ঢাকা বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ - ১০:৫১:৫৮ এএম

পুঁজিবাজারে ৫ মাসে জরিমানা ৭২২ কোটি, আদায় হয়নি এক টাকাও

৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ | ২:৩৭ পিএম

পুঁজিবাজারে ৫ মাসে জরিমানা ৭২২ কোটি, আদায় হয়নি এক টাকাও

ছবি: সংগ্রহ

বিগত সরকারের পতনের পর দেশের আর্থিক খাতে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন এসেছে, যার মধ্যে পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) একটি উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন। নতুন কমিশন এসে পুঁজিবাজারে যেসব অপরাধ সংঘটিত হয়েছে তা চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনার উদ্যোগ নিয়েছে। এ লক্ষ্যে বিগত পাঁচ মাসে প্রায় ৭২২ কোটি টাকা জরিমানা করা হলেও, এখনো এর এক টাকাও আদায় করা সম্ভব হয়নি।

 

 

বাজার সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, আইনের জটিলতা এবং দীর্ঘসূত্রিতার কারণে এসব জরিমানা আদায় সম্ভব নয়। তারা দ্রুত বিচারের আওতায় আসার জন্য আইনের পরিবর্তন দাবি করছেন।

 

 

বিএসইসি-এর বর্তমান চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ গত পাঁচ মাসে বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ার কারসাজি চিহ্নিত করেছেন। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় জরিমানা করা হয়েছে বেক্সিমকো কোম্পানির শেয়ার কারসাজির ঘটনায়, যেখানে প্রায় ৪২৮ কোটি টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এছাড়া অন্যান্য কোম্পানির শেয়ার কারসাজির অভিযোগে জরিমানা করা হয়েছে কোটি কোটি টাকা।

 

 

অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের পর বিএসইসি-তে অর্থনীতিবিদ মাসরুর রিয়াজের নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল, তবে দুর্নীতিবাজ কিছু কর্মকর্তার প্রতিবন্ধকতার কারণে তিনি যোগদান করতে পারেননি। পরে, খন্দকার রাশেদ মাকসুদকে বিএসইসি চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। তিনি পুঁজিবাজারের শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার জন্য একাধিক উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন, তবে আইনি জটিলতার কারণে কাঙ্ক্ষিত ফল পাওয়া যাচ্ছে না।

 

 

পুঁজিবাজারে স্বচ্ছতা ও আস্থার অভাবের কারণে বিনিয়োগকারীরা আরও শঙ্কিত হচ্ছেন। গত পাঁচ মাসে জরিমানা করা হলেও, আদায় না হওয়া টাকার পরিমাণ প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে উঠেছে। বিএসইসি জানিয়েছে, অভিযুক্ত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান আপিল বা রিভিউ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নিজেদের অবস্থান জানাতে পারে, তবে এই প্রক্রিয়া শেষ হতে ছয় মাস সময় লাগতে পারে। এছাড়া হাইকোর্টেও রিট দায়ের করা হতে পারে, যা আরও সময় সাপেক্ষ।

 

 

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, যদি দ্রুত সময়ের মধ্যে আইন সংশোধন করা না হয় এবং অপরাধীদের শাস্তির ব্যবস্থা নিশ্চিত করা না হয়, তাহলে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের আস্থা পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হবে না। এই পরিস্থিতি বাজারের স্থিতিশীলতার জন্য বিপজ্জনক হয়ে দাঁড়াতে পারে।

পুঁজিবাজারে ৫ মাসে জরিমানা ৭২২ কোটি, আদায় হয়নি এক টাকাও