ঢাকা বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ - ৬:৩০:১৬ পিএম

ডিমের দাম নিয়ন্ত্রণে ৪৩ প্রতিষ্ঠানকে ১৯ কোটি ৩০ লাখ ডিম আমদানির অনুমতি

২১ নভেম্বর, ২০২৪ | ৭:০ পিএম

ডিমের দাম নিয়ন্ত্রণে ৪৩ প্রতিষ্ঠানকে ১৯ কোটি ৩০ লাখ ডিম আমদানির অনুমতি

ছবি: সংগ্রহ

দেশে ডিমের মূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে ৪৩ প্রতিষ্ঠানকে নতুন করে ১৯ কোটি ৩০ লাখ ডিম আমদানির অনুমতি দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। গত সোমবার আমদানি-রপ্তানি প্রধান নিয়ন্ত্রকের দপ্তরকে এই আমদানির ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে চিঠি পাঠানো হয়েছে। তবে, এই অনুমতির ক্ষেত্রে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কোনো ধরনের সুপারিশ নেওয়া হয়নি। এ পর্যন্ত প্রায় ৩৪ কোটি পিস ডিম আমদানির অনুমতি দেওয়া হলেও গত এক বছরে মাত্র ১২ লাখ ২১ হাজার পিস ডিম আমদানি হয়েছে।

 

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, দেশে গড়ে দৈনিক ছয় কোটি পিস থেকে সাড়ে ছয় কোটি পিস ডিমের চাহিদা রয়েছে। তবে, বন্যা এবং ডিম উৎপাদনের উপকরণের মূল্যবৃদ্ধি ও সরবরাহ সংকটের কারণে ডিম উৎপাদনে ভাটা পড়েছে, যা ডিমের দাম বৃদ্ধির কারণ হয়েছে। এর পাশাপাশি ব্যবসায়ীদের কারসাজি বাজারে সরবরাহ কমিয়ে দাম বাড়িয়ে দিয়েছে।

 

তবে আমদানির অনুমতির ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কোনো পরামর্শ হয়নি। পাশাপাশি আমদানির শর্তগুলোও অস্বাভাবিক বলে অভিযোগ উঠেছে। গত বছরের ৫ নভেম্বর থেকে ডিম আমদানি শুরু হয়, প্রথমে ৬২ হাজার পিস ডিম আমদানি করা হয়। চলতি বছরের ৮ সেপ্টেম্বর থেকে আবার আমদানি শুরু হয় এবং ১৯ নভেম্বর পর্যন্ত মোট ১২ লাখ ২১ হাজার পিস ডিম আমদানি করা হয়েছে।

 

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানান, দেশের ডিমের চাহিদা এবং জোগান বিষয়ে সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ ও তদারকি করার দায়িত্ব তাদের, তবে তারা কোনো ধরনের পরামর্শ ছাড়াই আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে, যা ডিম উৎপাদনকারী খামারিদের উদ্বেগ বাড়াচ্ছে।

 

এছাড়া, ডিম আমদানির জন্য যেসব শর্ত দেওয়া হয়েছে, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো—এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জিয়া বা বার্ড ফ্লু মুক্ত দেশ থেকে ডিম আমদানি করা, প্রতিটি চালানের জন্য সংশ্লিষ্ট সঙ্গনিরোধ কর্মকর্তাকে ১৫ দিন আগে জানানো এবং প্রতিবেদন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে দাখিল করার শর্ত। এই অনুমতি আগামী বছরের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত কার্যকর থাকবে।

 

বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএ) সভাপতি মো. সুমন হাওলাদার বলেন, দেশের প্রান্তিক খামারিরা বড় পোলট্রি খাতের ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটে বন্দি। তিনি বলেন, "ভারতে একটি ডিম উৎপাদন খরচ যেখানে পাঁচ টাকা, সেখানে বাংলাদেশে ১১-১২ টাকা।" তিনি ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট ভাঙার ওপর গুরুত্ব দেন।

 

কৃষি অর্থনীতিবিদ ও বিএলআরআইয়ের সাবেক মহাপরিচালক ড. জাহাঙ্গীর আলম খান জানান, বাজারে সবজির দাম কমতে শুরু করেছে, ফলে ডিমের দামও কমবে। তবে, ডিম উৎপাদনের তথ্যের ক্ষেত্রে বড় ধরনের সংস্কার প্রয়োজন বলে তিনি মন্তব্য করেন এবং ডিমের দাম যৌক্তিকভাবে নির্ধারণের ওপর জোর দেন।

ডিমের দাম নিয়ন্ত্রণে ৪৩ প্রতিষ্ঠানকে ১৯ কোটি ৩০ লাখ ডিম আমদানির অনুমতি