ঢাকা বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ - ১১:৫৭:৫০ এএম

ট্রাম্পের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করল আরব দেশগুলো

২৮ জানুয়ারি, ২০২৫ | ৭:০ পিএম

ট্রাম্পের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করল আরব দেশগুলো

ছবি: সংগ্রহ

ফিলিস্তিনিদের জোরপূর্বক স্থানান্তরে ‘গাজা খালি’ করতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাব সর্বাগ্রে প্রত্যাখ্যাত হয়েছে। আরব লিগের মতো জোটের পাশাপাশি স্ব স্ব রাষ্ট্রও বিবৃতি দিয়ে প্রত্যাখ্যান করেছে ফিলিস্তিনিদের স্থানান্তরের পরিকল্পনা। সোমবার এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে টাইমস অব ইসরাইল। শনিবার এয়ারফোর্স ওয়ান উড়োজাহাজে বসে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, আপনারা সম্ভবত ১৫ লাখ মানুষের কথা বলছেন এবং আমরা পুরো জায়গাটিই খালি করে ফেলব।

 

এরপরই কায়রোর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে ‘ফিলিস্তিনি জনগণের তাদের ভূমিতে বসবাসের প্রতি অবিচল সমর্থন’ পুনর্ব্যক্ত করেছে। ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ ও যুদ্ধবিধ্বস্ত ভূখণ্ড গাজার বাসিন্দাদের মিসর ও জর্ডানের আশ্রয় দেওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছিলেন ট্রাম্প। এ ছাড়া পুরো গাজা উপত্যকাকে খালি করার পরিকল্পনাও করেছেন তিনি। ট্রাম্পের এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে জর্ডানও। এমনকি ফিলিস্তিনের সরকারসহ দেশটির সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসও ট্রাম্পের আহ্বানকে প্রত্যাখ্যান করেছে। খবর রয়টার্স।

 

গাজাকে ‘খালি’ করার বিষয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মন্তব্যের পর রোববার আরব লীগ তীব্র আপত্তি জানিয়েছে। আঞ্চলিক জোটটির জেনারেল সেক্রেটারিয়েট এক বিবৃতিতে বলেছে, জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত করা এবং তাদের (ফিলিস্তিনি) ভূমি থেকে মানুষদের উচ্ছেদকে কেবল জাতিগত নিধন বলা যেতে পারে। বিবৃতিতে বলা হয়, বাস্তুচ্যুতি, সংযুক্তি বা বসতি সম্প্রসারণের মাধ্যমে ফিলিস্তিনি জনগণকে তাদের ভূমি থেকে উচ্ছেদ করার প্রচেষ্টা অতীতেও ব্যর্থ হয়েছে বলে প্রমাণিত হয়েছে।

 

ইতিমধ্যে জর্ডানে লাখো ফিলিস্তিনি আশ্রয় নিয়েছেন। মিসরেও হাজারো ফিলিস্তিনি তাঁবুতে বসবাস করেন। মিসর, জর্ডান ও অন্যান্য আরব দেশ গাজার ফিলিস্তিনিদের তাদের দেশে সরিয়ে নেওয়ার ট্রাম্পের চিন্তাভাবনা খারিজ করে দিয়েছে। গাজা ভূখণ্ডের ফিলিস্তিনিরা ভবিষ্যতের ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের অংশ হিসেবে থাকতে চাইছেন।

 

মাহমুদ আব্বাসের কার্যালয় থেকে ট্রাম্পের পরিকল্পনার বিরুদ্ধে কঠোর নিন্দা জানানো হয়েছে। তারা বলেছেন, ফিলিস্তিনি জনগণ তাদের জমি ও পবিত্র স্থানগুলো ছাড়বে না। হামাসের রাজনৈতিক শাখার সদস্য কাসেম নাইম এএফপিকে বলেছেন, ফিলিস্তিনিরা এ ধরনের প্রকল্পগুলোকে বানচাল করে দেবে।

 

ট্রাম্পের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় কায়রোর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে ‘ফিলিস্তিনি জনগণের তাদের ভূমিতে বসবাসের প্রতি অবিচল সমর্থন’ পুনর্ব্যক্ত করেছে। আরব লীগ কায়রোর বক্তব্য পুনরায় শেয়ার করে বলেছে, ‘ফিলিস্তিনিদের তাদের ভূমি থেকে জোরপূর্বক স্থানান্তর ও উৎখাত শুধু জাতিগত নিধন বলে আখ্যায়িত করা যেতে পারে।’

 

মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি সতর্ক করে বলেছেন, ফিলিস্তিনিদের স্থানান্তরিত করার চেষ্টা ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যকে মুছে ফেলার একটি প্রচেষ্টা হবে। সিসি এটিকে একটি ‘লাল রেখা’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন, যা মিসরের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি হতে পারে।

 

অন্যদিকে জর্ডানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আয়মান সাফাদি বলেন, ফিলিস্তিনিদের বাস্তুচ্যুত করার বিষয়টি আমরা দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করি এবং তা অটল থাকবে। জর্ডান জর্ডানের মানুষদের আর ফিলিস্তিন ফিলিস্তিনি মানুষদের জন্য।

ট্রাম্পের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করল আরব দেশগুলো