ঢাকা বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ - ৮:৫২:১৬ পিএম

বিশ্বব্যাংককে বাজেট সহায়তা বাড়িয়ে ৭৫০ মিলিয়ন ডলার করার অনুরোধ সরকারের

৩০ এপ্রিল, ২০২৪ | ১০:৪২ এএম

বিশ্বব্যাংককে বাজেট সহায়তা বাড়িয়ে ৭৫০ মিলিয়ন ডলার করার অনুরোধ সরকারের

বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ও বিজার্ভ সংকট মোকাবিলায় ৫০০ মিলিয়ন ডলারের পরিবর্তে বাজেট সহায়তার পরিমাণ ৭৫০ মিলিয়ন ডলার করতে বিশ্বব্যাংককে অনুরোধ করেছে সরকার।

 

গত ১৫-২০ এপ্রিল ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিত বিশ্বব্যাংক ও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) বসন্তকালীন সভা চলাকালে দ্বিপাক্ষিক সভায় বাংলাদেশ এ প্রস্তাব দিয়েছে বলে অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।

 

১৭ এপ্রিল ওয়াশিংটনে বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্টিন রেইজার এবং ১৭ ও ১৯ এপ্রিল বাংলাদেশে বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আব্দুলায়ে সেক-এর নেতৃত্বাধীন প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বাংলাদেশের প্রতিনিধিদলের দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হয়।


ওই সব বৈঠকে সেকেন্ড রিকভারি অ্যান্ড রেজিলিয়েন্স ডেভেলপমেন্ট পলিসির আওতায় ৫০০ মিলিয়ন ডলারের সঙ্গে অতিরিক্ত ২৫০ মিলিয়ন ডলার বাজেট সহায়তার অনুরোধ জানানো হয়।

 

অর্থ বিভাগ ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) কর্মকর্তারা জানান, সেকেন্ড রিকভারি অ্যান্ড রেজিলিয়েন্স ডেভেলপমেন্ট পলিসির আওতায় চলতি অর্থবছরে ২৫০ মিলিয়ন ডলার বাজেট সহায়তা দেওয়ার প্রাথমিক সম্মতি জানিয়েছিল বিশ্বব্যাংক। কিন্তু বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ও রিজার্ভ সংকট মোকাবিলায় গত ২৭ নভেম্বর বিশ্বব্যাংকের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে সেকেন্ড রিকভারি অ্যান্ড রেজিলিয়েন্স ডেভেলপমেন্ট পলিসিতে বাজেট সহায়তার পরিমাণ বাড়িয়ে ৫০০ মিলিয়ন ডলারে উন্নীত করার প্রস্তাব দেয় সরকার।

 

এ প্রস্তাবে বিশ্বব্যাংক প্রাথমিক সম্মতি জানানোর পর পলিসি ম্যাট্রিক্স তৈরির কাজেও অগ্রগতি হয়েছে, এবং আগামী জুনের মধ্যে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে এ-সংক্রান্ত ঋণ চুক্তি হওয়ার কথা রয়েছে।

 

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, মধ্যপ্রাচ্যের সাম্প্রতিক সংকটে, জ্বালানি তেলের দামে অস্থিতিশীলতাসহ সার্বিক বৈশ্বিক পরিস্থিতির কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতিও চ্যালেঞ্জিং সময় অতিক্রম করছে। এ পরিস্থিতিতে চলতি অর্থবছরের জন্য বাড়তি ২৫০ মিলিয়ন ডলার বাজেট সহায়তা চাওয়া হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান।

 

এদিকে চলতি অর্থবছরে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) কাছে আরও ৩০০ মিলিয়ন ডলার, এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্টের (এআইআইবি) কাছে ৪০০ মিলিয়ন ডলার এবং ফ্রান্স সরকারের উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা এএফডির কাছে ৩০০ মিলিয়ন ইউরো (৩২৫ মিলিয়ন ডলার) বাজেট সহায়তা ঋণ চেয়েছে সরকার।

 

গত জুলাই থেকে সরকার এডিবি ও দক্ষিণ কোরিয়ার কাছ থেকে ৪৯০ মিলিয়ন ডলারের বাজেট সহায়তার প্রতিশ্রুতি পেয়েছে। এর মধ্যে এডিবির সঙ্গে ৪০০ মিলিয়ন ডলার ও কোরিয়ার সঙ্গে ৯০ মিলিয়ন ডলারের ঋণ চুক্তি সই হয়।

 

এডিবির সঙ্গে 'প্রমোটিং ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্ট ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম (সাবপ্রোগ্রাম ১)' শীর্ষক বাজেট সহায়তার ঋণ চুক্তি সই হয় গত ১১ ডিসেম্বর এবং কোরিয়ার সঙ্গে 'ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্ট ইনক্লুসিভ ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম' শীর্ষক বাজেট সহায়তার ঋণ চুক্তি সই হয় ১১ ডিসেম্বর।

 

সাধারণত বাজেট সহায়তা নেওয়ার জন্য উন্নয়ন সহযোগীরা কিছু শর্ত দেয়। এডিবি ও কোরিয়ার এই বাজেট সহায়তার আওতায় সরকার জলবায়ু-সংক্রান্ত বিভিন্ন সংস্কার কার্যক্রম বাস্তবায়ন করবে।

 

ইআরডির তথ্য অনুযায়ী, সরকার গত অর্থবছর (৩০ জুন ২০২৩) পর্যন্ত মোট ১১.০৯ বিলিয়ন ডলার বাজেট সহায়তা নিয়েছে। মূলত করোনা মহামারি-পরবর্তী সময়ে টিকা কেনা এবং অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে সরকারের বাজেট সহায়তার পরিমাণ বেড়েছে। এছাড়া ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে সরকার বাজেট সহায়তা কার্যক্রম জোরদার করে।

বিশ্বব্যাংককে বাজেট সহায়তা বাড়িয়ে ৭৫০ মিলিয়ন ডলার করার অনুরোধ সরকারের