ঢাকা বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ - ৩:৪৭:৫৬ পিএম

নানা কারণে ব্যবসা-উদ্যোগে মন্দা, খেলাপি না হতে ছয় মাস সময় চান ব্যবসায়ীরা

১৬ জানুয়ারি, ২০২৫ | ২:২৩ পিএম

নানা কারণে ব্যবসা-উদ্যোগে মন্দা, খেলাপি না হতে ছয় মাস সময় চান ব্যবসায়ীরা

ছবি: সংগ্রহ

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) শর্ত মানার ফলে বাংলাদেশে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দ্রুত বেড়ে চলছে। ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করছেন যে, আইএমএফের চাপের ফলে ঋণ পরিশোধের জন্য তিন মাসের সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে, যা পূর্বের ছয় মাসের চেয়ে অনেক কম। ফলে তারা আরও দ্রুত খেলাপি হয়ে পড়ছেন, যা ব্যবসায়ীদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে।

 

 

বর্তমানে বাংলাদেশে মোট ১৬ লাখ ৮২ হাজার ৮২১ কোটি টাকার ঋণের মধ্যে দুই লাখ ৮৫ হাজার কোটি টাকা খেলাপি হয়ে গেছে, যা মোট ঋণের ১৭ শতাংশ। ব্যবসায়ীরা বলছেন, তারা আইএমএফের শর্ত মানতে বাধ্য হলেও, তিন মাসে ঋণ পরিশোধের শর্তে তাদের ব্যবসার জন্য টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়েছে।

 

 

বিশ্বব্যাংক ও বাংলাদেশ ব্যাংকের শর্ত অনুযায়ী, আগামী এপ্রিল থেকে খেলাপি ঋণের নতুন নিয়ম চালু হবে, যা অনুযায়ী তিন মাস পর থেকেই ঋণ খেলাপি হিসেবে বিবেচিত হবে। পূর্বে, ঋণ খেলাপি হিসেব করা হত ছয় মাস পর। ব্যবসায়ীরা দাবি করেছেন, তাদেরকে অন্তত ছয় মাস সময় দেওয়া উচিত, যাতে তারা আর্থিক সমস্যার মধ্যেও ব্যবসা চালিয়ে যেতে পারেন।

 

 

এদিকে, বর্তমানে দেশে উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি, ঋণের উচ্চ সুদহার এবং আইএমএফের শর্তের কারণে ব্যবসায়ীরা নতুন বিনিয়োগে আগ্রহ হারাচ্ছেন। অনেক ব্যবসায়ী বর্তমানে টিকে থাকার সংগ্রামে লিপ্ত এবং উৎপাদন প্রায় ৩০-৪০ শতাংশ কমে গেছে বলে জানানো হয়েছে।

 

 

বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজ (বিসিআই) এবং অন্যান্য ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতারা, সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সঙ্গে বৈঠক করে, ঋণ খেলাপি হওয়ার সময়সীমা ছয় মাস করার দাবি জানিয়ে বলেছেন যে, বর্তমান পরিস্থিতি ব্যবসা পরিচালনা কঠিন করে তুলেছে। তারা আগামীতে নতুন বিনিয়োগের জন্য একটি সহায়ক পরিবেশের দাবি জানিয়েছেন।

 

 

ব্যবসায়ীদের মতে, আইএমএফের চাপের কারণে এখন দেশের শিল্প খাত, বিশেষত সিএমএসই খাত সবচেয়ে বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। তারা বিশেষ তহবিল এবং কম সুদহারের ব্যবস্থা করার পরামর্শ দিয়েছেন, যাতে এই খাত টিকে থাকতে পারে।

 

 

এছাড়া, গত বৃহস্পতিবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ৬৭টি পণ্যের ওপর ভ্যাট-সম্পূরক শুল্ক বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে, যা ব্যবসায়ী সমাজের জন্য আরও একটি চাপ সৃষ্টি করতে পারে। এর মধ্যে রয়েছে সিগারেট, ওষুধ, মোবাইল সেবা, ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ পণ্য। ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, এই সব বিধিনিষেধের ফলে তাদের কার্যক্রম আরও ব্যাহত হবে এবং তাদের খরচ বাড়বে।

 

 

এভাবে, দেশের ব্যবসায়ীরা বর্তমানে একটি কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে, যেখানে আইএমএফের শর্ত, ঋণের শর্ত ও নতুন ভ্যাট আইন তাদের জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে।

নানা কারণে ব্যবসা-উদ্যোগে মন্দা, খেলাপি না হতে ছয় মাস সময় চান ব্যবসায়ীরা