ভ্যাট বন্ধু নিউজ প্রতিবেদক
১৭ নভেম্বর, ২০২৪ | ১১:৫৫ এএম
অনলাইন সংস্করণ
বাংলাদেশ কার্বন বানিজ্য থেকে বছরে ১ বিলিয়ন ডলার আয় করতে পারে
১৭ নভেম্বর, ২০২৪ | ১১:৫৫ এএম

ছবি: সংগ্রহ
বাংলাদেশ প্রতিবছর বৈশ্বিক কার্বন বাজার থেকে প্রায় ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করার সম্ভাবনা রাখে, বলে জানিয়েছেন বিশ্ব ব্যাংকের কার্বন বাজার ও অর্থায়নের গ্লোবাল লিড চন্দ্র শেখর সিনহা। গতকাল শনিবার আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে অনুষ্ঠিত কপ-২৯ সম্মেলনের সাইডলাইনে একটি আলোচনা অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
তনি বলেন, 'বাংলাদেশ জার্নি ইন আর্টিকেল ৬: পাইওনিয়ারিং কার্বন মার্কেট অপর্চুনিটিস' শীর্ষক এই আলোচনা অনুষ্ঠানটি আয়োজন করে ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি লিমিটেড (আইডিসিওএল)। এটি বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নে অনুষ্ঠিত হয়।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন। আইডিসিওএল-এর নির্বাহী পরিচালক এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আলমগীর মোর্শেদ অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করে।
তিনি বলেন, "সঠিক জ্ঞান ও কার্বন বাজার সম্পর্কে তথ্য থাকলে প্রতিটি ব্যক্তি কার্বন বাণিজ্যের সুযোগ গ্রহণ করতে পারবে।" দেশের সব নাগরিক ও বেসরকারি খাতকে কার্বন বাজার সম্পর্কে সচেতন এবং জ্ঞানসম্পন্ন হতে হবে। বাংলাদেশ দক্ষতা ও জ্ঞানের মাধ্যমে বৈশ্বিক কার্বন বাজারের সুযোগ গ্রহণ করতে সক্ষম হবে। মন্ত্রণালয় বেসরকারি খাতকে কার্বন বাণিজ্যে সফলতা অর্জনে সর্বাত্মক সহায়তা প্রদান করবে বলে তিনি আশ্বস্ত করেন।
আইডিসিওএল-এর নির্বাহী পরিচালক আলমগীর মোর্শেদ বলেন, প্রতিষ্ঠানটি এ পর্যন্ত ১ দশমিক ৬০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে।
তিনি বলেন, "আমরা ২ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলারের প্রকল্প বাস্তবায়নের অনুমোদন পেয়েছি, তবে ক্লিন ডেভেলপমেন্ট মেকানিজম (সিডিএম) থেকে আর্টিকেল ৬-এ নীতিমালা পরিবর্তনের কারণে ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের প্রকল্প এখনো বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি।"
কার্বন বাণিজ্য বিশেষজ্ঞ শ্যামল বর্মণ বলেন, বাজারে প্রতি টন কার্বনের মূল্য ৫০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ২০ ডলার থেকে ৩০ ডলারে পৌঁছাতে পারে। বর্তমানে বাংলাদেশ ৪০ মিলিয়ন টন কার্বন বাণিজ্যের সম্ভাবনা রাখে।
পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. হারুন-অর-রশিদ মূল বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশ আর্টিকেল-৬ বাস্তবায়নের মাধ্যমে দক্ষতার সঙ্গে সম্ভাব্য কার্বন বাজারে প্রবেশের জন্য একটি কর্মপরিকল্পনা তৈরি করেছে। জাতীয়ভাবে নির্ধারিত অবদানের (এনডিসি) শর্তসাপেক্ষ প্রতিশ্রুতির প্রায় ৭০ শতাংশকে আর্টিকেল-৬ কার্বন মার্কেট মেকানিজমের আওতায় আনা যেতে পারে বলে জানান তিনি।
বাংলাদেশ ইতোমধ্যে আর্টিকেল-৬ এর জন্য নির্ধারিত জাতীয় কর্তৃপক্ষের আইনি কাঠামো তৈরি করেছে। ২০২৩ সালে বৈশ্বিক কার্বন বাজারের মূল্য রেকর্ড ৯৪৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে। কার্বন বাণিজ্য বলতে কার্বন ডাই-অক্সাইড বা অন্যান্য গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনের জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ অনুমতি কেনা-বেচার প্রক্রিয়াকে বুঝানো হয়। কার্বন ক্রেডিট এবং কার্বন বাণিজ্য সরকার অনুমোদিত। এর লক্ষ্য হলো ধীরে ধীরে মোট কার্বন নির্গমন হ্রাস করা এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব প্রশমিত করা।
অনেক আলোচনার পর ২০২১ সালের নভেম্বর মাসে গ্লাসগো কপ-২৬ জলবায়ু পরিবর্তন সম্মেলনে বৈশ্বিক কার্বন বাজারের নিয়মাবলী প্রতিষ্ঠিত হয়। এটি ২০১৫ সালের প্যারিস চুক্তির আওতায় প্রথম প্রস্তাবিত একটি একীভূত বৈশ্বিক পদ্ধতির রূপরেখা।
