ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ - ১২:০২:৩৬ পিএম

বাংলাদেশ সীমান্ত ‍দিয়ে যাচ্ছে ইলিশ, আসছে চিনি

২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ | ৪:২৯ পিএম

বাংলাদেশ সীমান্ত ‍দিয়ে যাচ্ছে ইলিশ, আসছে চিনি

ছবি: সংগ্রহ

সিলেটের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে চিনি চোরাচালান থামছেই না। ক্ষমতার পালাবদল ঘটলেও ভারত থেকে অবৈধভাবে চিনি চোরাচালান বন্ধ হয়নি। আগে চোরাচালানের সঙ্গে ছাত্রলীগ বা যুবলীগ জড়িত থাকলেও, এখন ছাত্রদল ও যুবদল নেতাদের প্রশ্রয়ে চোরাই পথে চিনি আনা হচ্ছে বলে জানা গেছে।

 
এদিকে, সাম্প্রতিক সময়ে সিলেটের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে বেড়েছে ইলিশ পাচার। বিশেষত, সুনামগঞ্জের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে অবৈধ পথে ইলিশ যাচ্ছে ভারতে। সম্প্রতি ভারতে পাচারকালে ইলিশের কয়েকটি চালান ধরা পড়লেও, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই নিরাপদেই পাচার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

 

এ ব্যাপারে বিজিবির ৪৮ (সিলেট) ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. হাফিজুর রহমান বলেন, "চিনি ও ইলিশ চোরাচালানের কিছু ঘটনা ঘটছে। তবে আগের থেকে তা অনেক কমেছে।"

 

 
তিনি বলেন, "সীমান্তে নিরাপত্তা রক্ষা ও চোরাচালান রোধে বিজিবি সব সময় সতর্ক রয়েছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আমাদের অভিযানিক কার্যক্রম ও গোয়েন্দা তৎপরতার কারণে চোরাই পণ্য ধরা পড়ছে।"

 

ড ইউনূসের নেতৃত্বাধিন নতুন সরকার ক্ষমতায় আসার পর ভারতে ইলিশ রপ্তানি বন্ধ রাখার কথা জানানো হয়। এদিকে, আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষ্যে ভারতে ইলিশের চাহিদা ব্যাপক হারে বেড়েছে।

 

সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার সীমান্ত এলাকা দিয়ে ভারতে পাচারের সময় গত শনিবার ৮৮৫ কেজি ইলিশ জব্দ করে বিজিবি। উপজেলার মৌলারপাড় নামক স্থান থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় এসব মাছ জব্দ করা হয়।বিজিবি জানায়, এসব মাছের আনুমানিক বাজারমূল্য ২২ লাখ ১২ হাজার ৫০০ টাকা। বিজিবির উপস্থিতি টের পেয়ে মাছ ফেলেই পাচারকারীরা পালিয়ে যাওয়ায় তাদের গ্রেপ্তার করা যায়নি।

 

এর আগে, ১১ সেপ্টেম্বর একই এলাকা থেকে পাচারের সময় ২৭৫ কেজি এবং গত ৩১ আগস্ট তাহিরপুর উপজেলা সীমান্ত থেকে ৪৬ কেজি ইলিশ জব্দ করা হয়। এছাড়া, গত ২৫ আগস্ট জেলার মাটিরাবন সীমান্ত ফাঁড়ির বিজিবি জওয়ানরা আরেকটি ইলিশের চালান জব্দ করেন। 

 

সীমান্তের বাসিন্দারা বলছেন, দেড় মাস ধরে প্রতিদিনই মণের পর মণ ইলিশ ভারতে যাচ্ছে, মাঝেমধ্যেই ধরা পড়ছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই পাচার হয়ে যাচ্ছে।

 

দোয়ারাবাজার সীমান্ত এলাকার এক বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, প্রতিদিন গড়ে ৫০ থেকে ৬০ কার্টন ইলিশ মাছ এই উপজেলার বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে পাচার হচ্ছে। 

 

স্থানীয় এক মাছ ব্যবসায়ী বলেন, বাংলাদেশের চেয়ে ভারতে ইলিশ এখন দ্বিগুণ দামে বিক্রি হয়। তাই চোরাচালান বেড়েছে।

 

সুনামগঞ্জ-২৮ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল একেএম জাকারিয়া কাদির বলেন, "সুনামগঞ্জের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে ইলিশ পাচারের চেষ্টা করা হচ্ছে। সীমান্তে কড়া নজরদারি রাখা হচ্ছে। ১৯টি ফাঁড়িকেই সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।"

 

