ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ - ৭:২১:৪৭ এএম

চার অর্থবছরে লাগেজে স্বর্ণ এসেছে ১০৪ টন

১৪ ডিসেম্বর, ২০২৪ | ১০:৪৩ এএম

চার অর্থবছরে লাগেজে স্বর্ণ এসেছে ১০৪ টন

ছবি: সংগ্রহ

দেশে গত চার অর্থবছরে (২০২০-২১ থেকে ২০২৩-২৪) ১০৪ টনের বেশি স্বর্ণ বৈধভাবে বিদেশ থেকে আনা হয়েছে। এই পরিমাণ স্বর্ণ বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের (বাংলাদেশ ব্যাংক) স্বর্ণ রিজার্ভের সাত গুণেরও বেশি। তবে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ধারণা, এ বিপুল পরিমাণ স্বর্ণের অন্তত ৯০ শতাংশ ভারতে পাচার হয়ে যাচ্ছে।

 

ব্যাগেজ রুলস ও পাচার চক্র: ব্যাগেজ রুলসের আওতায়, একজন যাত্রী সর্বোচ্চ ১১৭ গ্রাম পর্যন্ত স্বর্ণ আনতে পারেন, শুল্ক-কর পরিশোধের পর। কিন্তু সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এই স্বর্ণের অধিকাংশই গহনা শিল্পে ব্যবহার হচ্ছে না, বরং পাচারের উদ্দেশ্যে সীমান্তের দিকে চলে যাচ্ছে। গত চার বছরে ৮ লাখ ৯০ হাজারেরও বেশি চালান দিয়ে স্বর্ণ দেশে এসেছে।

 

পাচারের নেটওয়ার্ক: ব্যবসায়ী ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযোগ, কিছু চক্র এভাবে স্বর্ণ আনা-নেয়া করছে। এসব চক্র প্রবাসীদেরও ব্যবহার করে এবং বিমানবন্দরের খালাস হওয়া স্বর্ণ সীমান্তে পাচার করে। শাহ আমানত ও হযরত শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে নিয়মিতভাবে স্বর্ণ পাচার হয়ে যাচ্ছে। প্রধান পাচারের রুট হিসেবে রিয়াজউদ্দিন বাজারকে উল্লেখ করা হয়েছে, যেখানে অবৈধ স্বর্ণ গুদামজাত করা হয়।

 

সীমান্তে আটক স্বর্ণ: চুয়াডাঙ্গা সীমান্তে চলতি বছর ৪১ কেজি ৫৭২ গ্রাম স্বর্ণ আটক হয়েছে, যার মূল্য প্রায় ৪০ কোটি টাকা। এছাড়া, বিভিন্ন সীমান্তে বিজিবি নিয়মিতভাবে স্বর্ণ পাচারের চালান আটক করছে, যদিও পাচার কম হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।

 

বাজুসের উদ্বেগ: বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস) জানিয়েছে, ব্যাগেজ রুলসের আওতায় আনা স্বর্ণের সঠিক ব্যবহার চিহ্নিত করা কঠিন। তারা বলছে, যদি এ স্বর্ণ স্থানীয় গহনা শিল্পে ব্যবহৃত হতো, তবে স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা স্বাচ্ছন্দ্যে এটি গ্রহণ করতেন।

 

আইনগত ব্যবস্থা: বাংলাদেশ পুলিশ ও সীমান্ত রক্ষী বাহিনী স্বর্ণ পাচারকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের ঘোষণা দিয়েছে। বর্তমানে ৬৩১টি স্বর্ণ পাচার মামলার তদন্ত চলছে এবং ২১টি মানি লন্ডারিং মামলা তদন্তাধীন রয়েছে।

এই পরিস্থিতি বাংলাদেশের স্বর্ণ শিল্প, অর্থনীতি এবং আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

চার অর্থবছরে লাগেজে স্বর্ণ এসেছে ১০৪ টন