ভ্যাট বন্ধু নিউজ প্রতিবেদক
১ আগস্ট, ২০২৪ | ৮:৪৭ এএম
অনলাইন সংস্করণ
দেশে তীব্র সংকট তবুও ডলারের দামে পরিশোধ করতে হবে বেসরকারি খাতের বিদ্যুতের মূল্য
১ আগস্ট, ২০২৪ | ৮:৪৭ এএম
![দেশে তীব্র সংকট তবুও ডলারের দামে পরিশোধ করতে হবে বেসরকারি খাতের বিদ্যুতের মূল্য](https://i.vatbondhu.com/images/original-webp/2024/08/01/20240801084642_original_webp.webp)
ছবি: সংগ্রহ
বেসরকারি কেন্দ্রগুলো থেকে যে বিদ্যুৎ কেনা হয় তার দাম নির্ধারণ হয় ডলারের হিসাবে। কিন্তু দুই বছরের বেশি সময় ধরে বৈদেশিক মুদ্রা, বিশেষ করে দেশে ডলার সংকট। ফলে টাকার অবমূল্যায়নের কারণে বিদ্যুৎ বিল বাবদ সরকারকে ব্যয় করতে হয় বাড়তি অর্থ। এ অবস্থায় সংকটকালে বেসরকারি সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর ট্যারিফ ডলারের পরিবর্তে টাকায় নির্ধারণ করা যায় কিনা তা জানতে চেয়েছিল অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিদ্যুৎ বিভাগের পক্ষ থেকে গতকাল জানানো হয়েছে, ডলারেই নির্ধারণ করতে হবে সৌরবিদ্যুতের ট্যারিফ। মন্ত্রিসভা কমিটিও তা গ্রহণ করেছে।
আরও পড়ুন
তথ্যানুসারে, দেশে বেসরকারি পর্যায়ে যেসব সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প স্থাপন করা হচ্ছে সেগুলোর ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে জুলাইয়ের শুরুতে অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে জানতে চাওয়া হয়। এর মধ্যে সৌরবিদ্যুতের স্ক্র্যাপগুলো পরিবেশবান্ধব কিনা, সৌরবিদ্যুতের দাম ডলারের পরিবর্তে টাকায় নির্ধারণ করা যায় কিনা এবং নবায়নযোগ্য এ বিদ্যুৎ নিয়ে নির্ধারিত কোনো লক্ষ্যমাত্রা আছে কিনা—এ বিষয়গুলো যথাযথ পর্যালোচনা করে অবহিত করার জন্য বিদ্যুৎ বিভাগকে বলা হয়েছিল। গতকালের বৈঠকে তা অবহিত করা হয়েছে। অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন।
বৈঠকে বিদ্যুৎ বিভাগের পক্ষ থেকে উপস্থাপিত প্রতিবেদনে বলা হয়, সৌরবিদ্যুৎ প্যানেলের ৯০ শতাংশই আমদানি করতে হয়। এক্ষেত্রে ডলারে আমদানি ব্যয় পরিশোধ করতে হয়। এসব প্রকল্পে যেসব বিদেশী প্রতিষ্ঠান বিনিয়োগ করে তারাও ডলারেই বিনিয়োগ করে। তাছাড়া ভারত, ফিলিপাইনসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সৌরবিদ্যুতের দাম ডলারের হিসাবেই নির্ধারিত হয়। ফলে সৌরবিদ্যুতের দাম টাকায় পরিশোধের সুযোগ নেই বলে মন্ত্রিসভা কমিটিকে অবহিত করা হয়।
সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পের পরিবেশগত প্রভাবের বিষয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, সৌরবিদ্যুতের প্যানেলগুলো মাটি থেকে কিছুটা উঁচুতে স্থাপন করা হয়। ফলে এক্ষেত্রে মাটির কোনো ক্ষতি হয় না এবং প্যানেলের নিচে মাটিতে চাষও করা যায়। আর এসব প্যানেল অ্যালুমিনিয়াম, গ্লাস ও প্লাস্টিকের মতো উপাদানে তৈরি। ফলে এখানে তেমন কোনো স্ক্র্যাপ হওয়ার সুযোগ নেই।
মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে এ-সংক্রান্ত প্রতিবেদনটি অনুমোদন করা হয়েছে বলে জানা গেছে। এছাড়া মন্ত্রিসভা কমিটি খানপুর ইনল্যান্ড কনটেইনার টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্পটি পিপিপি তালিকা থেকে প্রত্যাহার এবং জিটুজি চুক্তির আওতায় সংযুক্ত আরব আমিরাতের ফার্টিগ্লোব ডিস্ট্রিবিউশন লিমিটেডের কাছ থেকে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ইউরিয়া সার আমদানির চুক্তি স্বাক্ষরের বিষয়টিও অনুমোদন করেছে।
বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, দেশে এ পর্যন্ত সৌরসহ নবায়নযোগ্য বিদ্যুতের যতগুলো প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়েছে তার ১১টির মধ্যে নয়টিই বিদেশী বিনিয়োগে। বর্তমানে যেসব দেশ বাংলাদেশে সৌরসহ অন্যান্য নবায়নযোগ্য খাতে বিনিয়োগ করছে তারা সবাই ডলারে বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি রেখেই স্বাক্ষর করছে।
ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষক ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শাহরিয়ার আহমেদ চৌধুরী বণিক বার্তাকে বলেন, ‘বাংলাদেশের নবায়নযোগ্য খাতে বেশির ভাগ বিনিয়োগ বিদেশী। এ খাতের যন্ত্রাংশগুলোর সিংহভাগই আমদানিনির্ভর। ফলে বিনিয়োগকারীরা তাদের বিনিয়োগ ঝুঁকিমুক্ত রাখার ক্ষেত্রে ডলারে বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তিকেই নিরাপদ মনে করেন।’
![দেশে তীব্র সংকট তবুও ডলারের দামে পরিশোধ করতে হবে বেসরকারি খাতের বিদ্যুতের মূল্য](https://i.vatbondhu.com/images/original/2024/04/22/20240422145104_original.png)