ঢাকা বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ - ১১:০৪:৫৭ এএম

ভ্যাট বন্ধু নিউজ প্রতিবেদক

৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ | ৯:৪১ এএম

অনলাইন সংস্করণ

চার বিভাগকে প্রদেশ করার প্রস্তাব

৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ | ৯:৪১ এএম

চার বিভাগকে প্রদেশ করার প্রস্তাব

ছবি: সংগ্রহ

জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন দেশে প্রাদেশিক শাসন ব্যবস্থা চালুর সুপারিশ করেছে, যার মাধ্যমে দেশের বিশাল জনসংখ্যা এবং পরিষেবার ব্যবস্থাকে বিকেন্দ্রীকরণের লক্ষ্যে চারটি প্রদেশে বিভক্ত করা হবে। এছাড়া, রাজধানী ঢাকা মহানগরের জনসংখ্যা ও পরিষেবার বিস্তার বিবেচনায়, একটি ফেডারেল সরকারের মতো ‘রাজধানী মহানগর সরকার’ প্রতিষ্ঠার সুপারিশও করা হয়েছে।

 

 

কমিশনের প্রতিবেদন বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে জমা দেন কমিশনের প্রধান আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী। প্রতিবেদনটি বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনসহ একই দিন হস্তান্তর করা হয়।

 


জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন তার প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে যে, দেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধি এবং সরকারের কার্যক্রম সম্প্রসারণের কারণে বর্তমান প্রশাসনিক কাঠামো যথেষ্ট কার্যকরী নয়। এ কারণে প্রাদেশিক শাসন ব্যবস্থা চালু করলে এককেন্দ্রিক সরকারের ক্ষমতা কমবে এবং রাজধানী ঢাকা নগরীর ওপর চাপও কমবে।

 

 

কমিশন ঢাকা মহানগরী, টঙ্গী, কেরানীগঞ্জ, সাভার ও নারায়ণগঞ্জকে নিয়ে ‘রাজধানী মহানগর সরকার’ গঠনের প্রস্তাব দিয়েছে। এতে স্থানীয় সরকারের কার্যক্রম আরও শক্তিশালী হবে এবং ঢাকা মহানগরের স্বায়ত্তশাসন নিশ্চিত হবে।

 

 


প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জেলা পরিষদগুলোর কার্যকারিতা এখন সীমিত এবং অধিকাংশ জেলা পরিষদ আর্থিকভাবে স্বনির্ভর নয়। তাই, এসব পরিষদ বাতিল করে প্রাদেশিক সরকারের অধীনে স্থানান্তরিত করা যেতে পারে।

 


উপজেলা পরিষদকে শক্তিশালী করার প্রস্তাব করা হয়েছে। কমিশন সুপারিশ করেছে যে, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান পদ বাতিল করা হতে পারে এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রাখা হবে। ইউনিয়ন পরিষদে নারীদের ৫০ শতাংশ প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার জন্য সুনির্দিষ্ট ব্যবস্থা নেওয়ারও সুপারিশ করা হয়েছে।

 

 


কুমিল্লা এবং ফরিদপুরকে পৃথক প্রশাসনিক বিভাগ হিসেবে প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব করা হয়েছে। এটির মাধ্যমে স্থানীয় জনগণের কার্যকরী শাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত হবে এবং প্রশাসনিক কাঠামো আরও সহজ হবে।

 

 


কমিশন দেশের ডিগ্রি কলেজগুলোকে সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্তির প্রস্তাব দিয়েছে, যাতে শিক্ষার মান উন্নত করা যায়। এছাড়া, শিক্ষার্থীদের জন্য মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করার জন্য এই ব্যবস্থা প্রণয়ন করা হবে।

 

 


কমিশন নাগরিক সেবার ক্ষেত্রে পুলিশ ভেরিফিকেশন ব্যবস্থা বাতিল করার জন্য সুপারিশ করেছে। এতে নাগরিকদের পরিচয়পত্র ও সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র যাচাই করেই বিভিন্ন সেবা প্রদান করা যাব

 

 

ভূমি ব্যবস্থাপনা কার্যকর করতে উপজেলা পর্যায়ে ভূমি ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তার পদ সৃষ্টির প্রস্তাব করা হয়েছে। এছাড়া, সাব-রেজিস্ট্রি অফিসকে ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধীনে আনা হবে।

 

 


কমিশন উপজেলা পর্যায়ে দেওয়ানি ও ফৌজদারি ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট পুনঃস্থাপন করার সুপারিশ করেছে, যাতে সাধারণ নাগরিকরা সহজে বিচার পেতে পারে। ইমিগ্রেশন অফিসার নিয়োগ: বিমানবন্দর ইমিগ্রেশনে পুলিশ কর্মকর্তাদের বদলে আলাদা ইমিগ্রেশন অফিসার নিয়োগের সুপারিশ করা হয়েছে।

 

 

উপজেলা জননিরাপত্তা কর্মকর্তা পদ: থানার ‘অফিসার ইনচার্জ’ এর কাজ এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য উপজেলা পর্যায়ে ‘উপজেলা জননিরাপত্তা কর্মকর্তা’ পদ সৃষ্টি করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। কমিশনের প্রস্তাবগুলো নিয়ে জনগণের মতামত সংগ্রহের পর সরকার তা বাস্তবায়নে পদক্ষেপ গ্রহণ করবে বলে আশা করা যাচ্ছে।

চার বিভাগকে প্রদেশ করার প্রস্তাব