজিবিলিটি স্টাডি সম্পন্ন হয়েছে।
ওয়ার্ল্ড ব্যাংক এরই মধ্যে ৬৫০ মিলিয়ন ডলারের সহায়তা অনুমোদন করেছে। এর মধ্যে দুটি টার্মিনাল নির্মাণ ও পরিচালনা-সংক্রান্ত চুক্তির কাজ চলছে সিঙ্গাপুরের পিএসএ ইন্টারন্যাশনাল এবং সংযুক্ত আরব আমিরতের ডিপি ওয়ার্ল্ডের সঙ্গে। এজন্য প্রতিষ্ঠান দুটি ১৫০ কোটি ডলার করে ৩০০ কোটি ডলার বিনিয়োগের প্রস্তাব দিয়েছে।
একই প্রকল্পে মাল্টিপারপাস টার্মিনাল নির্মাণে ১০০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করবে আবুধাবি পোর্টস গ্রুপ। দেড় হাজার মিটার লম্বা মাল্টিপারপাস টার্মিনাল নির্মাণে একটি সমঝোতা স্মারকও সই হয়েছে।
আবুধাবি পোর্টসের স্থানীয় অংশীদার সাইফ পাওয়ারটেক। তবে এ প্রকল্পের আওতায় বিদেশী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যৌথভাবে গ্যাস ও তেল খালাসের টার্মিনালে ৩৫০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করতে আগ্রহ দেখিয়েছে ইস্ট কোস্ট গ্রুপ। এছাড়া প্রস্তাবিত লালদিয়ার চরে নতুন টার্মিনাল নির্মাণ ও পরিচালনায় বিশ্বের দ্বিতীয় শীর্ষ শিপিং কোম্পানি ডেনমার্কের এপি-মুলার মায়েরসক বিনিয়োগ প্রস্তাব দিয়েছে চট্টগ্রাম বন্দরকে, যা পিপিপির আওতায় রাখা হয়েছে।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েল বলেন, ‘আমাদের স্টাডি রয়েছে স্বাভাবিক অবস্থায় প্রতি বছর কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ের প্রবৃদ্ধি গড়ে ১২ শতাংশ হারে হচ্ছে।
সে হিসাবে ২০৪১ সালের মধ্যে প্রায় ১ কোটি ৬০ লাখ একক কনটেইনার হ্যান্ডলিং করার সক্ষমতা থাকতে হবে এ বন্দরের। শুধু দেশের অভ্যন্তরীণই নয়, পাশাপাশি ভারতের সেভেন সিস্টার্স, নেপাল, ভুটানের কার্গোর জন্যও আমাদের বন্দর ব্যবহার হবে। চট্টগ্রাম বন্দরকে হাব পোর্ট হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা হবে। ফলে এখানে অর্থ ও দক্ষতার বিশাল সংশ্লিষ্টতা থাকার কারণেই আমাদের বিদেশী বিনিয়োগ আনতে হচ্ছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘এখন দেশের চলমান ঘটনা বা তাণ্ডবে দেশের ভাবমূর্তির একটা বড় ক্ষতি হয়ে গেছে। এর প্রভাব চট্টগ্রাম বন্দরের ওপরও সরাসরি পড়েছে। বিনিয়োগের জন্য আলোচনা বেশ জোরালোভাবে চালিয়ে কিছু প্রকল্পে আমরা অনেক দূর এগিয়েছি।
এখন আমাদের মধ্যে বড় চিন্তার বিষয় বিদেশী বিনিয়োগকারী নিয়ে, তারা আসলে কতটুকু স্বস্তিবোধ করছেন। বিদেশী বিনিয়োগকারীদের কাছে সবার আগে বিবেচ্য স্থিতিশীল পরিস্থিতি। আমাদের দেখতে হবে পরবর্তী পদক্ষেপে তাদের রেসপন্সটা কেমন পাচ্ছি। এ নিয়ে আমাদের মধ্যে অবশ্যই শঙ্কা জেগেছে।’
![ঘোষিত ৮ বিলিয়ন ডলারের বিদেশী বিনিয়োগ পাওয়া নিয়ে শঙ্কা](https://i.vatbondhu.com/images/original/2024/04/22/20240422145104_original.png)