ভ্যাট বন্ধু নিউজ প্রতিবেদক
১৬ জানুয়ারি, ২০২৫ | ১০:৪৬ এএম
অনলাইন সংস্করণ
বিনিয়োগের বড় বাধা ট্যাক্স
১৬ জানুয়ারি, ২০২৫ | ১০:৪৬ এএম
![বিনিয়োগের বড় বাধা ট্যাক্স](https://i.vatbondhu.com/images/original-webp/2025/01/16/20250116104617_original_webp.webp)
ছবি: সংগ্রহ
গত ১৫ বছরে বাংলাদেশে বিনিয়োগের বিশাল সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও কাঙ্ক্ষিত বিনিয়োগ হচ্ছে না। বিনিয়োগকারীরা প্রায়শই বিভ্রান্ত হন দেশের ট্যাক্স ব্যবস্থাপনা নিয়ে। বিভিন্ন পর্যায়ে বিভিন্ন ট্যাক্স রেট প্রয়োগ হওয়ায় একটি স্থির বেঞ্চমার্কের অভাব রয়েছে। এটি বিনিয়োগের অন্যতম প্রধান বাধা।
বুধবার ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) আয়োজিত ‘বিনিয়োগের সম্ভাবনা এবং চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক সেমিনারে এসব বিষয় উঠে আসে। ইআরএফ সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেমের সঞ্চালনায়, অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) এর নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন। অনুষ্ঠানে বিডার ব্যবসায়িক উন্নয়ন প্রধান নাহিয়ান রহমান রোচি মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
ট্যাক্স ও নীতিগত সমস্যার চ্যালেঞ্জ
ঢাকা চেম্বারের সাবেক সভাপতি আবুল কাসেম খান বলেন, এলোমেলো ট্যাক্স ব্যবস্থাপনা এবং সংবিধিবদ্ধ নিয়ন্ত্রক আদেশ (এসআরও) দিয়ে হঠাৎ নীতিগত পরিবর্তন বিনিয়োগকারীদের জন্য অনিশ্চয়তার সৃষ্টি করে। দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য স্থিতিশীল নীতি অপরিহার্য।
তিনি আরও বলেন, স্পেশাল ইকোনমিক জোন (এসইজেড) পরিচালনায় প্রথমে বেসরকারি খাতকে অগ্রাধিকার দেওয়া হলেও পরে সরকারের সম্পৃক্ততা বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রতিযোগিতা বেড়ে যায়। এ ছাড়া প্রজেক্ট বাস্তবায়নে দীর্ঘ সময় লাগার কারণে বিনিয়োগের রিটার্ন পেতে দেরি হচ্ছে।
বিনিয়োগের পরিবেশ উন্নয়নে উদ্যোগ
প্রধান অতিথি চৌধুরী আশিক মাহমুদ বলেন, আগামী ৬ মাস থেকে ১ বছরের মধ্যে সরকারকে বিভিন্ন ব্যবসা থেকে সরিয়ে আনার কাজ শুরু হবে। তিনি বলেন, ব্যবসায়ীরা ব্যবসা করবেন, আর সরকার তাদের জন্য অবকাঠামো ও নীতি সহায়তা নিশ্চিত করবে।
বিডার পরিকল্পনা সম্পর্কে তিনি জানান, সমস্যাগুলো চিহ্নিত করার পর তা নিরসনে ২১টি অগ্রাধিকার বিষয় চূড়ান্ত করা হয়েছে। পাশাপাশি দেশের ইকোনমিক জোনগুলোকে আরও কার্যকর করার জন্য বিকল্প সমাধান হিসেবে নতুন পরিকল্পনা গ্রহণ করা হচ্ছে।
ব্যবসায়ীদের মতামত ও প্রস্তাবনা
হা-মীম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে আজাদ বলেন, তরুণ প্রজন্মের উদ্যোগ এবং নীতিগত পরিবর্তনের মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক চিত্র পরিবর্তন সম্ভব। তবে নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে প্রোডাক্ট কস্ট এনালাইসিস করা জরুরি।
লাফার্জ হোলসিমের সিইও মোহাম্মদ ইকবাল চৌধুরী রোড শো কার্যকারিতা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, বিদেশে রোড শো করে বিনিয়োগ আকর্ষণ সম্ভব নয়, যদি গ্রাহকদের সঠিক সেবা দেওয়া না যায়।
ঢাকা চেম্বারের সাবেক সভাপতি আবুল কাসেম খান বলেন, বাংলাদেশি বিনিয়োগকারীদের বিদেশি বিনিয়োগে বাধা রয়েছে। আমাদের এমন কোনো ব্র্যান্ড নেই যা বিশ্বব্যাপী পরিচিত। পলিসি মেকারদের ফরেন এক্সচেঞ্জ বিষয়ে আরও উদার দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করা উচিত।
ভবিষ্যৎ দৃষ্টিভঙ্গি
বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান জানান, সরকারের অপ্রয়োজনীয় সম্পৃক্ততা কমিয়ে বেসরকারি খাতকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। বিনিয়োগের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণের মাধ্যমে দেশের সম্ভাবনাকে কাজে লাগানো হবে।
বিশ্লেষকদের মতে, দীর্ঘমেয়াদে ট্যাক্স এবং নীতিগত স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার পাশাপাশি লজিস্টিকস উন্নয়ন, সাপ্লাই চেইন ব্যবস্থাপনা, এবং ব্যবসায়িক পরিবেশের উন্নয়নে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হলে বিনিয়োগের পরিবেশ আরও উন্নত হবে।
![বিনিয়োগের বড় বাধা ট্যাক্স](https://i.vatbondhu.com/images/original/2024/04/22/20240422145104_original.png)