উন্নত বিশ্বের জলবায়ু দূষণের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম বলে জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা অ্যাকশনএইড ইন্টারন্যাশনাল। সংস্থার সম্প্রতি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ জলবায়ু ক্ষতিপূরণের হিসেবে প্রায় ৫ দশমিক ৮ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার (৫ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা) পাওনা রয়েছে।

আরও পড়ুন

বাংলাদেশকে বিশ্বের কাছে তুলে ধরতে বেপজাকে প্রধান উপদেষ্টার আহ্বান

প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৪ সালে বিশ্বের ৫৪টি নিম্ন আয়ের দেশ বিদেশি ঋণের ফাঁদে পড়েছে, যার ফলে তারা ধনী দেশগুলোর কাছে ১৩৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ পরিশোধ করেছে। বাংলাদেশসহ নিম্ন ও মধ্য আয়ের দেশগুলোর ন্যায্য পাওনা মোট ১০৭ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার হলেও, তাদের উপর বৈদেশিক ঋণের বোঝা মাত্র ১ দশমিক ৪৫ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা ধনী দেশগুলোর দেনার তুলনায় ৭০ গুণ কম।

২০২৩ সালে বাংলাদেশ একাই বিদেশি ঋণ পরিশোধ করেছে ৪৭৭ কোটি মার্কিন ডলার। তবে, এ পরিমাণ ঋণ পরিশোধে দেশের জাতীয় রাজস্বের ১৬ দশমিক ৯ শতাংশ ব্যয় হয়েছে, যেখানে স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ ছিল মাত্র ৩ দশমিক ০৮ শতাংশ এবং শিক্ষা খাতে ১১ দশমিক ৭৩ শতাংশ।

অ্যাকশনএইডের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ধনী দেশগুলোর জলবায়ু ক্ষতিপূরণ পরিশোধে ব্যর্থতার কারণে বাংলাদেশ স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং জলবায়ু কর্মসূচিতে প্রয়োজনীয় বিনিয়োগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

অ্যাকশনএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবির বলেন, “নিম্ন ও নিম্ন-মধ্যম আয়ের দেশগুলোর ঋণের ফাঁদের ভয়াবহতা এই প্রতিবেদনে ফুটে উঠেছে। ঔপনিবেশিক ঋণ কাঠামো থেকে মুক্তির জন্য আমাদের জোরালো দাবি তুলতে হবে।”

প্রতিবেদনে বিশ্ব নেতাদের কাছে কয়েকটি সুপারিশ করা হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে ঋণ পরিশোধের নতুন জাতিসংঘ ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন প্রণয়ন, জলবায়ু ক্ষতিপূরণের অর্থ পরিশোধে জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণ এবং বৈদেশিক ঋণ মওকুফের জন্য বৈশ্বিক সংহতি গড়ে তোলা।

এছাড়া, প্রতিবেদনটি আফ্রিকান ইউনিয়নের সম্মেলনের প্রেক্ষাপটে ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহে ইথিওপিয়ার আদ্দিস আবাবায় প্রকাশ করা হয়।

ধনী দেশগুলোর প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী, বাংলাদেশ এই অর্থ পরিশোধের ক্ষেত্রে দীর্ঘ সময় ধরে অপেক্ষা করছে, যার ফলে দেশের সার্বিক উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।