ভ্যাট বন্ধু নিউজ প্রতিবেদক
১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ | ১২:৫৮ পিএম
অনলাইন সংস্করণ
দেশকে বিপজ্জনক বর্জ্যের ভাগাড় হতে দেওয়া যাবে না: পরিবেশ উপদেষ্টা
১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ | ১২:৫৮ পিএম

ছবি: সংগ্রহ
বাংলাদেশকে বিপজ্জনক বর্জ্যের গন্তব্য হতে দেওয়া যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তিনি বলেছেন, এ লক্ষ্যে জাহাজ ভাঙা শিল্পে কঠোর পরিবেশ আইন প্রয়োগ ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা অপরিহার্য। জরুরি সংস্কার না হলে বাংলাদেশ বিপজ্জনক বর্জ্যের বিশ্বব্যাপী ভাগাড়ে পরিণত হবে।
ঢাকার হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে অনুষ্ঠিত ‘বাংলাদেশের জাহাজ পুনঃপ্রক্রিয়াকরণ ও বিপজ্জনক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত জাতীয় নিয়ন্ত্রক কাঠামো’ শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
জাহাজ ভাঙা শিল্পের মানবিক ও পরিবেশগত ক্ষতির দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করে রিজওয়ানা হাসান বলেন, “এ শিল্প মানবজীবনের বিনিময়ে চলতে পারে না। এটি আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী পরিচালিত না হলে এর অস্তিত্ব রাখা উচিত নয়।” তিনি আরও বলেন, “উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী জোয়ারভাটা অঞ্চলে জাহাজ ভাঙার কার্যক্রম নিষিদ্ধ করতে হবে এবং এই সিদ্ধান্তকে জাতীয় নীতিতে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।”
এ সময় তিনি বলেন, বাংলাদেশকে বিষাক্ত বর্জ্যের ভাগাড় হওয়া থেকে রক্ষা করতে তিনি শিল্প মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত। একই সঙ্গে শ্রমিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানান। তিনি উল্লেখ করেন, জাহাজ ভাঙা শিল্পে শ্রমিকরা মারাত্মক ঝুঁকির মুখে থাকেন, অথচ তাদের পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নেই।
পোশাক শিল্পের সঙ্গে তুলনা করে তিনি বলেন, “পোশাক শিল্পে বিদেশি ক্রেতারা শ্রমমান বজায় রাখার বিষয়টি নিশ্চিত করেন, কিন্তু জাহাজ ভাঙা শিল্পের মালিকরা তাদের দায়িত্ব এড়িয়ে যান।” পরিবেশ আইন কার্যকর না হলে এই শিল্প ‘সবুজায়নের’ নামে বৈধতা পাবে বলে তিনি সতর্ক করেন।
বিশেষ করে ইউরোপীয় কোম্পানিগুলো কীভাবে জাহাজগুলোকে ছোট দ্বীপ রাষ্ট্রের নামে নিবন্ধন করে বাংলাদেশে পাঠায়, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। “ইউরোপের কোনো দেশে কি সমুদ্রতটে জাহাজ ভাঙার অনুমতি দেওয়া হতো? তাহলে বাংলাদেশে কেন এ বৈষম্য?”—বলেন রিজওয়ানা হাসান।
তিনি আরও বলেন, শিল্প মন্ত্রণালয় কীভাবে পরিবেশগত আইন লঙ্ঘন সত্ত্বেও জাহাজ ভাঙার অনুমতি দিচ্ছে, তা বুঝতে পারছেন না। বর্তমানে কিছু শিপইয়ার্ড বৈধ পরিবেশগত ছাড়পত্র ছাড়াই কাজ করছে, যেখানে সম্প্রতি একজন শ্রমিক গুরুতর আহত হয়েছেন।
অনুষ্ঠানে শিল্প ও গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব জাকিয়া সুলতানা এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত নরওয়ের রাষ্ট্রদূত হকন আরাল্ড গুলব্রান্ডসেন উপস্থিত ছিলেন।
