ঢাকা বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ - ১০:৩৯:৫৬ এএম

ভ্যাট বন্ধু নিউজ প্রতিবেদক

২৮ জানুয়ারি, ২০২৫ | ১০:৪৩ এএম

অনলাইন সংস্করণ

পোশাক ও টেক্সটাইল খাতে অতিরিক্ত খরচ বাড়বে ১৮ হাজার কোটি টাকা

২৮ জানুয়ারি, ২০২৫ | ১০:৪৩ এএম

পোশাক ও টেক্সটাইল খাতে অতিরিক্ত খরচ বাড়বে ১৮ হাজার কোটি টাকা

ছবি: সংগ্রহ

বাংলাদেশের পোশাক ও টেক্সটাইল শিল্প খাতের ব্যবসায়ীরা গ্যাসের দাম প্রায় ১৫০ শতাংশ বৃদ্ধির প্রস্তাবের বিরুদ্ধে চরম উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তাদের দাবি, গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি কার্যকর হলে, শিল্প খাতের ক্যাপটিভ পাওয়ার প্ল্যান্টগুলোতে বছরে অতিরিক্ত প্রায় ১৮ হাজার কোটি টাকা খরচ বৃদ্ধি পাবে, যা শিল্পায়ন এবং অর্থনীতিতে দীর্ঘমেয়াদি নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

 

 

২০২৩ সালের জানুয়ারিতে যখন শিল্প খাতে গ্যাসের দাম ১৫০ শতাংশ বৃদ্ধি করা হয়েছিল, তখন শিল্প খাতের জন্য নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। তবে বাস্তবে এর সুফল শিল্প খাতে পাওয়া যায়নি, বলে অভিযোগ করেছে ব্যবসায়ীরা। সম্প্রতি বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বরাবর পাঠানো এক চিঠিতে তারা এসব উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

 

 

চিঠিতে বলা হয়েছে, গ্যাসের মূল্য ৭৫ টাকা প্রতি ঘনমিটারে বৃদ্ধির পরিকল্পনা করা হলে, পোশাক শিল্পে বার্ষিক অতিরিক্ত প্রায় ৬ হাজার ৩০০ কোটি টাকা খরচ বৃদ্ধি পাবে, যা রপ্তানি আয়ের প্রায় ১ দশমিক ৫ শতাংশ। একইভাবে, টেক্সটাইল শিল্পের ক্যাপটিভ পাওয়ার প্ল্যান্টগুলোর জন্য খরচ বেড়ে প্রায় ১১ হাজার ৬৭৫ কোটি টাকা হতে পারে, যা পোশাক রপ্তানি আয়ের প্রায় ২ দশমিক ৭ শতাংশ। এই বিশাল পরিমাণ খরচ বৃদ্ধির কারণে শিল্পের সক্ষমতা ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশের প্রতিযোগিতামূলক সক্ষমতা হারানোর আশঙ্কা রয়েছে।

 

 

বিশ্বব্যাপী পোশাকের আমদানি-রপ্তানিতে ধীরগতি পরিলক্ষিত হচ্ছে। আংকটাড প্রকাশিত গ্লোবাল ট্রেড আপডেট প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৪ সালে বিশ্বে পোশাক আমদানি ৫ শতাংশ হ্রাস পেতে পারে। এর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশের পোশাক শিল্পে, বিশেষ করে রপ্তানি মূল্যের ওপর। ২০২৪ সালের প্রথম ১১ মাসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাজারে বাংলাদেশ থেকে আমদানি করা পোশাকের মূল্য যথাক্রমে ৪ দশমিক ২৪ শতাংশ এবং ৪ দশমিক ৮৩ শতাংশ কমেছে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায়।

 

 

ব্যবসায়ীরা চিঠিতে উল্লেখ করেছেন, গত পাঁচ বছরে গ্যাস, বিদ্যুৎ, ডিজেল এবং ব্যাংক সুদের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় তাদের কারখানার উৎপাদন খরচ প্রায় ৫০ শতাংশ বেড়েছে। এই পরিস্থিতিতে গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি হলে, শিল্প খাতে আরও বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হবে। তারা দাবি করেছেন, গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির পরিকল্পনা স্থগিত করা হোক, বিশেষ করে গাজীপুর, ময়মনসিংহ, নারায়ণগঞ্জ ও সাভারের মতো শিল্পঘন এলাকাগুলোর জন্য, যেখানে গ্যাস সংকটের কারণে উৎপাদন কমে গেছে।

 

 

অর্থনীতির এই প্রতিকূল পরিস্থিতিতে, ব্যবসায়ীরা সরকারকে গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির পরিকল্পনা পুনর্বিবেচনা করার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন, যাতে শিল্প খাতের ক্ষতি এড়ানো যায় এবং রপ্তানির ধারাবাহিক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করা সম্ভব হয়।

 

পোশাক ও টেক্সটাইল খাতে অতিরিক্ত খরচ বাড়বে ১৮ হাজার কোটি টাকা