ভ্যাট বন্ধু নিউজ প্রতিবেদক
১৪ জানুয়ারি, ২০২৫ | ৩:২৫ পিএম
অনলাইন সংস্করণ
বাংলাদেশ ব্যাংকের তদারকির অভাবেও খেলাপি ঋণ বাড়ছে
১৪ জানুয়ারি, ২০২৫ | ৩:২৫ পিএম
![বাংলাদেশ ব্যাংকের তদারকির অভাবেও খেলাপি ঋণ বাড়ছে](https://i.vatbondhu.com/images/original-webp/2025/01/14/20250114152314_original_webp.webp)
ছবি: সংগ্রহ
বাংলাদেশের ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো দীর্ঘদিন ধরে আস্থাহীনতার মধ্যে রয়েছে, এবং অধিকাংশ প্রতিষ্ঠান বর্তমানে আর্থিক সংকটের সম্মুখীন। বিভিন্ন কারণে, বিশেষ করে নামে-বেনামে ঋণ প্রদানের ফলে, প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের ঋণ আদায় করতে ব্যর্থ হয়েছে। এর ফলে, বহু প্রতিষ্ঠান এখন টাকা ফেরত দিতে অক্ষম হয়ে পড়েছে এবং বলা চলে, কিছু প্রতিষ্ঠান এখন মৃতপ্রায়।
আরও পড়ুন
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশের ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৩৬ শতাংশ ছাড়িয়েছে। ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর শেষে, এ খাতের মোট ঋণের পরিমাণ ছিল ৭৩ হাজার ৬৬৩ কোটি টাকা, যার মধ্যে ২৬ হাজার ১৬৩ কোটি টাকা বা ৩৫.৫২ শতাংশ ঋণ খেলাপি হয়ে পড়েছে। গত তিন মাসে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ২১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। শুধু তাই নয়, আদায় অযোগ্য ঋণের পরিমাণও বেড়ে ২২ হাজার ৪০২ কোটি টাকা পৌঁছেছে, যা মোট খেলাপি ঋণের ৮৫.৬৩ শতাংশ।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই খাতে সংকট আরও তীব্র হয়েছে পি কে হালদারের মতো বিতর্কিত ব্যক্তিদের প্রভাবের কারণে। পি কে হালদারের মালিকানাধীন বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে ঋণের খেলাপি হার সবচেয়ে বেশি। এ ছাড়াও, সরকারের তদারকির অভাব এবং ঋণগ্রহীতাদের ব্যবসার ক্ষতির কারণে পরিস্থিতি আরও অবনতি হয়েছে।
বর্তমানে বাংলাদেশে ৩৫টি ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান চালু রয়েছে, যার মধ্যে ৩টি সরকারি, ১২টি দেশি-বিদেশি যৌথ মালিকানায় এবং বাকিগুলো দেশীয় ব্যক্তিমালিকানায় পরিচালিত। তবে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানই তারল্য সংকটে ভুগছে এবং সেগুলোর খ্যাতি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
আরও উল্লেখযোগ্য হলো, খেলাপি ঋণের মধ্যে ফার্স্ট ফাইন্যান্স, ফারইস্ট ফাইন্যান্স, পিপলস লিজিং, বিআইএফসি এবং ইন্টারন্যাশনাল লিজিংসহ বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানে ঋণের বিশাল অংশ খেলাপি হয়ে গেছে। ফার্স্ট ফাইন্যান্সের ঋণের ৯৯.৯২ শতাংশ এবং ফারইস্ট ফাইন্যান্সের ৯৮.০৬ শতাংশ খেলাপি হয়ে পড়েছে।
এ পরিস্থিতিতে, অনেক অর্থনৈতিক বিশ্লেষক মনে করছেন যে, এই খাতটির ভবিষ্যৎ অন্ধকার এবং ব্যাংকবহির্ভূত প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যক্রমের প্রয়োজনীয়তা পর্যালোচনার সময় এসেছে। গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের পুনর্গঠিত পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ নূরুল আমিন বলেন, ‘‘এই আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যাংকের মতো একই গ্রাহকের পেছনে ছুটেছে, তবে ব্যাংকগুলোর সক্ষমতা ও দক্ষতা এসব প্রতিষ্ঠানের নেই।’’
এমন পরিস্থিতিতে, দেশের আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর খ্যাতি পুনরুদ্ধারের জন্য দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি উঠছে।
![বাংলাদেশ ব্যাংকের তদারকির অভাবেও খেলাপি ঋণ বাড়ছে](https://i.vatbondhu.com/images/original/2024/04/22/20240422145104_original.png)