ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ - ২:০১:৪২ পিএম

টানা দুই মাস ধরে শূন্যের নিচে শ্রীলঙ্কার মূল্যস্ফীতি

২৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ | ৪:১৭ পিএম

টানা দুই মাস ধরে শূন্যের নিচে শ্রীলঙ্কার মূল্যস্ফীতি

ছবি: সংগ্রহ

দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক সংকট ও ঋণখেলাপি পর্ব পেরিয়ে শ্রীলঙ্কার অর্থনীতিতে ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত দেখা যাচ্ছে। বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দাম কমানো এবং মুদ্রার স্থিতিশীলতার কারণে মূল্যস্ফীতি হ্রাস পেয়েছে। একই সঙ্গে শিল্পায়ন ও অর্থনৈতিক পুনর্গঠনের পদক্ষেপে দেশটির প্রবৃদ্ধি ধীরে ধীরে ইতিবাচক ধারায় ফিরেছে।

 

 

২০২৩ সালের নভেম্বর মাসে শ্রীলঙ্কায় মূল্যস্ফীতির হার ছিল ঋণাত্মক ১ দশমিক ৩ শতাংশ। অক্টোবরে এই হারও ঋণাত্মক ছিল। খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতিও মাইনাস ৩ দশমিক ১ শতাংশে পৌঁছেছে, যা আগের মাসে ছিল মাইনাস ২ দশমিক ৩ শতাংশ।

 

 


বিশ্লেষকেরা বলছেন, ২০২৫ সালের প্রথম দুই মাসেও মূল্যস্ফীতি ঋণাত্মক থাকতে পারে। তবে ফেব্রুয়ারি মাসে গাড়ি আমদানির পুনরায় শুরু হলে বিদেশি মুদ্রার চাহিদা বাড়বে এবং মুদ্রাস্ফীতি শূন্যের ওপরে যাবে।

 

 

২০২২ সালে বিদেশি ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হয়ে দেউলিয়া ঘোষণা করে শ্রীলঙ্কা। তবে ২০২৩ সালের মার্চ মাসে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) থেকে ২৯০ কোটি ডলারের ঋণ পাওয়ার পর অর্থনৈতিক পুনর্গঠনের পথে হাঁটতে শুরু করে দেশটি।

 

 

বিশ্বব্যাংকের মতে, চলতি অর্থবছরে শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৪ দশমিক ৫ থেকে ৫ শতাংশ। ২০২৩ সালের তৃতীয় প্রান্তিকে প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৫ দশমিক ৫ শতাংশ। অর্থনীতিবিদেরা আশা করছেন, ২০২৪ সালের শেষের দিকে দেশটির অর্থনীতিতে আরও উন্নতি দেখা যাবে।

 

 

অনূঢ়া কুমার দিশানায়েকের নেতৃত্বাধীন বামপন্থী সরকার অর্থনীতিকে পুনরুজ্জীবিত করতে শিল্পায়ন এবং কল্যাণ প্রকল্পে জোর দিয়েছে। ছোট ও মাঝারি উদ্যোগকে ঋণের দায়মুক্ত করতে বিশেষ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। খুচরা ব্যবসায়ীদের নতুন উদ্যোগ নিতে সরকার আর্থিক সহযোগিতা বাড়াচ্ছে।

 

 

একই সঙ্গে গাড়ি ও অন্যান্য ভোগ্যপণ্যের আমদানি পুনরায় শুরু করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে, যা ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে কার্যকর হবে। এর ফলে দেশীয় শিল্প চাঙা হবে এবং বিনিয়োগের সম্ভাবনা তৈরি হবে।

 

 

শ্রীলঙ্কার শিল্পায়ননীতির প্রতি ভারতসহ বেশ কয়েকটি দেশ ইতিমধ্যে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। যৌথ বাণিজ্যিক ফোরাম গঠনের মাধ্যমে বৈদেশিক বিনিয়োগ বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। তবে স্বনির্ভরতার উপর ভিত্তি করে এই প্রকল্পগুলো বাস্তবায়িত হওয়ায় বৈদেশিক মুদ্রার ভান্ডারে তেমন চাপ পড়বে না বলে আশা করা হচ্ছে।

 

 

টানা দুই বছর অর্থনৈতিক সংকোচনের পর শ্রীলঙ্কা এখন প্রবৃদ্ধির পথে ফিরতে শুরু করেছে। মুদ্রাস্ফীতির হ্রাস, শিল্পায়নের প্রসার, এবং বিদেশি বিনিয়োগের প্রতি আগ্রহ শ্রীলঙ্কার অর্থনীতির ভবিষ্যৎ নিয়ে আশাবাদী হতে সাহায্য করছে। তবে ২০২৫ সালের পর বৈশ্বিক পরিস্থিতি এবং অর্থনৈতিক নীতির ধারাবাহিকতা দেশটির ভবিষ্যৎ নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

টানা দুই মাস ধরে শূন্যের নিচে শ্রীলঙ্কার মূল্যস্ফীতি