ঢাকা বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ - ১১:০০:৩৯ এএম

বেক্সিমকোর রপ্তানি আয় ২ বছরে কমে অর্ধেক

২৫ জানুয়ারি, ২০২৫ | ২:৪৬ পিএম

বেক্সিমকোর রপ্তানি আয় ২ বছরে কমে অর্ধেক

ছবি: সংগ্রহ

বেসরকারি খাতের শীর্ষ প্রতিষ্ঠান বেক্সিমকো গ্রুপের রপ্তানি আয় ২০২৩ সালে বড় ধরনের ধসের মুখে পড়ে, এবং ২০২৪ সালে এটি আরও অব্যাহত থাকে। ২০২২ সালে বেক্সিমকো গ্রুপের রপ্তানি আয় ছিল ৬ হাজার ৭১১ কোটি টাকা, যা ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে এসে মাত্র ৩ হাজার ৫২ কোটি টাকায় নেমে আসে, অর্থাৎ গত দুই বছরে তাদের রপ্তানি আয় অর্ধেকেরও বেশি কমে গেছে।

 

 

বেক্সিমকো গ্রুপের রপ্তানি কার্যক্রম প্রায় পুরোপুরি রাষ্ট্রায়ত্ত জনতা ব্যাংকের মাধ্যমে হয়ে থাকে। ২০২২ সালে জনতা ব্যাংকের মাধ্যমে রপ্তানি করা পণ্যের মোট পরিমাণ ছিল ১২ হাজার ৪২৭ কোটি টাকা, যার মধ্যে ৬ হাজার ৭১১ কোটি টাকাই ছিল বেক্সিমকো গ্রুপের। কিন্তু ২০২৩ সালে এই রপ্তানি আয় কমে যায় প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা, এবং ২০২৪ সালে বেক্সিমকোর রপ্তানি আবারও ৩ হাজার ৫২ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে।

 

 

এছাড়া, বেক্সিমকো গ্রুপ বর্তমানে জনতা ব্যাংকের কাছে ৪০০ কোটি টাকার ক্যাশ ক্রেডিট (সিসি) ঋণ সুবিধা চেয়ে আবেদন করেছে। এই ঋণ প্রতিষ্ঠানটির স্বল্পমেয়াদি অর্থায়ন এবং পরিচালন ব্যয় মেটাতে সাহায্য করবে বলে মনে করা হচ্ছে। পাশাপাশি, টেক্সটাইল ও অ্যাপারেল কারখানাগুলো চালু রাখতে বেক্সিমকো ব্যাংক থেকে ব্যাক-টু-ব্যাক এলসি খোলার সুযোগ চেয়েছে। ২০২৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত তাদের দেনা ৫ শতাংশ সুদে এবং ১৫ বছর মেয়াদে পুনঃতপশিল করার আবেদনও করেছে।

 

 

অন্যদিকে, বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের ১৬টি কারখানা ১৮ ডিসেম্বর লে-অফ ঘোষণা করা হয়, যা দেশটির শ্রমিক সমাজের মধ্যে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। বহু শ্রমিক এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছেন, এবং তাদের দাবি, সরকার যেন বেক্সিমকোর কারখানাগুলো পুনরায় চালু করার জন্য হস্তক্ষেপ করে।

 

 

বেক্সিমকো কর্তৃপক্ষ জানায়, ২০২৩ সালের আগস্ট থেকে পরবর্তী মাসগুলোতে ফ্যাক্টরিতে কোনো উৎপাদন ও রপ্তানি না হলেও শ্রমিকদের বেতন বাবদ প্রতি মাসে ৮০ থেকে ১২০ কোটি টাকা পরিশোধ করতে হয়েছে। এর মধ্যে ২৫০ কোটি টাকা জনতা ব্যাংক ও সরকার প্রদান করেছে, এবং বেক্সিমকো নিজস্ব তহবিল থেকেও ৩০০ কোটি টাকা বেতন হিসেবে দিয়েছেন।

 

 

বর্তমানে বেক্সিমকো টেক্সটাইল এবং পিপিই ডিভিশনের অধীনে ১৫টি কোম্পানির মধ্যে মাত্র তিনটি কোম্পানি কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ওসমান কায়সার চৌধুরী আশা করছেন, ২০২৫ ও ২০২৬ সালের মধ্যে খরচ কমিয়ে এবং কঠোর মনিটরিংয়ের মাধ্যমে মুনাফা বাড়ানো সম্ভব হবে। তবে, ২০২৩ ও ২০২৪ সালে তাদের জন্য বেশ চ্যালেঞ্জিং সময় অতিবাহিত হয়েছে, এবং ভবিষ্যতে এই পরিস্থিতি কাটিয়ে ওঠার জন্য প্রতিষ্ঠানটি সরকারের সহায়তা কামনা করছে।

 

 

এছাড়া, বেক্সিমকো কর্তৃপক্ষ আশা প্রকাশ করেছে, আগামী কয়েক বছরে তাদের মুনাফা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ানোর পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে। তবে, তাদের রপ্তানি খাতের এই সংকট দ্রুত সমাধান না হলে প্রতিষ্ঠানটির ভবিষ্যত বেশ অনিশ্চিত হয়ে উঠতে পারে।

বেক্সিমকোর রপ্তানি আয় ২ বছরে কমে অর্ধেক