ঢাকা বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ - ৫:৫১:২৯ পিএম

বিদ্যুতের চড়া দামের অন্যতম বড় কারণ ক্যাপাসিটি পেমেন্ট

১৪ ডিসেম্বর, ২০২৪ | ১১:১৫ এএম

বিদ্যুতের চড়া দামের অন্যতম বড় কারণ ক্যাপাসিটি পেমেন্ট

ছবি: সংগ্রহ

বিদ্যুৎ খাতে ক্রমবর্ধমান ব্যয়ের অন্যতম কারণ হিসেবে বিশেষজ্ঞরা উল্লেখ করেছেন ক্যাপাসিটি পেমেন্ট। ২০২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশ সরকার ক্যাপাসিটি পেমেন্ট বাবদ ২৬ হাজার কোটি টাকা ব্যয় করেছে। এই ব্যয়ের ফলে বিদ্যুতের দাম বেড়েছে এবং সাধারণ মানুষের উপর আর্থিক চাপ বৃদ্ধি পেয়েছে।

 

শুক্রবার রাজধানীর বিয়াম ফাউন্ডেশনে আয়োজিত তিন দিনব্যাপী ‘বাংলাদেশ জ্বালানি সমৃদ্ধি ২০৫০’ সম্মেলনের সমাপনী দিনে এ বিষয়ে আলোচনা করেন বিশিষ্ট গবেষক ও পরিবেশবিদরা। তারা নবায়নযোগ্য শক্তির ব্যবহার বাড়ানো এবং জীবাশ্ম জ্বালানি নির্ভরতা কমানোর ওপর জোর দেন।


ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান দাবি করেন, “সমন্বিত বিদ্যুৎ-জ্বালানি মহাপরিকল্পনা (আইইপিএমপি) বাতিল করা উচিত। বিদ্যুৎ খাতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে।” তিনি নবায়নযোগ্য শক্তির ব্যবহার বাড়ানোর জন্য একটি নতুন ও কার্যকর মহাপরিকল্পনার প্রস্তাব দেন।


বুয়েটের সাবেক অধ্যাপক ড. ইজাজ হোসেন প্রশ্ন করেন, “বাংলাদেশ এখনও কেন নেট-জিরো লক্ষ্যমাত্রা ঘোষণা করেনি?” তিনি জানান, নবায়নযোগ্য শক্তি ব্যবহারের প্রসার বাধাগ্রস্ত হওয়ার পেছনে পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের উদাসীনতা অন্যতম কারণ।

 

এ প্রসঙ্গে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, “যথাযথ সমন্বয় থাকলে নেট-জিরো লক্ষ্য অর্জন সম্ভব।” তিনি বিগত সরকারের বিদ্যুৎ খাতের ব্যর্থতার উল্লেখ করে বলেন, “আমরা ক্ষতি কমিয়ে আনার পাশাপাশি কাঠামোগত পরিবর্তন আনার চেষ্টা করছি।”


সোলার অ্যান্ড রিনিউয়েবল এনার্জি অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি জাহিদুল আলম বলেন, “নবায়নযোগ্য জ্বালানি সরঞ্জামের আমদানি শুল্ক কমানো না হলে ২০৩০ সালের মধ্যে ৩০ শতাংশ নবায়নযোগ্য বিদ্যুতের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব হবে না।”

 

সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী সংস্থা ও বিশেষজ্ঞরা বিদ্যুৎ খাতের সংস্কারের জন্য কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ । নবায়নযোগ্য শক্তি বাড়ানো: নবায়নযোগ্য শক্তি সংক্রান্ত নীতি ও প্রকল্পে বিনিয়োগ বাড়ানো এবং শুল্ক হ্রাস করা। স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা: বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে স্বচ্ছ ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা। নেট-জিরো লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ: জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য ঘোষণা করা।


এই সম্মেলনের আয়োজন করে বাংলাদেশ ওয়ার্কিং গ্রুপ অন ইকোলজি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (বিডব্লিউজিইডি), টিআইবি, সিপিডি, বেলা, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন (এমজেএফ) এবং অ্যাকশনএইড বাংলাদেশসহ প্রায় দুই ডজন সংগঠন।

 

সম্মেলনে বক্তারা জ্বালানি খাতে দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়ন এবং বিদ্যুৎ খাতে স্বচ্ছতা আনার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের আরও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান।

বিদ্যুতের চড়া দামের অন্যতম বড় কারণ ক্যাপাসিটি পেমেন্ট