ঢাকা বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ - ২:১৪:০৯ পিএম

বিনিয়োগ প্রস্তাবে ধস, ওয়েট অ্যান্ড সি নীতিতে উদ্যোক্তারা

৯ জানুয়ারি, ২০২৫ | ৩:৫৯ পিএম

বিনিয়োগ প্রস্তাবে ধস, ওয়েট অ্যান্ড সি নীতিতে উদ্যোক্তারা

ছবি: সংগ্রহ

চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের (জুলাই-সেপ্টেম্বর) প্রথম প্রান্তিকে বাংলাদেশে বিনিয়োগ প্রস্তাবের পরিমাণে ব্যাপক কমতি দেখা গেছে। এই সময় দেশে-বিদেশি মিলিয়ে মোট ২১ হাজার ৯৮৪ কোটি টাকার বিনিয়োগ প্রস্তাব এসেছে, যা গত অর্থবছরের (২০২৩-২৪) শেষ প্রান্তিকের (এপ্রিল-জুন) ৭৭ হাজার ৩৬৪ কোটি টাকার তুলনায় প্রায় ৫৫ হাজার ৩৮০ কোটি টাকা কম। শতকরা হিসাবে, এই পতনটি প্রায় ৭২ শতাংশ।

 

 

বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) সূত্রে জানা গেছে, বিনিয়োগ প্রস্তাবের এই বিশাল পতনের প্রধান কারণ হিসেবে জুলাই-আগস্ট মাসে বাংলাদেশে ছাত্রদের গণঅভ্যুত্থান এবং তার পরবর্তী রাজনৈতিক অস্থিরতাকে দায়ী করা হচ্ছে। অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং সরকারের নীতির অনিশ্চয়তা উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নিতে বাধাগ্রস্ত করেছে।

 

 

বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেছেন, "উদ্যোক্তারা দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগ করতে চান, তবে বর্তমানে সরকারের নীতির স্থায়িত্ব নিয়ে তাদের মধ্যে সংশয় রয়েছে। এজন্য অনেক উদ্যোক্তা 'ওয়েট অ্যান্ড সি' নীতি অনুসরণ করছেন।" তিনি আরো বলেন, "এ কারণে আগামী দিনে বিনিয়োগ প্রস্তাবের পরিমাণে আরও সংকোচন দেখা দিতে পারে।"

 

 

বিডা সূত্রে আরও জানানো হয়েছে, গত বছরের জুলাই-সেপ্টেম্বরে মোট ১৫৩টি দেশি প্রকল্পের মাধ্যমে প্রায় ১৯ হাজার ৫৫২ কোটি টাকা এবং ৩৩টি বিদেশি প্রকল্পের মাধ্যমে প্রায় ২ হাজার ৪৩৩ কোটি টাকার বিনিয়োগ প্রস্তাব এসেছিল। এর মাধ্যমে মোট ৫২ হাজার ৭০২ জন দেশি এবং ২ হাজার ৬৭৯ জন বিদেশি কর্মসংস্থানের সুযোগ পেতে পারেন।

 

 

তবে চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকের বিনিয়োগ প্রস্তাবের মধ্যে সবচেয়ে বেশি এসেছে সেবা খাতে, তারপর রাসায়নিক শিল্প, খাদ্য এবং এ সংক্রান্ত শিল্প, প্রকৌশল শিল্প এবং বস্ত্র খাতে।

 

 

বিনিয়োগ সংকোচনের পেছনে রয়েছে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা, যেমন: আমলাতান্ত্রিক জটিলতা, জমির অপার্যাপ্ততা, অবকাঠামোগত সমস্যা, গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংকট, সরকারের নীতির ঘন ঘন পরিবর্তন এবং রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা। এসব কারণে বিনিয়োগ পরিবেশে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে, যা দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পথে বড় বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে বলে বিশেষজ্ঞরা মন্তব্য করেছেন।

 

 

এদিকে, গত বছরের এপ্রিল-জুন মাসে ২২০টি দেশি প্রকল্পের মাধ্যমে ৭৪ হাজার ৭১৫ কোটি টাকা এবং বিদেশি ৩৪টি প্রকল্পের মাধ্যমে ২ হাজার ৬৪৮ কোটি টাকা বিনিয়োগ প্রস্তাব এসেছিল। এসব বিনিয়োগ প্রস্তাবের মাধ্যমে ৪৭ হাজার ১০৫ জনের কর্মসংস্থান হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

বিনিয়োগ প্রস্তাবে ধস, ওয়েট অ্যান্ড সি নীতিতে উদ্যোক্তারা