ঢাকা বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ - ৯:২৫:৩৬ পিএম

ঝুঁকি নিয়ে খুলেছে গাজীপুরের অধিকাংশ পোশাক কারখানা

৮ আগস্ট, ২০২৪ | ৮:৪৫ এএম

ঝুঁকি নিয়ে খুলেছে গাজীপুরের অধিকাংশ পোশাক কারখানা

ছবি: সংগ্রহ

নিজস্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থায় অনেকটা ঝুঁকি নিয়েই গতকাল গাজীপুরের অধিকাংশ পোশাক কারখানা খুলেছে। শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলন ও শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগের কারণে বেশ কয়েক দিন বন্ধ থাকার পর বিজিএমইএ এবং সরকারি নির্দেশনায় এসব কারখানা চালু করা হয়েছে। এদিন সকাল থেকেই বিভিন্ন কারখানায় কাজে যোগ দেন হাজার হাজার পোশাক শ্রমিক। তবে শিল্পাঞ্চলের কোথাও শিল্প পুলিশকে দায়িত্ব পালন করতে দেখা যায়নি।

 


গতকাল সরজমিনে গাজীপুরে কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা যায়, জেলা ও মহানগরের বিভিন্ন এলাকার অধিকাংশ পোশাক কারখানা খুলে দেয়া হয়েছে। মাঠে শিল্প পুলিশ না থাকায় প্রত্যেকটি কারখানা নিজস্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে। তবে গাজীপুরের কোথাও এদিন কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।

 

 

পোশাক কারখানাসংশ্লিষ্টরা বলছেন, বায়ারের চাহিদা অনুযায়ী পণ্য সরবরাহ করতে হলে কারখানা বন্ধ রাখার আর কোনো সুযোগ নেই। দেশের অস্থিতিশীল পরিস্থিতির কারণে বেশ কয়েক দিন কারখানা বন্ধ থাকা এবং ইন্টারনেট না থাকার কারণে ব্যবসায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এখন কারখানা বন্ধ রাখলে বায়ার ধরে রাখা বা তাদের অর্ডারকৃত পণ্য সঠিক সময়ে সরবরাহ করা কঠিন হয়ে পড়বে। ফলে বায়াররা মুখ ফিরিয়ে নিতে পারে কিংবা বিকল্প দেশে চলে যেতে পারে। এ কারণে সংশ্লিষ্টরা কারখানা আর বন্ধ রাখার পক্ষে নয়।

 

 

গতকাল সকালে গাজীপুর শহরের বিলাশপুর এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, সেখানে অবস্থিত কয়েকটি কারখানায় শ্রমিকরা কাজে যোগ দিয়েছেন। তাদের আইডি কার্ড পরীক্ষা করে নিরাপত্তাকর্মীরা কারখানায় প্রবেশ করতে দিচ্ছেন। শহরের তিন সড়ক এলাকা, লক্ষ্মীপুরা, ধান গবেষণা এলাকা, চৌরাস্তা, তেলিপাড়া, বোর্ডবাজার, টঙ্গীসহ সব এলাকায় একই চিত্র দেখা গেছে। কারখানা কর্তৃপক্ষ, যে যার মতো নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদার করেছেন। তবে কাজে যোগ দিতে পেরে শ্রমিকরা বেশ খুশি।

 

 

শিল্প পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, গাজীপুরে ছোট বড় মিলিয়ে প্রায় আড়াই হাজারের মতো পোশাক কারখানা রয়েছে। এগুলোর মধ্যে গতকাল বেশির ভাগ কারখানাই খুলেছে। তবে যারা এখনো উৎপাদন শুরু করতে পারেননি, তারাও অফিশিয়াল কাজকর্ম করেছেন। তবে কিছু কারখানায় অভ্যন্তরীণ সমস্যার কারণে শ্রমিকদের মধ্যে অসন্তোষ রয়েছে। জানা গেছে, অনেক কারখানায় শ্রমিকদের বেতন কম। আবার কিছু কারখানায় বেতন-বোনাস বকেয়া রয়েছে। এসব কারণে শ্রমিকদের মধ্যে কিছুটা উত্তেজনা দেখা দিলেও বড় ধরনের বিশৃঙ্খলা হয়নি।

 

 

হা-মীম গ্রুপের কর্মকর্তা মিজানুর রহমান জানান, গাজীপুরে তাদের সব পোশাক কারখানাই খোলা রয়েছে এবং পুরোদমে উৎপাদন চলছে। শিল্প পুলিশ মাঠে না থাকলেও নিজস্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।

 

 

মহানগরের খাইলকুর এলাকায় অবস্থিত নিট স্টুডিও লিমিটেডের জিএম মো. মাসুম বিল্লাহ বলেন, ‘মাঠে শিল্প পুলিশ নেই। আমরা নিজেরা ঝুঁকি নিয়ে কারখানা খুলেছি। কোনো ধরনের সমস্যা হচ্ছে না। প্রায় ৯০ ভাগ শ্রমিক কাজে যোগ দিয়েছেন।’

 

 

তিনি আরো বলেন, ‘বেশ কয়েকদিন কারখানা বন্ধ থাকা এবং ইন্টারনেট না থাকার কারণে অনেক অর্ডার আমরা ঠিকমতো শিপমেন্ট করতে পারিনি। তাই কারখানা আর বন্ধ রাখার সুযোগ নেই। দেশের সার্বিক অবস্থা যদি দ্রুত ঠিক না হয়, তাহলে বায়াররা অর্ডার বাতিল করে অন্যত্র চলে যাবে। আমরা বিশাল ক্ষতির সম্মুখীন হব।’

 

 

এদিকে মাঠে না থাকার কারণ জানতে গাজীপুর শিল্প পুলিশের এসপি সারোয়ার আলমের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি কল ধরেননি। তবে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে এসব বিষয়ে তিনি এখন কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

 

ঝুঁকি নিয়ে খুলেছে গাজীপুরের অধিকাংশ পোশাক কারখানা