ভ্যাট বন্ধু নিউজ প্রতিবেদক
২৪ ডিসেম্বর, ২০২৪ | ১১:২৪ এএম
অনলাইন সংস্করণ
প্রকল্প ব্যয় বৃদ্ধি চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল প্রকল্প পরিচালকের
২৪ ডিসেম্বর, ২০২৪ | ১১:২৪ এএম
![প্রকল্প ব্যয় বৃদ্ধি চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল প্রকল্প পরিচালকের](https://i.vatbondhu.com/images/original-webp/2024/12/24/20241224110114_original_webp.webp)
ছবি: সংগ্রহ
ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্পে বিপুল অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী এ কে এম মাকসুদুল ইসলামের বিরুদ্ধে একাধিক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত হতে থাকায় তার চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের মেয়াদ থাকা সত্ত্বেও তা বাতিল করা হয়েছে।
গতকাল রোববার বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মোহাম্মদ মঞ্জুর কবীর ভূঁইয়া স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে প্রকল্প পরিচালকের নিয়োগ বাতিলের সিদ্ধান্ত জানানো হয়। এর আগে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে তার নিয়োগ চুক্তি এক বছর বাড়ানো হয়েছিল।
সরকারি নির্দেশনায় গঠিত তদন্ত কমিটি ইতোমধ্যে প্রকল্পে একাধিক অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রমাণ পেয়েছে। কমিটি বিষয়গুলো যাচাই-বাছাই করছে এবং প্রমাণ পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রথমে থার্ড টার্মিনালের প্রকল্প ব্যয় ধরা হয়েছিল ৭ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু তা বেড়ে দাঁড়ায় প্রায় ২১ হাজার ৩৯৮ কোটি টাকায়। একই সময়ে ভারতের বেঙ্গালুরুর ক্যাম্পাগাউড়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর প্রায় ৭ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়, যা আয়তনে ঢাকার থার্ড টার্মিনালের চেয়ে ২৩ শতাংশ বড়।
অভিযোগ রয়েছে, প্রকল্প পরিচালক এবং সংশ্লিষ্ট রাঘব বোয়ালদের কারণে কেনাকাটা ও নির্মাণ ব্যয়ে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে। নিম্নমানের অচেনা ব্র্যান্ডের যন্ত্রপাতি ব্যবহার এবং মানহীন সামগ্রী বিদেশ থেকে আমদানি দেখিয়ে অর্থ আত্মসাৎ করা হয়েছে।
প্রকল্পের জন্য সিলেট থেকে পাথর সংগ্রহ করা হলেও তা ইতালি থেকে আমদানি দেখিয়ে প্রকল্পের কর্মকর্তারা বিদেশ ভ্রমণ করেন। একইভাবে টাইলস ও বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম কেনার নামে বিদেশ সফর হয়। নিম্নমানের সামগ্রী শনাক্ত করে সেগুলো ফেরত পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে এতে প্রকল্প ব্যয়ের বিশাল অংশ অপচয় হয়।
একটি সাধারণ ব্রিজ নির্মাণে ৫৪ লাখ টাকা ব্যয় ধরা হলেও শেষ পর্যন্ত খরচ হয় ১২ কোটির বেশি। প্রকল্পের নকশা পরিবর্তনের মাধ্যমে প্রায় ৯০০ কোটি টাকা লোপাটের অভিযোগ রয়েছে। ভিভিআইপি টার্মিনাল নির্মাণের জন্য অতিরিক্ত ৩ হাজার কোটি টাকা প্রয়োজনের অজুহাত তুলে নতুন তহবিলের দাবি করা হচ্ছে।
প্রকল্পের কাজ শেষ না করেই গত সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দিয়ে তড়িঘড়ি করে সফট উদ্বোধন করানো হয়। এতে অর্ধশত কোটি টাকার অযৌক্তিক ব্যয়ের অভিযোগ ওঠে।
প্রকল্প পরিচালকের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের বিষয়ে তিনি দাবি করেন, নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করেছেন এবং কোনো ব্যক্তিগত সুবিধা নেননি। তবে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, তৎকালীন মন্ত্রী ও সংসদীয় কমিটির সদস্যদের সঙ্গে সখ্যের কারণে তিনি বারবার নিয়োগ পেয়েছেন।
বেবিচক চেয়ারম্যান জানিয়েছেন, অনিয়ম-দুর্নীতি খতিয়ে দেখতে গঠিত কমিটি কাজ করছে। প্রমাণ পাওয়া গেলে প্রচলিত আইন অনুযায়ী দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
থার্ড টার্মিনাল প্রকল্পের অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্টদের জবাবদিহিতার আওতায় আনার পাশাপাশি প্রকল্পে স্বচ্ছতা ও দক্ষতা নিশ্চিত করতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি।
![প্রকল্প ব্যয় বৃদ্ধি চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল প্রকল্প পরিচালকের](https://i.vatbondhu.com/images/original/2024/04/22/20240422145104_original.png)