ঢাকা মঙ্গলবার, ১ জুলাই, ২০২৫ - ১:৫৭:৩১ পিএম

দুর্নীতির জালে বিএসইসির ৪ বিভাগ

৮ মার্চ, ২০২৫ | ১২:৮ পিএম

দুর্নীতির জালে বিএসইসির ৪ বিভাগ

ছবি: সংগ্রহ

পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চারটি গুরুত্বপূর্ণ বিভাগের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে গুরুতর অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। বিএসইসির গঠিত পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী, এসব বিভাগের অধিকাংশ কর্মকর্তা কোনো না কোনোভাবে দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত।

 

 

গত বছরের ১ সেপ্টেম্বর গঠিত তদন্ত কমিটি ১২টি বিষয়ে বিস্তারিত অনুসন্ধান চালিয়ে তাদের প্রতিবেদন জমা দিয়েছে, যেখানে দুর্নীতির সুস্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া গেছে। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ক্যাপিটাল রেইজিং ইস্যু বিভাগ (আইপিও), মিউচুয়াল ফান্ড বিভাগ, এনফোর্সমেন্ট বিভাগ এবং সুপারভিশন অ্যান্ড রেগুলেশনস অব ইস্যুয়ার কোম্পানিজ (এসআরআইসি) বিভাগের কর্মকর্তারা নানা অনিয়মের সঙ্গে যুক্ত।

 

 

বিশেষ করে আইপিও অনুমোদন প্রক্রিয়ায় স্বল্পমূল্যের কোম্পানিগুলোকে নানা অনিয়মের মাধ্যমে পুঁজিবাজারে প্রবেশের সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে। মিউচুয়াল ফান্ড পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণেও অব্যবস্থাপনার অভিযোগ রয়েছে। এনফোর্সমেন্ট বিভাগের একাধিক কর্মকর্তা পুঁজিবাজারে কারসাজির সঙ্গে যুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে বরং তাঁদের আড়াল করতে কাজ করেছেন বলে প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। এ ছাড়া, এসআরআইসি বিভাগেও নীতিমালা লঙ্ঘন করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের স্বার্থ রক্ষার অভিযোগ রয়েছে।

 

 

 

তদন্ত প্রতিবেদনে নাম আসায় বিএসইসির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে। কমিশন ২০ জনের বেশি কর্মকর্তা-কর্মচারীকে শোকজ করলেও এখনো বড় কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এর ফলে কমিশনের আন্তরিকতা ও স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

 

 

বিএসইসির এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের সঙ্গে কর্মকর্তাদের সম্পর্ক চরম উত্তেজনাপূর্ণ হয়ে উঠেছে, যা ভবিষ্যতে বড় ধরনের আন্দোলনের ইঙ্গিত দিচ্ছে।

 

 

 

এর আগে বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম, সাবেক কমিশনার শেখ সামসুদ্দিন আহমেদসহ বর্তমান ৭ জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তদন্ত শুরু করে এবং তাঁদের পাসপোর্ট বাতিল করা হয়। এ কারণে বিএসইসি বর্তমানে ব্যাপক চাপের মুখে রয়েছে।

 

 

 

বিনিয়োগকারীরা মনে করছেন, অনিয়মকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়া হলে পুঁজিবাজারের প্রতি আস্থা আরও কমবে এবং দীর্ঘমেয়াদে বিনিয়োগকারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা কঠিন হয়ে পড়বে।

 

 

বর্তমানে বিএসইসি এক চরম সংকটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। তদন্ত প্রতিবেদন ও দুর্নীতি দমন নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এখন দেখার বিষয়, কমিশন স্বচ্ছতার প্রমাণ দিতে কী পদক্ষেপ নেয়।

 

দুর্নীতির জালে বিএসইসির ৪ বিভাগ