ঢাকা শনিবার, ৫ জুলাই, ২০২৫ - ৪:৪৯:৩৯ এএম

ট্রাম্পের হুংকারে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা ভারত ছাড়ছে

২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ | ৫:০ পিএম

ট্রাম্পের হুংকারে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা ভারত ছাড়ছে

ছবি: সংগ্রহ

মো সোহাগ : একটা সময় ছিল যখন ভারতের শেয়ারবাজার ছিল বিদেশে বিনিয়োগকারীদের জন্য স্বপ্নের জায়গা। কিন্তু এখন বর্তমান বৈশ্বিক বাণিজ্য পরিস্থিতিতে ভারত একাধিক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছে। বাণিজ্য যুদ্ধের উত্তেজনা ভোর রাজনৈতিক বিভাজন এবং বৈদেশিক বিনোদকারীদের সর্তকতা সব মিলিয়ে ভারতের অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলছে। শেয়ার বাজার থেকে পুঁজি প্রত্যাহারের ঢেউ বইছে আর এমনি পত্থে রয়েছে একাধিক আন্তর্জাতিক ও অর্থনৈতিক কারণ।

 

সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ থেকে ২২ সরাসরি ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতে দাঁড়িয়েছে ১৪১৮ কোটি ডলারে। যা পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় উল্লেখযোগ্য বেশি। এছাড়া ভোর রাজনৈতিক বিভাজন দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বিনিয়োগ কমিয়ে দিচ্ছে। যা উদীয়মান বাজার ও উন্নয়নশীল অর্থনীতির দেশগুলোর জন্য শুল্কের সৃষ্টি করছে। চলতি বছরের প্রথম দুই মাসেই ভারত থেকে বিদেশে বিনিয়োগকারীরা তুলে নিয়েছেন এক লাখ কোটি রূপিরও বেশি মূলধন। শুধুমাত্র ফেব্রুয়ারি মাসেই ২৩ হাজার ৭১০ কোটি রুপির শেয়ার বিক্রি হয়েছে। কিন্তু কেন?

 

বিশ্লেষকরা বলছেন, বৈশ্বিক বাণিজ্য উত্তেজনার কারণেই বিনোদকারীরা সতর্ক অবস্থান নিয়েছেন। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নতুন করে স্টিল ও অ্যালুমিনিয়ামের উপর শুল্ক আরবের পরিকল্পনা করছেন, যা এক ধরনের বাণিজ্য যুদ্ধের ইঙ্গিত দেয়। এর ফলে বিনোদকারীরা অর্থ সরিয়ে ফেলছেন। এদিকে চীন ধীরে ধীরে নতুন বিনিয়োগের কেন্দ্র হয়ে উঠছে। দেশটির প্রেসিডেন্ট শীর্ষ ব্যবসায়ীদের নিয়ে নতুন অর্থনৈতিক পরিকল্পনা নিয়েছেন চিনের বাজারকে আরো আকর্ষণীয় করে তুলেছে। তুলনামূলক কম দামের শেয়ার কেনার সুযোগ থাকায় বিনিয়োগকারীরা ভারতের শেয়ার বিক্রি করে চীনে বিনিয়োগ বাড়াচ্ছেন।

তবে কি ভারত বিনিয়োগ হারাচ্ছে, বিশেষজ্ঞরা মনে করেন এই ট্রেন্ড দীর্ঘস্থায়ী নাও হতে পারে। ভারতের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কর্পোরেট আয়ের পুনরুজ্জীবন ঘটলে বিদেশে পুঁজি আবার ফিরতে পারে। কিন্তু বর্তমান বাস্তবতায় ভারতীয় রুপির ধারাবাহিক অবমূল্যায়ন এবং কর্পোরেট আয়ের দুর্বলতা বিদেশি বিনিয়োগের আকর্ষণ কমিয়ে দিচ্ছে।

 

২০২৩ সালে ভারতের শেয়ার বাজারে রেকর্ড ১ লাখ ৭১ হাজার কোটি রুপির বিদেশি বিনিয়োগ প্রবেশ করেছিল। কিন্তু ২০২৪ সালের সেই চিত্র পুরোপুরি বদলে গেছে। শুধুমাত্র ৪২৭ কোটি রুপি নিট বিনিয়োগ এসেছে, যা প্রায় কিছুই না। ঋণ বাজার থেকেও বিদেশি বিনিয়োগকারীরা টাকা সরিয়ে নিচ্ছেন। প্রতি মাসেই তারা সাধারণ রিন সীমা থেকে ৭৩৫২ কোটি রুপি এবং স্বেচ্ছামূলক রিন খাত থেকে ৩৮২২ কোটি রুপি প্রত্যাহার করেছেন।

 

সবকিছুর মাঝে বড় প্রশ্ন ভারতের বাজার কি আবার ঘুরে দাঁড়াতে পারবে? বিনিয়োগ বিশেষজ্ঞদের মতে আগামী কয়েক মাস খুবই গুরুত্বপূর্ণ যদি ভারতের কর্পোরেট আই বাড়ে এবং বৈসিক বাজার কিছুটা স্থিতিশীল হয় তাহলে বিদেশে বিনিয়োগ আবার প্রবাহিত হতে পারে। তবে বিশ্ববাজারে অনিশ্চয়তা এখনো বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ট্রাম্পের হুংকারে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা ভারত ছাড়ছে