ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ - ৭:৫১:২৩ এএম

বাজেটের আকার বাড়লেও সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবায় বরাদ্দ কম

৮ জুন, ২০২৪ | ৯:৪৫ এএম

বাজেটের আকার বাড়লেও সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবায় বরাদ্দ কম

২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে এবার স্বাস্থ্যে বরাদ্দ কিছুটা বেড়েছে। তবে সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবার লক্ষ্য অর্জনের জন্য এই বরাদ্দ প্রস্তাব পর্যাপ্ত নয়। বরং মূল্যস্ফীতির তুলনায় কমেছে বলে অভিমত জনস্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্য অর্থনৈতিক বিশ্লেষকদের।

 

এবার বাজেটে ৫ দশমিক ২ শতাংশ বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয়েছে। গত অর্থবছর ৫ শতাংশ বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয়েছিল। ২০২২-২৩ অর্থবছরের ৫ দশমিক ৪ শতাংশ প্রস্তাব করা হয়েছিল। বিশ্লেষকদের মতে, বাজেটের আকার বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে স্বাস্থ্যে অর্থের পরিমাণও কিছুটা বাড়ছে। তবে অপর্যাপ্ত বরাদ্দের অর্থ দিয়ে স্বাস্থ্য খাতের পরিবর্তন সম্ভব নয়। প্রস্তাবিত বাজেটে জনস্বাস্থ্য ও সামগ্রিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা উপেক্ষিত রয়েছে।

 

‘স্মার্ট বাংলাদেশ: উন্নয়ন দৃশ্যমান বাড়বে এবার কর্মসংস্থান’ স্লোগান নিয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার বাজেট উপস্থাপন করা হয় জাতীয় সংসদে।

 

এতে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ খাতে ৪১ হাজার ৪০৭ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। গত অর্থবছর এ খাতে বরাদ্দ ছিল ৩৮ হাজার ৫১ কোটি টাকা। এক বছরের ব্যবধানে তা বেড়েছে ৩ হাজার ৩৫৬ কোটি টাকা। প্রস্তাবিত বাজেটে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে পরিচালন খাতে ব্যয় হবে ২১ হাজার ২১৮ কোটি টাকা এবং উন্নয়ন খাতে ব্যয় হবে ২০ হাজার ১৯০ কোটি টাকা।

 

বাজেট প্রতিক্রিয়ায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার সাবেক পরিচালক ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. বে-নজির আহমেদ বলেন, আসন্ন অর্থবছরে স্বাস্থ্য খাতে প্রস্তাবিত বরাদ্দ পর্যাপ্ত নয়। এই বরাদ্দের বড় অংশ কর্মরত জনবলের বেতন-ভাতায় ব্যয় হবে।

 

বাকি অর্থের যথাযথ যেন ব্যবহার হয়। দুটি জিনিস মাথায় রাখতে হবে। যারা সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নিতে আসবে তাদের সব ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা যেন সরকারি হাসপাতালেই করার সুযোগ রাখা হয়। বেসরকারি হাসপাতালে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে যেন যেতে না হয়।

 

একই সঙ্গে তাদের চিকিৎসায় যেসব ওষুধপত্র লেখা হবে সেই ওষুধও যেন সরকারি হাসপাতাল থেকে বিনামূল্যে সরবরাহ করা হয়। এই দুটি বিষয় যদি নিশ্চিত করা যায় তাহলে সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা কিছুটা হলেও এগিয়ে যাবে।

 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. সৈয়দ আব্দুল হামিদ বলেন, গত অর্থবছরের তুলনায় এবার স্বাস্থ্য খাতের বরাদ্দ কিছুটা ভালো। স্বাস্থ্যের প্রবৃদ্ধি বেড়েছে ৮ দশমিক ৮ শতাংশ। স্বাস্থ্য খাতে জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য ২ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। ডায়ালাইসিস কিট আমদানিতে ১০ শতাংশ শুল্ক থেকে ১ শতাংশ করা হয়েছে। ডেঙ্গু শনাক্তকরণ কিট আমদানিতে শুল্ক রেয়াত সুবিধা ফের ফিরিয়ে আনা হয়েছে। তবে বিশেষায়িত বেসরকারি হাসপাতালের যন্ত্রপাতি আমদানিতে শুল্ক ১ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশ বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে। এই শুল্কারোপের কারণে সেবার দাম ধীরে ধীরে বাড়বে। সংখ্যার হিসাবে বরাদ্দ যতটুকু বাড়বে তার বড় অংশ ব্যয় হবে স্বাস্থ্য খাতে কর্মরতদের বেতন-ভাতায়।