ভ্যাট বন্ধু নিউজ প্রতিবেদক
৬ নভেম্বর, ২০২৪ | ১১:৪৮ এএম
অনলাইন সংস্করণ
বাংলাদেশের পোশাক রফতানিতে মালদ্বীপের বিমানবন্দর ব্যবহারে খরচ সাশ্রয়
৬ নভেম্বর, ২০২৪ | ১১:৪৮ এএম
![বাংলাদেশের পোশাক রফতানিতে মালদ্বীপের বিমানবন্দর ব্যবহারে খরচ সাশ্রয়](https://i.vatbondhu.com/images/original-webp/2024/11/06/20241106114822_original_webp.webp)
ছবি: সংগ্রহ
বাংলাদেশের পোশাক রফতানিকারকরা ভারতের কলকাতা বিমানবন্দরের পরিবর্তে মালদ্বীপের বিমানবন্দর ব্যবহার করে প্রতি কেজি পণ্য রফতানিতে এক ডলার সাশ্রয় করতে সক্ষম হচ্ছেন। ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, মালদ্বীপের বিমানবন্দর ব্যবহার করার ফলে পোশাক রফতানির খরচ এবং সময়ের উপর ইতিবাচক প্রভাব পড়ছে।
মালদ্বীপ রুটের সুবিধা
বাংলাদেশ থেকে ভারতের কলকাতা বিমানবন্দর অনেকটা কাছে হলেও, সেখানে পরিবহন খরচ বেশি। অন্যদিকে, মালদ্বীপের বিমানবন্দর ব্যবহার করে আকাশপথে পণ্য পরিবহন করলে ইউরোপের দেশগুলোতে প্রতি কেজি পণ্য পাঠাতে খরচ কমে প্রায় এক ডলার।
মালদ্বীপের রুট ব্যবহার করে বর্তমানে ইউরোপে পণ্য পাঠানোর খরচ হচ্ছে ৩.৮০ ডলার থেকে ৪.১০ ডলার প্রতি কেজি, যা আগে ছিল ৬.৩০ ডলার থেকে ৬.৫০ ডলার। এই খরচের পার্থক্য রফতানিকারকদের জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষত যখন তারা নিজেদের পণ্যের খরচ কমানোর চেষ্টা করছেন।
সংকট এবং বিকল্প রুটের ব্যবহার
২০২৩ সালের জুলাই-আগস্টের গণ-আন্দোলন এবং তৈরি পোশাক শিল্পে সঙ্কট সৃষ্টি হওয়ার পর, বাংলাদেশের রফতানি শিল্পে ব্যাপক প্রভাব পড়ে। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর, রফতানির চাহিদা পুনরায় বেড়ে যায়। পূর্বে যেসব রুট, যেমন কলকাতা, কলম্বো বা সিঙ্গাপুর, পণ্য পরিবহণে ব্যবহৃত হত, সেগুলোর খরচ এবং সময় বেশি হওয়ার কারণে ব্যবসায়ীরা মালদ্বীপকে বিকল্প হিসেবে ব্যবহার শুরু করেন।
ভারতীয় বন্দরগুলোর উপর প্রভাব
বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছেন, ভারতের বিমানবন্দর এবং নৌবন্দর দিয়ে বাংলাদেশের পোশাক রফতানি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ভারতের রাজস্ব কমতে পারে। পূর্বে, বাংলাদেশের পণ্য ভারতীয় বিমানবন্দর দিয়ে পরিবহন হতো, যা ভারত সরকারকে ট্রানজিট ফি এবং বন্দর শুল্ক বাবদ বিপুল আয় এনে দিত। বর্তমানে এই আয় ভারত হারাবে, কারণ বাংলাদেশের রফতানিকারকরা এখন মালদ্বীপের রুট ব্যবহার করছেন।
বাফা এবং বিমানবন্দরের পরিপ্রেক্ষিতে মতামত
বাংলাদেশ ফ্রেইট ফরওয়ার্ডার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাফা) কর্মকর্তারা জানান, ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং অন্যান্য বিমানবন্দরে বিমানপথে রফতানি করতে প্রচুর খরচ হয়, যেমন স্ক্যানিং মেশিন এবং বিস্ফোরক শনাক্তকরণ ব্যবস্থা (ইডিএস) এর অভাব। এ ছাড়া, ঢাকা বিমানবন্দরের সাথে সংযুক্ত পর্যাপ্ত এয়ারলাইন্স না থাকায়, মালদ্বীপের বিমানবন্দর ব্যবহারের মাধ্যমে এই সমস্যাগুলো এড়ানো যাচ্ছে।
পণ্য পরিবহন খরচ বৃদ্ধি
তবে, ঢাকার বিমানবন্দরে কাস্টমস শুল্ক এবং ঝুঁকি সঙ্কুল পরিবহনের কারণে পণ্য পরিবহণ ব্যয়বহুল হয়ে উঠছে। ঢাকার বিমানবন্দর ব্যবহারের কারণে রফতানিকারকদের জন্য ড্রাই কার্গো শিপমেন্ট দ্বিগুণ বেড়ে ৮০০-৯০০ টনে পৌঁছেছে, যা আগে ছিল ৪০০-৪৫০ টন।
ভবিষ্যত পরিকল্পনা
বর্তমানে মালদ্বীপ রুট ব্যবহারের কারণে খরচ এবং সময় বাঁচানোর ফলে বাংলাদেশের পোশাক রফতানি সহজ এবং লাভজনক হয়ে উঠেছে। তবে, ভারতের বন্দরগুলো হারানো রাজস্ব এবং রফতানি খাতের উপর এর প্রভাব আগামীতে আরও স্পষ্ট হতে পারে।
![বাংলাদেশের পোশাক রফতানিতে মালদ্বীপের বিমানবন্দর ব্যবহারে খরচ সাশ্রয়](https://i.vatbondhu.com/images/original/2024/04/22/20240422145104_original.png)