ঢাকা বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ - ১০:০০:৪৫ পিএম

বাংলাদেশে তেল রিফাইনারি কারখানা করতে চায় সৌদি

৬ জানুয়ারি, ২০২৫ | ৯:৫১ এএম

বাংলাদেশে তেল রিফাইনারি কারখানা করতে চায় সৌদি

ছবি: সংগ্রহ

ঢাকায় নিযুক্ত সৌদি রাষ্ট্রদূত ঈসা বিন ইউসুফ আল দুহাইলান জানিয়েছেন, সৌদি আরব বাংলাদেশে একটি তেল রিফাইনারি কারখানা প্রতিষ্ঠা করতে চায়। এর মাধ্যমে, সৌদি আরব পূর্ব-দক্ষিণ এশিয়ার বাজারে তেল রপ্তানির জন্য একটি শক্তিশালী হাব গড়তে পারবে। তিনি এ কথা আজ (৫ জানুয়ারি) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত একটি সেমিনারে বলেন।

 

 

রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, বাংলাদেশের সাথে সৌদি আরবের সম্পর্ক শুধু জনশক্তি রপ্তানি সীমাবদ্ধ রাখতে চায় না। বরং, দুই দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও দৃঢ় এবং বহুমুখী করতে সৌদি আরব বিভিন্ন শিল্প খাতে বিনিয়োগের দিকে মনোযোগ দিতে চায়।

 

 

ঈসা বিন ইউসুফ আল দুহাইলান বলেন, “বাংলাদেশে তেল রিফাইনারি স্থাপন করে সৌদি আরব পূর্ব-দক্ষিণ এশিয়ার বাজারে তেল রপ্তানির জন্য একটি শক্তিশালী হাব গড়তে চায়। এতে দুই দেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও গভীর হবে এবং নতুন বাণিজ্যিক সুযোগ তৈরি হবে।”

 

 

তিনি জানান, সৌদি আরবের অর্থনৈতিক কৌশল শুধু জনশক্তি রপ্তানি নয়, বরং বাংলাদেশে দীর্ঘমেয়াদী শিল্প বিনিয়োগ এবং বাণিজ্যিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি বৃহত্তর পরিকল্পনা রয়েছে। সৌদি আরবের মতে, দুই দেশ একত্রে অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং প্রবৃদ্ধির পথে আরও এগিয়ে যেতে পারে।

 


রাষ্ট্রদূত ঈসা আল দুহাইলান অতীতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী অফিসের পক্ষ থেকে বড় প্রকল্প আটকে যাওয়ার বিষয়ে অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, “অনেক বড় প্রকল্প সাবেক প্রধানমন্ত্রীর অফিস থেকে সুনির্দিষ্ট মন্ত্রণালয়ে যাওয়ার পর আটকে পড়ত। আমার ধারণা, এসব প্রকল্প ব্যক্তিস্বার্থের কারণে আটকে দেওয়া হতো।”

 

 

তিনি একে উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করেন যে, “যখন একুয়াপাওয়ার বাংলাদেশে ৩.৫ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করতে চেয়েছিল, তখন তাদেরকে সুযোগ দেওয়া হয়নি।”

 


এ সময়, বাংলাদেশ সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, “সৌদি আরবের আরামকো এবং দক্ষিণ কোরিয়ার স্যামসাংয়ের মতো বৃহৎ প্রতিষ্ঠানগুলোকে বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে দেওয়ার ক্ষেত্রে ভুল নীতি গ্রহণ করা হয়েছিল, যার ফলে দেশের অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।” তিনি বলেন, “শেখ হাসিনা সরকারের ভুল নীতির কারণে সৌদি আরব এবং অন্যান্য বড় বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের সুযোগ হয়নি।”

 

 

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন সেমিনারে বলেন, “এতদিন বাংলাদেশে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশের কথা বলা হয়েছিল, কিন্তু বাস্তবে তেমন পরিবেশ ছিল না। তবে বর্তমানে অন্তর্বর্তী সরকার বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি সুষ্ঠু এবং উপযোগী পরিবেশ তৈরিতে বদ্ধপরিকর।”

 


বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সৌদি আরবের তেল রিফাইনারি প্রকল্প বাংলাদেশে বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং দুই দেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। সৌদি আরবের বিনিয়োগের আগ্রহ স্পষ্ট হওয়ায়, এই প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের শিল্প খাতে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হতে পারে।

 

 

তেল রিফাইনারি কারখানার সম্ভাব্য স্থাপন এবং সৌদি আরবের বৃহৎ বিনিয়োগ বাংলাদেশে অর্থনৈতিক পরিবেশে ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে বলে বিশেষজ্ঞদের আশা।

বাংলাদেশে তেল রিফাইনারি কারখানা করতে চায় সৌদি