সোমবার সিলেট থেকে অর্ধকোটি টাকা মূল্যের ভারতীয় চিনির চালান আটক করেছ বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। বালু ভর্তি একটি ট্রাকে করে এই চিনিগুলো সিলেট শহরে আসছিলো।বিজিবি জানায়, সিলেট-তামাবিল মহাসড়কের সুরমা বাইপাস এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ট্রাকটিকে আটক করা হয়। পরে ট্রাকে তল্লাশি চালিয়ে প্রায় অর্ধকোটি টাকা মূল্যের ভারতীয় চিনি উদ্ধার করা হয়। 

 

এর আগে, ১৮ সেপ্টেম্বর সিলেট-তামাবিল সড়ক দিয়ে চোরাচালানের মাধ্যমে আসা বালুবাহী ট্রাক থেকে প্রায় অর্ধকোটি টাকার ভারতীয় চিনির চালান আটক করেছিলো বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বিজিবি।

 

এভাবে প্রায় প্রতিদিনই সিলেটের বিভিন্ন এলাকা থেকে ভারত থেকে চোরাই পথে আসা চিনি আটক করছে বিভিন্ন বাহিনী। ভারত থেকে বাংলাদেশে চিনির দাম বেশি হওয়ায়, দীর্ঘদিন ধরেই চলছে এ চোরাচালান। আগে ক্ষমতাসীন দলের নেতারা চোরাচালানের সাথে জড়িত থাকলেও, সরকার পতনের পরও চোরাচালান বন্ধ হয়নি।

 

চোরাকারবারিদের দেওয়া তথ্যমতে, ক্ষমতার পালাবদলের পর ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতা-কর্মীরা আত্মগোপনে চলে যান। এ সুযোগে সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রণ নেন যুবদল-ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা। তাদের নেতৃত্বেই এখন সীমান্ত এলাকা থেকে চোরাই চিনি ট্রাকে করে এনে নিরাপদে সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় পাঠানো হচ্ছে। 

 

জৈন্তাপুর উপজেলার হরিপুর, সিলেট নগরের শাহপরান ও আম্বরখানা এবং দক্ষিণ সুরমা উপজেলার বাইপাস এলাকায় ট্রাক আটকে যুবদল ও ছাত্রদলের নেতা-কর্মী হিসেবে পরিচয় দিয়ে অনেকে চাঁদা আদায় করছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।

 

অভিযোগের বিষয়ে সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবদুল এমরান আহমদ চৌধুরী বলেন, "এ ব্যাপারে কিছু অভিযোগ আমাদের কানেও এসেছে। আমরা খোঁজ খবর নিচ্ছি। বিএনপি কিংবা অঙ্গ সংগঠনের নাম ভাঙিয়ে যে বা যারা অপকর্ম অথবা অপরাধ করবে, তাদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"

 

সিলেটের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে চিনি চোরাচালান থামছেই না। ক্ষমতার পালাবদল ঘটলেও ভারত থেকে অবৈধভাবে চিনি চোরাচালান বন্ধ হয়নি। আগে চোরাচালানের সঙ্গে ছাত্রলীগ বা যুবলীগ জড়িত থাকলেও, এখন ছাত্রদল ও যুবদল নেতাদের প্রশ্রয়ে চোরাই পথে চিনি আনা হচ্ছে বলে জানা গেছে।

 
এদিকে, সাম্প্রতিক সময়ে সিলেটের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে বেড়েছে ইলিশ পাচার। বিশেষত, সুনামগঞ্জের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে অবৈধ পথে ইলিশ যাচ্ছে ভারতে। সম্প্রতি ভারতে পাচারকালে ইলিশের কয়েকটি চালান ধরা পড়লেও, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই নিরাপদেই পাচার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।


তিনি বলেন, "সীমান্তে নিরাপত্তা রক্ষা ও চোরাচালান রোধে বিজিবি সব সময় সতর্ক রয়েছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আমাদের অভিযানিক কার্যক্রম ও গোয়েন্দা তৎপরতার কারণে চোরাই পণ্য ধরা পড়ছে।"

 

ড ইউনূসের নেতৃত্বাধিন নতুন সরকার ক্ষমতায় আসার পর ভারতে ইলিশ রপ্তানি বন্ধ রাখার কথা জানানো হয়। এদিকে, আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষ্যে ভারতে ইলিশের চাহিদা ব্যাপক হারে বেড়েছে। এই সুযোগে সক্রিয় হয়ে উঠেছে একটি চোরাকারবারি চক্র। সিলেট ও সুনামগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে চোরাই পথে ভারতে ইলিশ পাচার করছে চক্রটি। সম্প্রতি সরকার ভারতে ইলিশ রপ্তানির সিদ্ধান্ত নিলেও, বন্ধ হয়নি চোরাচালান।

বাংলাদেশ সীমান্ত ‍দিয়ে যাচ্ছে ইলিশ, আসছে চিনি